দুদিন আগে শেষ বলে গড়ানো ম্যাচে চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হেরে গিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। তবে এক ম্যাচে পরেই দারুণভাবে জয়ে ফিরলো দলটি।
মঙ্গলবার শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চলতি আইপিএলের ৪১তম ম্যাচটি ১০ বলে হাতে রেখেই ৩ উইকেটে জিতেছে কলকাতা।
ভারত এবং আরব আমিরাত- দুই পর্ব মিলিয়ে প্রথম তিন ম্যাচে একাদশে সুযোগ পেয়েছেন সাকিব। কিন্তু পারফরম্যান্স সুবিধার না হওয়ায় তাকে আর একাদশেই দেখা যায় না। তার জায়গায় ক্যারিবিয়ান স্পিনিং অল-রাউন্ডার সুনিল নারাইন খেলে যাচ্ছেন। বল হাতে নিয়মিত সাফল্য পেলেও ব্যাট হাতে কিছুই করতে পারেননি। এদিকে আন্দ্রে রাসেলও ছিটকে গেছেন। আগের ম্যাচে আবার দল হেরেও গিয়েছিল। তবু সাকিবকে একাদশে রাখেনি কলকাতা। তাতে অবশ্য জয়ে ফিরতে খুব একটা অসুবিধা হয়নি তাদের।
শুরুতে ব্যাট করতে নামা দিল্লিকে অল্প রানে আটকে দিয়েছিল কলকাতা। নারাইন-ফার্গুসনদের বোলিং তোপে পুরো ২০ ওভার খেলেও ৯ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২৭ রান। জবাবে শুরু আর মাঝে ব্যাটিংয়ে কিছুটা নড়বড়ে অবস্থা বিরাজ করলেও শেষদিকে নারাইনের ক্যামিও ইনিংসে ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কলকাতা।
অল্প রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২৮ রানে ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ারের (১৪) উইকেট হারায় কলকাতা। তিনে নামা রাহুল ত্রিপাঠীও (৯) সুবিধা করতে পারেননি। এরপর নিতিশ রানার সঙ্গে ২৪ রানের জুটি গড়ার পর বিদায় নেন আরেক ওপেনার শুভমান গিল। তবে তার ব্যাট থেকে আসে ৩৩ বলে ৩০ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস।
পাঁচে নামা অধিনায়ক ইয়ন মরগান (০) দ্রুত বিদায় নিলে বিপাকে পড়ে যায় কলকাতা। তবে দীনেশ কার্তিককে নিয়ে লড়াই জারি রাখেন রানা। বলের চেয়েও কম রান লাগে, এমন অবস্থায় কার্তিক (১২) অকারণে কাট করতে গেলে বল তার ব্যাটের কানায় লেগে স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। তবে এরপর আসল কাজটা করেন নারাইন।
সাতে নেমে এক চার ও ২ ছক্কায় মাত্র ১০ বলে ২১ রানের ছোটখাটো ঝড় তুলে ম্যাচ বের করে নেন নারাইন। এই ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার কলকাতার জন্য সমীকরণটা সহজ করে দেন। দলকে ১২২ রানে রেখে তিনি যখন বিদায় নেন তখন ১৯ বলে কলকাতার চাই মাত্র ৬ রান। এরপর ১৮তম ওভারে অযথা উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন টিম সাউদি (৩)। তবে বিপদ হতে দেননি নিতিশ রানা। ২৭ বলে ২ চার ও ২ ছক্কায় ৩৬ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচ শেষ করে আসেন তিনি।
বল হাতে দিল্লির আভেশ খান ৩ ওভারে মাত্র ১৫ রান খরচে নেন ৩ উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট গেছে এনরিচ নরকিয়া, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ললিত যাদব ও কাগিসো রাবাদার দখলে।
এর আগে দুই ওপেনার স্টিভ স্মিথ ও শিখর ধাওয়ানের ব্যাট ভালো শুরু পায় দিল্লি। দুজনের জুটিতে আসে ৩৫ রান। ধাওয়ান বিদায় নেন ২০ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে। এরপর তিনে নামা শ্রেয়াস আইয়ারকে (১) ফেরান নারাইন। তবে দিল্লির অধিনায়ক ঋষভ পন্থ ও স্মিথ মিলে ৩৭ রানের জুটি গড়ে ধাক্কা অনেকটা সামলে নিয়েছিলেন। কিন্তু স্মিথের (৩৯) বিদায়ের পর পন্থ ছাড়া বাকিরা কেউই দুই অঙ্কের দেখা পাননি। শেষ ওভারে রান আউট হওয়ার আগে পন্থের ব্যাট থেকে আসে ৩৬ বলে ৩৯ রান।
বল হাতে কলকাতার লোকি ফার্গুসন, নারাইন ও আইয়ার ২টি করে উইকেট তুলে নিয়েছেন। ১ উইকেট গেছে সাউদির ঝুলিতে। এর মধ্যে ফার্গুসন ২ ওভারে মাত্র ১০ রান এবং নারাইন ৪ ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ১৮ রান। সবমিলিয়ে মরগান ছাড়া দলের বাকি বিদেশিদের দারুণ পারফরম্যান্স এবং দলের জয়ের পর কলকাতার হয়ে সাকিব আল হাসানের মাঠে ফেরার পথ আরও কঠিন হয়ে গেল।
এই জয়ের পরও পয়েন্ট টেবিলে কলকাতার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। ১১ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে চারে আছে দলটি। অন্যদিকে সমান ম্যাচ খেলে ১৬ পয়েন্ট পাওয়া দিল্লি আছে দুইয়ে।
বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২১
এমএইচএম