ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

হাজারো ধনী-গরিবের ইফতার এক কাতারে

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩
হাজারো ধনী-গরিবের ইফতার এক কাতারে প্রথম রোজার ইফতার। ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: এক ছাদের নিচে হাজার হাজার মানুষ। কারও বয়স আশি-নব্বই, কেউবা আবার তরুণ।

কেউ ধনী, কেউ গরিব। সেই পরিচয় ছাপিয়ে এখন তারা এক কাতারে।
এখানে তাদের পরিচয় তারা রোজাদার। সবার সামনে প্লাস্টিকের প্লেটে ইফতার। প্লাস্টিকের রঙিন গ্লাসে শরবত।  

প্রতিদিন ইফতারের সাইরেন পড়লে কিংবা মসজিদে আজান হলে একসঙ্গে ইফতার করেন তারা। দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন তারা। কেউ নিয়ত করে আসেন। কেউবা দেখতে আসেন।

নগরের আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদে রমজান মাসে প্রতিদিনের ইফতারের চিত্রটা এমনই।

ইফতারের ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ তৈরির কাজটা শুরু হয় সাতসকালে। তারও আগে ভিজাতে দেওয়া হয় ছোলা। মসজিদের পশ্চিম প্রান্তে অস্থায়ী রান্নাঘর তৈরি করা হয়েছে প্যান্ডেলের ভেতর। সোমবার (২৭ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটায় রান্নাঘরে ছোলার ওপর গাজরকুচি দিচ্ছিলেন বাবুর্চি মো. সিরাজুল ইসলাম।  

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আজ ৫০ কেজি ছোলা, ২০ কেজি খেসারির পেঁয়াজু, ২৫ কেজি বেগুনের বেগুনি, ৫০ কেজি আলুর চাপ তৈরি করেছি। আশাকরি এগুলো দিয়ে দেড়-দুই হাজার রোজাদার ইফতার করতে পারবেন।  

ইফতার করতে আসা সাতকানিয়ার আবদুল আলীম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবছর একদিন ইফতার আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদে করি। এতে শান্তি পাই। মনে হয়, হাজারো রোজাদারের উসিলায় আল্লাহ আমার নেক মকসুদ কবুল করবেন।  

ইফতার সামগ্রী তদারকির দায়িত্বে থাকা মো. হাসান মুরাদ বাংলানিউজকে জানান, ১০ জন বাবুর্চি ও ৩০ জন খাদেম রয়েছেন ইফতার তৈরি ও পরিবেশনের কাজে। ইফতারির মধ্যে থাকছে রুহ আফজা বা লেবুর শরবত, জনপ্রতি ছোট প্যাকেটে মুড়ি, ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চাপ, ২টি করে খেজুর ইত্যাদি। প্রথম রমজানে দেড় হাজার রোজাদারের ইফতার তৈরি করেছি। এখন দুই হাজার লোকের ইফতার তৈরি করছি। রমজানের শেষ দিকে এটি প্রতিদিন ৩-৪ হাজারে উন্নীত হবে।  

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদের খতিব ছাইয়্যেদ মুহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরী আল মাদানি হুজুর মক্কা ও মদিনার আদলে ২০০১ সালে এ মসজিদে ছোট পরিসরে ইফতারের প্রচলন করেছিলেন। ২০০৭ সাল থেকে এটি বড় পরিসরে হয়ে আসছে।  

খতিব হুজুরের তত্ত্বাবধানে এখানে ছোলা, খেসারি, আলু, বেগুন থেকে শুরু করে খেজুর, শরবত পর্যন্ত সবই গোপনে দিয়ে যান ধর্মপ্রাণ আশেকরা। মুড়িগুলো জনপ্রতি প্যাকেট করে একজন ভক্ত দিয়ে যান। তারা প্রচার নয় সওয়াবের উদ্দেশ্যে এসব করে থাকেন।   

মো. হাসান মুরাদ জানান, শুধু মুসলিমরা এখানে ইফতার করেন তা নয়, স্থানীয় অনেক ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরাও নিয়মিত তবররক হিসেবে ইফতার নিয়ে যান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৩ 
এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।