ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বে টার্মিনালে ২০২৫ সালে অপারেশন শুরু হবে: নৌ প্রতিমন্ত্রী 

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৩
বে টার্মিনালে ২০২৫ সালে অপারেশন শুরু হবে: নৌ প্রতিমন্ত্রী  ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: বে টার্মিনালে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ করবে চট্টগ্রাম বন্দর এবং ২০২৫ সালের শেষদিকে বা ২০২৬ সালের শুরুতে এর কার্যক্রম চালু করতে পারবো।

সোমবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে বন্দরের সিসিটি জেটিতে জাহাজ বার্থিংয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।

নৌ প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন দাতা গোষ্ঠী আমাদের পেছনে পেছনে ঘুরছে। বন্দর আইন দ্বারা পরিচালিত।

বাংলাদেশকে এগিয়ে যেতে হলে বিশ্বের সব দেশের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে এগিয়ে যেতে হবে। তলাবিহীন ঝুড়ি যারা বলেছে তারা শুধরে নিচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আমি বিশ্বাস করি আগামী নির্বাচনে আরও বেশি জনসমর্থন নিয়ে সরকার গঠন করবে।

তিনি বলেন, ১০ মিটার ড্রাফট নিশ্চিত করতে পেরেছি। এটি দেশের জন্য গর্ব ও অহংকারের। আমাদের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক অন্য রকম। জাতির পিতাকে যখন বিভিন্ন দেশে যাওয়ার অপশন দেওয়া হয়েছিল তিনি যুক্তরাজ্য বেছে নিয়েছিলেন। দেশের উন্নয়নে যুক্তরাজ্যের ভূমিকা অনস্বীকার্য। বন্দরের ইতিহাসেও যুক্তরাজ্যের ভূমিকা রয়েছে। বন্দর থেমে গেলে দেশ থেমে যায়। পদ্মা সেতুতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে চট্টগ্রাম বন্দরের ভূমিকা আছে। ১৪ বছর বাংলাদেশের অগ্রগতির কৃতিত্বের অন্যতম দাবিদার চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের অংশীজনদের দাবি সরকার গুরুত্ব দেয়। ১৮টি গ্যান্ট্রি ক্রেন এ বন্দরে। ৪৮ ঘণ্টায় একটি জাহাজ হ্যান্ডেল হচ্ছে। দ্রুততার সঙ্গে পিসিটি চালু করতে পারবো।  

গেস্ট অব অনার ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটারটন ডিকসন বলেন, এটি চট্টগ্রাম বন্দর ও বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক দিন। ২০০ মিটার লম্বা বড় জাহাজ ভিড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে। এর ফলে বাংলাদেশের আমদানি রফতানিতে আরও গতি আসবে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন, করোনাকালে ৫৪ জন লোক মারা গেছে কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ হয়নি। দেশের জন্য তারা প্রাণ দিয়েছেন। সরকারের শেষ বছর। তখন বিভিন্ন দাবি, উস্কানি শুরু হয়। সাপ্লাই চেইন সবার জন্য। বে টার্মিনাল করতে যাচ্ছি। আমরা একদিনের জন্যও কাজ থামাইনি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে স্মার্ট। পোর্টও হবে স্মার্ট। এর জন্য স্মার্ট টিম চাই। মাতারবাড়ী, বে টার্মিনাল, চট্টগ্রাম বন্দর একসঙ্গে অপারেশন করলে জাতীয় আয় বাড়বে।

সভাপতির বক্তব্যে বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, আজ বন্দরের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত। ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ‘কমন অ্যাটলাস’ ভিড়েছে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বন্দরকে মাইনমুক্ত করে চালু করেছিলেন। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী সমুদ্রসীমা জয় করেছেন। বে টার্মিনাল জাতির চাহিদা। ডিপিপি প্রণয়নের কাজ চলছে। করোনার মধ্যেও প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। ত্রি মিলিয়ন কনটেইনার ক্লাবে অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছি। বন্দর ব্যবহারকারী ও দেশকে সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা সচেষ্ট। বাংলাদেশের জাহাজ মালিকরা বড় বড় জাহাজ নিয়ে আসছেন। এর জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। করোনার মধ্যেও চট্টগ্রাম বন্দর একমুহূর্তও বন্ধ ছিল না। সব কৃতিত্বের মূল দাবিদার আমাদের শ্রমিকরা। করোনার মধ্যে তাদের মুখে না শুনিনি।  

যুক্তরাজ্য ভিত্তিক হাইড্রোলিক সংস্থা এইচআর ওয়েলিংফোর্ডের প্রতিনিধি ড. মনজুরুল কাদের বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের এ স্টাডি ছিল চ্যালেঞ্জিং। করোনার কারণে এটি আরও কঠিন হয়ে পড়েছিল। আজ বড় জাহাজ ভিড়েছে এটিই বাস্তবতা।

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ মো. আরিফ বলেন, বহির্নোঙরে যে কার্গো লাইটারিং হয় সেই জাহাজগুলোকে এ সুবিধা দিলে ৪০-৪৫ হাজার টন পণ্য আনতে পারবে। গুপ্ত খাল খনন করা হলে আরও বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে। ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে আমাদের যে চুক্তি করতে হয় তার আর প্রয়োজন হবে না। বড় জাহাজের পাশাপাশি ছোট ফিডার জাহাজ বার্থিংয়ের সুবিধা অব্যাহত রাখতে হবে। কনটেইনার জাহাজের পাশাপাশি বাল্ক জাহাজকেও সুবিধা দিতে হবে।  

চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর নব্বই দশক ও এর আগে অনেক দুঃসময় কাটিয়েছিল। গত ১৪ বছর একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি এ বন্দর। করোনাকালেও এ বন্দর এক ঘণ্টার জন্যেও বন্ধ ছিল না। এনসিটি তৈরির পর চার বছর কাজ হয়নি। চট্টগ্রাম বন্দর চার মিলিয়ন কনটেইনার ক্লাবে যাবে আশা করি। পিসিটি তৈরি আছে, যত তাড়াতাড়ি চালু হয় তত মঙ্গল।  

তিনি বলেন, কর্ণফুলী নদী বন্দরের প্রাণ। এ বন্দর সচল রাখতে কর্ণফুলী ড্রেজিং চালু রাখতে হবে। মামলাও থাকবে-হামলাও থাকবে, ড্রেজিং বন্ধ করা যাবে না। বে টার্মিনালের কাজ কখন শুরু হবে নৌ প্রতিমন্ত্রীর মুখে শুনতে চাই। বে টার্মিনাল হলে বাংলাদেশকে ৫০ বছর বন্দর নিয়ে ভাবতে হবে না।  

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।