নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েই বিপাকে পড়ে গিয়েছিল পাকিস্তান দল। শুরুতে স্বাগতিক নিউজিল্যান্ডের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে আইসোলেশনে থাকার বাধ্যবাধকতার মুখে পড়তে হয়।
এমনকি সফরকারীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেয় নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড। সবমিলিয়ে সে ভজঘট অবস্থা। এমতাবস্থায় সফর বাতিল করে নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করে দিয়েছিলেন দলের অনেক সদস্য। পরে দলের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের কয়েকজন মিলে সফর শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। এমনটাই জানালেন পাকিস্তান দলের বর্তমান কোচ মিসবাহ-উল-হক।
তিন টি-টোয়েন্টি ও দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে বর্তমানে নিউজিল্যান্ডে অবস্থান করছে পাকিস্তান দল। কিন্তু এই সিরিজের ভাগ্য কিছুদিন আগেই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল যখন সফরকারী দলের ৮ খেলোয়াড় করোনা পজিটিভ হন এবং কয়েকজন খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যবিধি ভাঙার অভিযোগ পাওয়া যায়। তারা করোনা পজিটিভ হয়েও একে অন্যের সঙ্গে আড্ডা দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠে। এসময় এমনকি শারীরিক দূরত্বের নিয়মও মানা হয়নি।
পাকিস্তানি খেলোয়াড়দের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণে রুষ্ট হয়ে তাদের ছোট ছোট গ্রুপে ভাগ হয়ে অনুশীলন করার সুবিধা স্থগিত করে দেয় নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিভাগ। ওই কঠিন সময়ে সফর বাতিল করার কথা ভাবতে শুরু করে পাকিস্তান দল। এ ব্যাপারে মিসবাহ বলেন, 'এই পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিক ছিল না এবং আমরা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে এ ব্যাপারে (সফর বাতিল করা) কথাও বলেছিলাম। কিন্তু পরে শেষ পর্যন্ত আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম যে যেহেতু আমরা অনেকদিন ধরেই নিউজিল্যান্ডে আছি তাই আমাদের অবশ্যই আমাদের সফর শেষ করা উচিত। '
ক্রাইস্টচার্চে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ করে পাকিস্তান দলের খেলোয়াড় ও স্টাফরা এখন কুইন্সটাউনে অবস্থান করছে। এখানেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন বাবর আজমরা। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনের সময়টায় নানান জটিলতা পেরিয়ে পাকিস্তান দল এখন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে বলে জানালেন মিসবাহ।
পাকিস্তানের প্রধান কোচ আরও জানান, ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছানোর পর খেলোয়াড়দের করোনা পজিটিভ হওয়া এবং অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে নিয়ম ভাঙার ব্যাপারগুলো পরিস্থিতি জটিল করে তুলেছিল। তিনি বলেন, 'আমরা কিছুটা দুর্ভাগা কারণ আমরা তিন দিন পর অনুশীলন শুরু করতে পারিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হারানো সময়ের কাজটা দ্রুত শেষ করতে হবে। আমরা এখানে ভালো ক্রিকেট খেলা এবনফ জেতার মিশন নিয়ে এসেছি। '
সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক আরও বলেন, যদি করোনা মহামারির মধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হয় তাহলে খেলোয়াড়দের কিছু ছাড় দিতেই হবে। তিনি বলেন, 'আমরা যদি করোনা মহামারিতে টিকে থাকতে চাই এবং ক্রিকেট খেলাটাও চালিয়ে যেতে চাই তাহলে সব দলকেই ছাড় দিতে হবে, যেমনটা আমরা এখানে করছি। আমরা এখানে কঠিন সময়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে সমর্থন দিতে এসেছি, যাতে ক্রিকেটভক্তরা ক্রিকেট উপভোগ করতে পারে। '
তবে মিসবাহ এটাও মনে করিয়ে দিলেন আরও কয়েক মাস যদি করোনা মহামারি স্থায়ী হয় তাহলে ক্রিকেট বোর্ডগুলোকে খেলোয়াড়দের জীবন আরও সহজ করে তোলার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। তিনি বলেন, 'এই খেলাটির পেছনে যাদের অবদান সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ খেলোয়াড়, তাদের জন্য এই করোনাকালে খেলা চালিয়ে যাওয়া মানসিক চাপের ব্যাপার। আমার জানামতে, ক্রিকেট বোর্ডগুলো আমাদের জীবন সহজ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। '
বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২০
এমএইচএম