ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ক্রিকেট

কেন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন জানেন না আজহারউদ্দিন

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২০
কেন নিষিদ্ধ হয়েছিলেন জানেন না আজহারউদ্দিন মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন/ছবি: সংগৃহীত

ম্যাচ পাতানোর অভিযোগে ২০০০ সালে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। এক যুগ আইনি লড়াইয়ের পর সেই অপবাদ থেকে মুক্তিও মিলেছে তার।

কিন্তু কেন তাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল তা নাকি এখনও জানেন না সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক।

২০০০ সালের ডিসেম্বরে আজহারউদ্দিনকে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করে ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বিসিসিআই)। এরপর লম্বা সময় নিজেকে নিরপরাধ প্রমাণ করতে আইনি লড়াইয়ে নামেন তিনি। অবশেষে অন্ধ্র প্রদেশ হাইকোর্ট ২০১২ সালে বিসিসিআই’র নিষেধাজ্ঞাকে ‘বেআইনি’ ঘোষণা করে করেন। বিশাল এক অভিযোগ থেকে মুক্তি পান আজহারউদ্দিন।

‘ক্রিকেটপাকিস্তান’ নামের একটি ওয়েবসাইটকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নিজের ক্রিকেটীয় জীবনের সেই অন্ধকার অধ্যায় নিয়ে মুখ খোলেন আজহারউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘যা ঘটেছে তার জন্য আমি কাউকে দোষী সাব্যস্ত করব না। কিন্তু আমি সত্যিই জানি না কেন নিষিদ্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু আমি এর বিরুদ্ধে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলাম। ’ 

হায়দ্রাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি খুশি কারণ ১২ বছর পরে হলেও আমি অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছি। আমি যখন হায়দ্রাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলাম, খুব খুশি হয়েছি। এরপর বিসিসিআই এজিএম মিটিংয়েও গিয়েছিলাম। ’

ভারতের জার্সিতে ৯৯ টেস্ট খেলে ৪৫ গড়ে ৬ হাজার ১২৫ রান করেছেন আজহারউদ্দিন। এছাড়া ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে ৩৩৪টি ওয়ানডে খেলে তিনি ৩৬.৯২ গড়ে করেছিলেন ৯ হাজার ৩৭৮ রান। তার ঝুলিতে আছে ২২টি টেস্ট ও ৭টি ওয়ানডে সেঞ্চুরি। ওয়ানডেতে তার ফিফটি আছে ৫৮টি।

২০১৯ সালে আজহারইয়দ্দিনের নামে ভারতের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের একটি স্ট্যান্ডের নামকরণ করা হয়। এরপর ইডেন গার্ডেনে ভারতের এক ম্যাচে ঘণ্টা বাজিয়েছেন তিনি। ভারতের প্রথম গোলাপি বলের টেস্ট ম্যাচে সাবেক ক্রিকেটারদের যে গ্রুপটিকে বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয়, তাদের মধ্যে আজহারউদ্দিনও ছিলেন।  

৯৯টি টেস্ট খেলে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল। আজহারউদ্দিন জানতেন না যে টেস্ট ম্যাচের সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১ ম্যাচ দূরে থাকতেই ক্যারিয়ার শেষ হবে তার। কিন্তু এ নিয়ে কোনো আফসোস নেই সাবেক এই অধিনায়কের। বরং ১০ বছর ভারতের অধিনায়কত্ব করতে পেরেই খুশি তিনি, ‘আমি ভাগ্যে বিশ্বাস করি এবং ভাগ্যে যা লেখা থাকবে তাই হবে। আমি বিষয়টা এভাবে দেখি, এখন যেকোনো ভালোমানের খেলোয়াড় ১০০-এর বেশি টেস্ট খেলে। ফলে আমার ৯৯ টেস্ট খেলার রেকর্ড সহজে ভাঙবে বলে মনে হয় না। ’

আজহারউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি প্রায় ১৬-১৭ বছর ক্রিকেট খেলেছি এবং প্রায় ১০ম বছর নেতৃত্ব দিয়েছি। আমি এরচেয়ে বেশি আর কি চাইতে পারি?’

সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে পাকিস্তানের কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান তার ক্যারিয়ার বাঁচাতে কতটা ভূমিকা রেখেছিলেন সে ব্যাপারেও কথা বলেন। সেই সঙ্গে ইংল্যান্ড সফরে সাবেক পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ইউনিস খানের বাজে ফর্ম কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে কীভাবে তার প্রতিদান দিয়েছিলেন সেটাও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘১৯৮৯ সালে আমার পাকিস্তান সফরের দলে থাকা অনিশ্চিত ছিল। কারণ আমার ফর্ম খুব বাজে যাচ্ছিল। আমার মতে আছে, করাচিতে আমাদের অনুশীলন দেখতে মাঠে এসেছিলেন জহির (আব্বাস) ভাই। তিনি জানতে চাইলেন, কেন আমি এত দ্রুত আউট হয়ে যাচ্ছি। আমি তাকে সমস্যার কথা বললাম এবং তিনি আমার ব্যাটের গ্রিপ পাল্টে দিতে বললেন।  

‘আমার হারানোর কিছু ছিল না, ফলে আমি ভাবলাম তিনি যেহেতু নিজে থেকে এসে পরামর্শ দিলেন তাহলে একবার চেষ্টা করতে সমস্যা কোথায়। সেই থেকে গ্রিপ পাল্টে দিলাম। এটা দারুণ কাজে দিল এবং আমার আত্মবিশ্বাস বাড়তে শুরু করল। আমি মুক্তভাবে খেলতে শুরু করলাম। এটার জন্য আমি আরও বেশি আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারতাম। ’

২০১৬ সালে ইউনিস খানকে ইংল্যান্ড সফরে ধুঁকতে দেখে এগিয়ে যান আজহারউদ্দিন। সেই সময়ের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘ব্যাটিংয়ে তার (ইউনিস) কিছু সমস্যা হচ্ছিল এবং আমার খুব খারাপ লাগছিল কারণ ও ভালো খেলোয়াড়। আমি তাকে চিনতাম, তাই ওকে ডেকে নিলাম। তাকে ক্রিজে টিকে থাকতে বললাম এবং ক্রিজের ভেতরে থেকেই শরীরের কাছ থেকে খেলতে বললাম। আমি খুশি কারণ সে আমার পরামর্শ গ্রহণ করেছিল এবং ওভালে শেষ টেস্টে সে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিল। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, জুলাই ২৯, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।