ঢাকা, শুক্রবার, ৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ইউরোপ যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের কাঁচা আম

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
ইউরোপ যাচ্ছে সীতাকুণ্ডের কাঁচা আম ...

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের অন্যান্য উপজেলায় যখন কৃষিজমি দখলে নিয়ে অবাধে ইটভাটা আর দালান তৈরিতে ব্যস্ত, সেখানে সীতাকুণ্ড উপজেলায় অনাবাদি জমি আবাদ করে চাষ হচ্ছে নিত্যনতুন সব সবজি আর ফলমূল।  

কৃষি সম্প্রসারণে ব্যাপক উদ্যোগ নিয়েছে সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি অফিস।

তারা অনাবাদি বিভিন্ন জমি আবাদ করে নানা ফসল ফলাচ্ছেন। ইতিমধ্যে রঙিন ফুলকপি চাষ, বিষমুক্ত সবজি চাষ, শিম ও শিমের বিচি বিদেশে রফতানি করে ব্যাপক সাড়ে ফেলেছেন।
এবার বিদেশে কাঁচা আম রফতানি করতে যাচ্ছে এ উপজেলা।  

সীতাকুণ্ড উপজেলায় ৩০৫ হেক্টর জমিতে এ বছর প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। সেই আম রফতানি হচ্ছে ইউরোপের দুই দেশে।

সোমবার (২৭ মার্চ) রাতে ১৩০ কেজি কাঁচা আম যাবে ইতালিতে। এর আগে ২০ মার্চ প্রথম দফায় পরীক্ষামূলকভাবে ৭৫ কেজি আম ইতালি ও সুইডেনে রফতানি করা হয়েছে। আমগুলো পছন্দ হলে এবছর বিপুল পরিমাণ আম রফতানি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

জানা যায়, ঢাকার তেজগাঁওয়ের বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান সীতাকুণ্ডের আম চাষি মাহমুদ হাসান ওরফে শিশিরের কাছ থেকে ২০ মার্চ প্রথম দফায় ৮৪ কেজি আম কিনে নেন। এরপর বাছাই করা ২৫ কেজি আম ইতালি ও ৫০ কেজি আম সুইডেনের একটি প্রতিষ্ঠানে পাঠান। ঐ প্রতিষ্ঠানগুলো এসব আম পছন্দ করলে চলতি মৌসুমে সীতাকুণ্ড থেকে বিপুল পরিমাণ আম তারা কিনে নেবেন।

সীতাকুণ্ড উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবীবুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম দফায় ৭৫ কেজি কাঁচা আম পাঠানো হয়েছে ইতালি ও সুইডেনে। এরপর দ্বিতীয় দফায় ১৩০ কেজি আম পাঠানো হবে। আমগুলো প্রথমে ঢাকা যাবে। এরপর সেখান থেকে প্রক্রিয়া শেষে ইতালি যাবে।  

সীতাকুণ্ড পৌরসদরের বাসিন্দা আম চাষি মাহমুদ হাসানের কাছ থেকে আমগুলো কেনা হচ্ছে। তিনি বলেন, কৃষক মাহমুদ হাসান ব্যক্তিগত ফেসবুক পেজ ‘সীতাকুণ্ড ফ্রুট শপ’- এ প্রচারণা চালান। এই প্রচারণায় আকৃষ্ট হন বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি রফতানিকারণ প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম মাহমুদ হাসানের সাথে যোগাযোগ করে আম কেনার বিষয়টি চূড়ান্ত করেন এবং সবশেষে কৃষি অফিসের কাছে আমের মান সম্পর্কে নিশ্চিত হন।  

আম বিক্রেতা মাহমুদ হাসান বলেন, রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর স্বত্বাধিকারী রেজাউল ইসলাম কল্লোল হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে আমের কোয়ালিটি নিশ্চিত করার জন্য কল্লোল কৃষি অফিসের একটি প্রত্যয়ন পত্র চান। কৃষি অফিস এটি দেওয়ার পর তাকে পাঠানো হয়। আলোচনায় প্রতি কেজি আম ১৫০ টাকা করে দরদাম ঠিক হয়। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একটি প্রত্যয়নপত্র দেন। বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠানোর পর কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবীবুল্লাহর তত্ত্বাবধানে আমগুলো প্যাকেট করে রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বিএইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম কল্লোল বলেন, ‘ইউরোপে আমাদের দেশের কাঁচা আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের আম উৎপাদনের প্রধান অঞ্চল উত্তরবঙ্গের আম পাওয়া যাবে আরও অন্তত এক মাস পরে। আগাম আম রফতানির জন্য কাঁচা আম খুঁজছিলাম। ফেসবুকে আম লিখে চার্জ দিয়ে মাহমুদ হাসানের পেজটি খুঁজে পেলাম। তারপর তার সঙ্গে যোগাযোগ করে প্রথমবারের মতো নমুনা হিসেবে ৮৪ কেজি আম কিনে নিই। এর মধ্যে ৭৫ কেজি নমুনা হিসেবে ইতালি ও সুইডেনে পাঠিয়েছি। আজ আরও ১৩০ কেজি আম ইতালি যাবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৪ ঘণ্টা, ২৭ মার্চ, ২০২৩ 
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।