চট্টগ্রাম: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ইঞ্চি জমিও পতিত না রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন। পরে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি অনাবাদি না রাখার বার্তা দেওয়া হয়।
কৃষি উৎপাদন বাড়াতে চলতি রবি মৌসুমে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রামের ৮০ হাজার কৃষককে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, চলতি রবি মৌসুমে (২০২২-২০২৩ সাল) বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৫ হাজার হেক্টর জমি। বোরো আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ ও সার সহায়তা দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। বোরো আবাদে দুই ক্যাটাগরিতে দেওয়া হবে ৭৩ হাজার কৃষককে। এছাড়াও রবিশস্য উৎপাদনের জন্য আরও ৭ হাজার চাষিকে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে এবার ৮০ হাজার কৃষককে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি বিভাগ জানায়, মীরসরাই উপজেলায় ২১ হাজার ৪০৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এর বিপরীতে প্রণোদনা পেয়েছেন ১২৩০ জন কৃষক। সীতাকুণ্ড উপজেলায় ছয় হাজার ৪০২ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ফটিকছড়িতে ২১ হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রণোদনা পেয়েছেন ছয় হাজার কৃষক। হাটহাজারীতে নয় হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন ৩৫০০ জন। রাউজানে ১১ হাজার ৭৬০ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রণোদনা পেয়েছেন ৩৪২০ জন কৃষক। রাঙ্গুনীয়া উপজেলায় ১৫ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন ৫৪৮০ জন কৃষক। বোয়ালখালীতে চার হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন ১৪শ জন কৃষক। পটিয়ায় (কর্ণফুলীসহ) ১৩ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন ৩৭শ জন কৃষক। আনোয়ারা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় সাত হাজার ৪৮০ হেক্টর জমি। প্রণোদনা পেয়েছেন ৪৫০০ জন কৃষক। চন্দনাইশে আট হাজার ১৪৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন ২৬৫০ জন কৃষক। লোহাগাড়া উপজেলায় ১১ হাজার ৫ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন তিন হাজার জন কৃষক। সাতকানিয়ায় ১২ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন ৫১৫০ জন কৃষক। বাঁশখালীতে ১৪ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন ৭৭৫০ জন কৃষক। সন্দ্বীপে ২৪ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। প্রণোদনা পেয়েছেন একশ জন কৃষক। এ ধাপে ৪৮ হাজার কৃষককে দুই কেজি করে হাইব্রিড বীজ প্রদান করা হবে।
এছাড়াও ২৫ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে সার ও বীজ বিনামূল্যে দেওয়া হবে। প্রতিজন কৃষককে ১০ কেজি করে ডিএপি, ১০ কেজি করে এমওপি ও ৫ কেজি করে উফশী জাতের বীজ প্রদান করা হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, বোরো ও রবিশস্যের আবাদ ও উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সরকার এবার সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রণোদনা দিচ্ছে। এতে কৃষি উৎপাদন বাড়ানোয় বড় ভূমিকা রাখবে। চট্টগ্রামে প্রণোদনা পাচ্ছেন ৮০ হাজার কৃষক।
জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ থাকার জন্য যতটুকু সম্ভব খাদ্য উৎপাদনে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন। আমরা সে অনুযায়ী চট্টগ্রামের উপজেলাগুলোতে নির্দেশনা দিয়েছি। কৃষকদের সঙ্গে নিয়ে অনাবাদি জমিগুলো কিভাবে আবাদ করা যায় সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করছি। যদি কোনও কৃষক জমি আবাদ করতে অপারগ হন, তাহলে সংশ্লিষ্ট দফতরের সহযোগিতায় জমি আবাদ করার ব্যবস্থা করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৫, ২০২২
বিই/টিসি