সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে ম্যাচটি জিতে অন্তত হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। শুরুটাও ভালোই হয়েছিল।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) বাংলাদেশ সময় ভোর ৪টায় ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে নামে বাংলাদেশ দল।
উইকেটে জাঁকিয়ে বসা হেনরি নিকোলসকে বিদায় করে ৪৪ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন আহমেদ। পরের ওভারেই আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিলকে বিদায় করেন রুবেল হোসেন। নিজের পরের ওভারেই ইনজুরি কাটিয়ে ফেরা রস টেইলরকেও বিদায় করেন রুবেল। ৫৩ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসে নিউজিল্যান্ড।
ডানহাতি পেসার তাসকিনের করা ইনিংসের অষ্টম ওভারের দ্বিতীয় বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন কিউই ওপেনার হেনরি নিকোলস। কিন্তু ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে দুই হাতেই বলের নাগাল পেয়েও ক্যাচ মিস করেন বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। তবে এক বল পরেই ফের ক্যাচ তুলে দেন নিকোলস (১৮)। এবার অবশ্য গালিতে থাকা লিটন দাস অনায়াসেই বল তালুবন্দী করেন।
এক ওভার পরেই আঘাত হানেন রুবেল হোসেন। একাদশে ফেরা এই ডানহাতি পেসারের অফসাইডের বাইরের শর্ট বলে পুল করতে চেয়েছিলেন গাপটিল। কিন্তু বল ব্যাট ছুঁয়ে জমা হয় মিড-অনে থাকা লিটন দাসের তালুতে। নিজের পরের ওভারে ফের আঘাত হানেন রুবেল। ওভারের চতুর্থ বলেই ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন টেইলর। কিন্তু মিড উইকেটে থাকা মোস্তাফিজ হাঁটুর উচ্চতার ক্যাচটি দুই হাত লাগিয়েও ধরতে পারেননি। তবে ওভারের শেষ বলে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে মুশফিকের হাতে ক্যাচ তুলে দেন টেইলর (৭)।
আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান টম ল্যাথামকে এবার আর ইনিংস লম্বা করতে দেননি সৌম্য সরকার। উইকেটে থিতু হয়ে বসা জুটি ভাঙার জন্য পার্ট টাইম স্লো মিডিয়াম পেসারকে আনেন ওয়ানডে দলপতি তামিম। অধিনায়কের আস্থার প্রতিদান দিতে একটুও সময় নিলেন না সৌম্য। নিজের প্রথম বলেই ল্যাথামের (১৮) উইকেট তুলে নিলেন তিনি। সৌম্যর নিরীহদর্শন বলে ড্রাইভ করেছিলেন ল্যাথাম। কিন্তু পয়েন্টে থাকা মিরাজ দুর্দান্ত এক ডাইভ দিয়ে ক্যাচ লুফে নেন।
বাংলাদেশের আনন্দের উপলক্ষ আসলে ল্যাথামের উইকেট নেওয়া পর্যন্তই। ১২৪ রানে ৪ উইকেট ফেলে দেওয়ার পরও কিউইরা রানের পাহাড় গড়ে আসলে বাংকাদেশের ফিল্ডারদের ক্যাচ মিস আর বাজে বোলিংয়ের কারণে। এই সুযোগে কনওয়ে আর মিচেলের জুটিতে চালকের আসনে বসে যায় নিউজিল্যান্ড। দুজনে মিলে ১৫৯ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়েন।
৯৯ বলে কনওয়ে তুলে নেন ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। মোস্তাফিজের বলে বদলি ফিল্ডার আফিফ হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দেওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ১১০ বলে ১৭ চারে সাজানো ১২৬ রানের ঝলমলে এক ইনিংস। তবে ৪৫তম ওভারে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ মিসে জীবন পাওয়া মিচেল শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে রানের ফোয়ারা ছুটিয়ে তুলে নেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি।
রুবেলের করা ইনিংসের ৪৯তম ওভারে আসে ১৬ রান। এরপর মোস্তাফিজের করা ইনিংসের শেষ ওভারে আসে ২১ রান, যার মধ্যে ১৮ রানই মিচেলের। যা আবার তাকে এনে দেয় অভিষেক ওয়ানডে সেঞ্চুরিও। মাত্র ৯২ বলে ৯ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো ইনিংসটি নিউজিল্যান্ডের ইনিংসকে ৩০০ পার করতে বড় ভূমিকা রাখে। যদিও শেষ বলে ২ রান নিতে গিয়ে অল্পের জন্য রান আউটের হাত থেকে বেঁচে যান তিনি।
বল হাতে রুবেল হোসেনে ৩ উইকেট নিয়েছেন। ১ উইকেট করে নিয়েছেন মোস্তাফিজ, তাসকিন ও সৌম্য।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫৮ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০২১
এমএইচএম