লিগ টেবিলের চতুর্থ স্থান নিয়ে লড়াই ছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের মধ্যে। গতকাল রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে জয়ের পর প্লে-অফের রাস্তা প্রায় পাকা করে ফেলেছিল কলকাতা।
শুক্রবার রাতে আবুধাবিতে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৩৫ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল মুম্বাই, যা এবারের আসরের এবং আইপিএলে মুম্বাইয়ের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। জবাবে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রান তুলতে পারে হায়দরাবাদ। ফলে ৪২ রানে জিতে যায় মুম্বাই। কিন্তু তাতেও তাদের বিদায় ঠেকানো যায়নি।
মুম্বাইকে প্লে-অফে যেতে হলে হায়দরাবাদকে ১৭১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারাতে হতো। কারণ আগের ম্যাচে ৮৬ রানে জেতা কলকাতার নেট রান রেট বেশ ভালো। ১৪ ম্যাচ খেলে তাদের পয়েন্ট ১৪। নেট রান রেট ০.৫৮৭। অন্যদিকে আজকের ম্যাচের আগ পর্যন্ত ১৩ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে থাকা মুম্বাইয়ের নেট রান রেট ছিল -০.০৪৮। ফলে মুম্বাইয়ের সামনে ছিল দুর্গম পথ। ২৩৫ রান করেও তাই সমীকরণ দাঁড়ায় হায়দরাবাদকে ৬৫ রান বা তার কমে না আটকাতে পারলে প্লে অফের স্বপ্ন শেষ হয়ে যাবে তাদের। কিন্তু হায়দরাবাদকে অত অল্পতে আটকে রাখতে পারেননি মুম্বাইয়ের বোলাররা।
বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নেমে দুই ওপেনার জেসন রয় এবং অভিষেক শর্মার ব্যাটে দারুণ শুরু পেয়েছিল হায়দরাবাদ। দুজনের জুটিতে আসে ৬৪ রান। জেসন রয় করেন ২১ বলে ৩৪ রান। এরপর কেন উইলিয়ামসনের জায়গায় দলটির নেতৃত্বে আসা মনীশ পান্ডে ও অভিষেক মিলে লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন। মাত্র ১৬ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নেন অভিষেক। চাপে পড়ে যাওয়া হায়দরাবাদ এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে। দ্রুত বিদায় নেন মোহাম্মদ নবি (৩), আব্দুল সামাদ (২)।
হায়দরাবাদের লোয়ার মিডল অর্ডার ব্যাটার প্রিয়ম গার্গ খেলেন ২১ বলে ২৯ রানের ইনিংস। কিন্তু ধীরগতির এই ইনিংস বিশেষ কোনো কাজে আসেনি। এরপর জেসন হোল্ডার (১) ও রশিদ খান (৯) ড্রেসিং রুমের পথ ধরলে প্রমাদ গুনতে থাকে হায়দরাবাদ। তবে অপরপ্রান্ত ঠিকই আগলে রাখেন মনীশ। তুলে নেন ফিফটিও। কিন্তু লক্ষ্য তখন হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে। শেষ ১২ বলে তাদের দরকার ছিল ৫৭ রান। প্রায় অসম্ভব লক্ষ্য তাড়া করতে পারেনি হায়দরাবাদ। তারওপর ১৯তম ওভারে ন্যাথান কোল্টার-নাইলের বলে কট অ্যান্ড বোল্ড হন ঋদ্ধিমান সাহা (২)। ওই ওভারে আসে মাত্র ৩ রান। আগের ওভারেও সমান রান এসেছিল। এরপর শেষ ওভারে ১১ রান তুলতে পারে তারা। মনীশ ৪১ বলে ৭ চার ও ২ ছক্কায় ৬৯ রান নিয়ে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে ঈশান কিশানের ৩২ বলে ১১ চার ও ৪ ছক্কায় দানবীয় ৮৪ রান ও সূর্যকুমার যাদবের ৪০ বলে ১৩ চার ও ৩ ছক্কায় ৮২ রানের টর্নেডো ইনিংসে ভর করে বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায় মুম্বাই। এই দুজন মিলে ১২ ওভারে তোলেন ১৬৬ রান। এছাড়া দলটির বাকি ব্যাটারদের মধ্যে বলার মতো রান পেয়েছেন কেবল অধিনায়ক রোহিত শর্মা (১৮)।
বল হাতে হায়দরাবাদের সব বোলারই রান খরচ করেছেন সমানতালে। তবে রান খরচে উদার হলেও ৪ উইকেট নিয়েছেন জেসন হোল্ডার। রশিদ খান ২টি এবং উমরান মালিক ১টি উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন। তবে মাত্র ১ ওভার বল করেই ৪ রান খরচে ২ উইকেট পেয়েছেন অভিষেক শর্মা। তিনি বল করেছেন ওই এক ওভারই।
১৪ ম্যাচে ৭টি করে জয় ও হারে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে থেকে আসর শেষ করল মুম্বাই। অন্যদিকে সমান পয়েন্ট নিয়েও নেট রান রেটে এগিয়ে থাকায় প্লে-অফে উঠলো কলকাতা। আর ১৪ ম্যাচে মাত্র ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শেষ স্থান নিয়ে আসর শেষ হলো হায়দরাবাদের।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৯, ২০২১
এমএইচএম