ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ: মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েও নীরব শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩
মুক্তিযোদ্ধাদের কটাক্ষ: মন্ত্রণালয়ের চিঠি পেয়েও নীরব শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান ...

চট্টগ্রাম: শিক্ষা বোর্ডের এক স্টেনোগ্রাফারের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কটাক্ষ ও গালি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই বিষয়ে বোর্ডের এক কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যানকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো নীরব চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার।

অভিযুক্ত স্টেনোগ্রাফারের নাম মো. নাছির উদ্দিন।

দায়িত্বরত অবস্থায় দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ অন্তত পাঁচবার দায়িত্ব থেকে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন তিনি। এরপরেও অজানা কারণে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশের চিঠিকে অবজ্ঞা করে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেননি বোর্ড চেয়ারম্যান।  

তবে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মুস্তফা কামরুল আখতার বাংলানিউজকে বলেন, আমি এখনো চিঠি হাতে পাইনি। চিঠি পেলে বিষয়টি আমি দেখবো।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সহকারী প্রোগ্রামার আবুল হাসনাত রাজু একজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল শিক্ষা বোর্ড মিলনায়তনে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওই মাহফিলে ইফতারের কিছুক্ষণ আগে দ্বিতীয় সারির চেয়ারে বসতে গেলে সহকারী প্রোগ্রামার আবুল হাসনাত রাজুকে বাঁধা দেন স্টেনোগ্রাফার নাছির। এ সময় রাজুকে অশ্লীল ভাষায় গালি ও তার বাবা মুক্তিযোদ্ধা হওয়ায় ‘মুক্তিযোদ্ধা’ শব্দটিকে অশ্লীল ও বিকৃতভাবে উচ্চারণ করেন নাছির। এনিয়ে ইফতার মাহফিলে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়।

এই ঘটনায় দুইদিন পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা বোর্ড। তদন্ত কমিটি প্রায় দুই মাস তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে মর্মে প্রতিবেদন জমা দেয়। পরবর্তীতে চলতি বছরের মার্চে ‘মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে ব্যাঙ্গ ও গালাগালের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ জানান রাজু।  

মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ জানিয়ে অভিযোগটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। পরবর্তীতে ৩১ মে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সরকারি মাধ্যমিক -২ এর উপসচিব মোর্শেদা আকতার স্বাক্ষরিত চিঠিতে অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু নির্দেশের পর প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো বিষয়টি তদন্ত বা অভিযুক্ত নাছিরের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি চেয়ারম্যান।

এই বিষয়ে ভুক্তভোগী আবুল হাসনাত রাজু বাংলানিউজকে বলেন, আমি  বিষয়টি নিয়ে আর এগুতে চাই না। আমি এ বিষয়ে কিছু বলবো না।

মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিদ্রুপ করায় অভিযুক্ত নাছিরকে অবিলম্বে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের দাবি জানান চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিটের কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘শিক্ষা বোর্ডের মতো জায়গায় তার চাকরি করার যোগ্যতা নেই। তাকে অবিলম্বে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি। ’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাছির বাংলানিউজকে বলেন, ‘এরকম কোনো অভিযোগের বিষয়ে আমার মনে নেই। আমি নিজে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষ, এরকম হলে তো আমিই এটা মেনে নেব না। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৩ 
বিই/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।