ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

ক্রিকেট

সাকিবের দ্বিতীয় আঘাত, টালমাটাল আফগানিস্তান

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
সাকিবের দ্বিতীয় আঘাত, টালমাটাল আফগানিস্তান ছবি: উজ্জ্বল ধর

তাসকিন আহমেদ ফিফটি হাঁকানো দুই আফগান ব্যাটারকে বিদায় করার পর আঘাত হানলেন সাকিব আল হাসান। দেশসেরা অলরাউন্ডারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেছেন আফগান ব্যাটার রহমতউল্লাহ গুরবাজ (৭)।

ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে টালমাটাল অবস্থায় পড়েছে আফগানদের ব্যাটিং লাইনআপ।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে আফগানদের সংগ্রহ ১৭৫ রান।

বাংলাদেশের ছুড়ে দেওয়া বিশাল লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি আফগানিস্তানের। প্রথম ৪ ওভারের মধ্যেই সফরকারীরা ২ উইকেট হারিয়ে ফেলে। আফিফ হোসেনের সরাসরি থ্রোয়ে বিদায় নেন ওপেনার রিয়াজ আহমেদ (১)। এরপর শরিফুলের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন আফগান অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ শহীদি (৫)। এবার দশম ওভারে সাকিব আল হাসানের স্পিনে বিভ্রান্ত হয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন চারে নামা আজমতুল্লাহ ওমরজাই (৯)।

দলীয় ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারায় আফগানরা। তবে সেখান থেকেই নজিবুল্লাহ ও রহমতের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। দুজনের জুটিতে আসে ৯০ বলে ৮৯ রান। এর মধ্যে রহমত ফিফটি তুলে নেন ৬৯ বলে। তবে পরের ওভারেই তাসকিনের বল রহমতের (৫২) স্ট্যাম্পের বেল ভেঙে দেয়। ওই ওভারেই সিরিজে টানা ফিফটি তুলে নেন নজিবুল্লাহ। ৫৭ বলে ফিফটি ছোঁয়ার পর অবশ্য বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি। ৩ ওভার পরে সেই তাসকিনের বলেই মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬১ বলে ৫৪ রান করেন নজিবুল্লাহ।  

এর আগে লিটন দাসের অসাধারণ সেঞ্চুরি ও মুশফিকুর রহিমের নব্বই ছুঁইছুঁই ইনিংসে ভর করে আফগানিস্তানের সামনে ৩০৭ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছে বাংলাদেশ।

তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩০৬ রানে।  

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ধীরগতির শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। গত ম্যাচে বল হাতে চার উইকেট নেওয়া ফজল হক ফারুকির বল দেখেশুনে খেলছিলেন তারা। তবে সপ্তম ওভারে এসে আর পারলেন না তামিম। এলবিডব্লিওর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন তিনি। রিভিউ নিয়েও লাভ হয়নি। ২৪ বলে ১২ রান করে সাঝঘরে ফেরেন টাইগার অধিনায়ক।

তামিমের বিদায়ের পর ব্যাট করতে নেমে থিতু হয়ে ব্যাট করতে থাকেন সাকিব। কিন্তু বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ষষ্ঠদশ ওভারে রশিদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ২০ রান সংগ্রহ করে বিদায় নেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার। এরপর ব্যাট করতে নেমে লিটন দাসকে সঙ্গ দেন মুশফিকুর রহিম। দুজনের ব্যাটে রানবন্যা বয়ে যায়। ৮ চারে ৬৫ বলে অর্ধশতক তুলে নেন লিটন আর মুশফিক ফিফটির দেখা পান ৬০ বলে।

ফিফটির দেখা পাওয়ার লিটনের ব্যাট আরও চওড়া হতে থাকে। ব্যক্তিগত ৮৭ রানে একবার জীবন পাওয়া এই ব্যাটার পরে সেঞ্চুরি তুলে নিতে খুব বেশি দেরি করেননি। ১০৭ বলেই ছুঁয়ে ফেলেন পঞ্চম ওয়ানডে সেঞ্চুরি। এরপর ব্যক্তিগত ৬৯ রানে আফগান উইকেটরক্ষক স্ট্যাম্পিংয়ের সুযোগ মিস করায় জীবন পান মুশফিকও।  

লিটন সেঞ্চুরি পেলেও মুশফিক পাননি। তবে দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ১৩ হাজারি ক্লাবে পা রেখেছেন তিনি। তার আগে আছেন শুধু তামিম (১৪১৭৫ রান)।  

দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে দেড়শ ছোঁয়ার পথে ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু ৪৭তম ওভারে আফগান পেসার ফরিদ আহমেদের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরলেন ১২৬ বলে ১৩৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলা ডানহাতি ওপেনার। ইনিংসটি খেলার পথে ১৬টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনি।

একই পেসারের পরের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে বিদায় নেন সেঞ্চুরির দিকে ছুটতে থাকা মুশফিকও। বিদায়ের আগে ডানহাতি এই ব্যাটার ৯৩ বলে ৯ চারে ৮৬ রান করেছেন। তাদের জুটিও থেমেছে ২০২ রানে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের মাত্র তৃতীয় ২০০ ছাড়ানো জুটি এটি।  ১৮৬ বলে গড়া এই জুটিই বাংলাদেশ ইনিংসের প্রাণ। শেষদিকে ৫ রানে মাহমুদউল্লাহ এবং ১৩ রানে অপরাজিত থাকেন প্রথম ম্যাচের নায়ক আফিফ হোসেন।  

বল হাতে আফগানিস্তানের ফরিদ ২টি এবং ফারুকি ও রশিদ খান ১টি করে উইকেট নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২২
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।