ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সুপেয় পানির সংকটে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৩ উপজেলার মানুষ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০২৩
সুপেয় পানির সংকটে দক্ষিণ চট্টগ্রামের ৩ উপজেলার মানুষ ...

চট্টগ্রাম: পানির স্তর কমে যাওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের কয়েকটি উপজেলায় দেখা দিয়েছে সুপেয় পানির সংকট। জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে এ সংকট- বলছেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা।

তাই ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার তাগিদ দিচ্ছেন তারা।

বোয়ালখালী উপজেলার কধুরখীল, পূর্ব গোমদন্ডী, পশ্চিম গোমদন্ডী, শাকপুরা, সারোয়াতলী, চরণদ্বীপ এলাকার বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার নলকূপ অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।

এছাড়া, কর্ণফুলী উপজেলার  জুলধা, শিকলবাহা, বড়উঠান, চরলক্ষ্যাসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকায় খাবার উপযোগী পানি পেতে ১ হাজার ফুটের বেশি গভীর নলকূপ স্থাপন করতে হচ্ছে।

অন্যদিকে পটিয়া উপজেলার কোলারগাঁও, হাবিলাসদ্বীপ, কুসুমপুরা, শিকলবাহা, জুলধা এলাকায় নলকূপের পানিতে লবণাক্ততার পরিমাণ বেশি হওয়ায় তা পান করা যাচ্ছে না। এসব এলাকায় শিল্পকারখানাগুলোতে অবৈধভাবে নলকূপ বসিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করা হচ্ছে।  

আনোয়ারা উপজেলার উপকূলীয় রায়পুর ইউনিয়নেও সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সাগরের জোয়ারের পানিতে এখানকার অগভীর নলকূপ ও পুকুরগুলো অধিকাংশই ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বারআউলিয়া, দক্ষিণ গহিরা, পূর্বগহিরা, সরেঙ্গা,  উত্তর পরুয়াপাড়া, দক্ষিণ পরুয়াপাড়া, উত্তর গহিরা ও রায়পুর এলাকায় কিছু অগভীর নলকূপ থাকলেও জোয়ারের লবণাক্ত পানিতে অধিকাংশই অকেজো।

স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলাগুলোর আশপাশে শিল্প প্রতিষ্ঠান ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের কারণে গ্রামগুলোতে এ পানিশূন্যতা। অনেক প্রতিষ্ঠানেরই পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই এবং বেশিরভাগই বর্জ্য শোধনাগার প্ল্যান্ট ছাড়া পরিচালিত হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানের বর্জ্য বিভিন্ন শাখা খালের মাধ্যমে কর্ণফুলীতে গিয়ে পড়ছে। গ্রামবাসী সুপেয় পানির পাশাপাশি চাষাবাদের পানিও পাচ্ছে না।  

পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আইয়ুব বাবুল জানান, পটিয়ার বিভিন্ন উপজেলায় পানি সংকট রয়েছে। বেশকিছু শিল্পকারখানা অবৈধভাবে গভীর নলকূপ বসিয়ে ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করছে। এতে পানির স্তর নেমে যাচ্ছে এবং আশপাশের এলাকার মানুষ সুপেয় পানি পাচ্ছে না। আবার পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় ভূ-উপরিস্থ পানিও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।  

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীরা বলছেন, ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে পানির স্তর নিচে নেমে গিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য ক্ষুণ্ন হয়। প্রত্যক্ষভাবে যে সমস্যা সৃষ্টি হয় তা হলো, পানির স্তর ক্রমাগত নেমে যাওয়ার ফলে পানি তোলার ব্যয় বেড়ে যায় এবং পানির প্রাপ্যতা কমে যায়, এমনকি ভূগর্ভস্থ পানিতে দূষণের ঝুঁকিও দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি মাটির নিচ থেকে অতিরিক্ত পানি উত্তোলন করা হলে ভূমিধসের ঝুঁকিও বাড়ে।

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা,  এপ্রিল ২৩, ২০২৩
এমআই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।