ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নতুন বইয়ের পাতায় স্বপ্নের দেখা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৪
নতুন বইয়ের পাতায় স্বপ্নের দেখা ...

চট্টগ্রাম: একই পরিবারের দুই সন্তান নিহা ও নিসা। রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় শোনা গেলো তাদের কণ্ঠে উচ্চস্বরে বই পড়ার শব্দ।

বাসায় গিয়ে দেখা যায়, নতুন বই নিয়ে পড়তে বসেছে তারা। চকচকে রঙিন বই নিয়ে তাদের চোখেমুখে যেন আগ্রহের শেষ নেই।
অজানাকে জানার জন্য যেন শত চেষ্টা। নতুন বইয়ে নতুন স্বপ্ন বুনছে দুই বোন।  

শুধু নিহা ও নিসা নয়, সন্ধ্যা নামতেই প্রায় ঘরে নতুন বই নিয়ে শিক্ষার্থীদের আনন্দ উপচে পড়ে। এ যেন নতুন স্বপ্ন দেখার উৎসব। সবার হাতে নতুন বই। কেউ ইংরেজি, কেউ বাংলা বই নিয়ে বসেছে। মাসের শুরুতেই বই উৎসবের মাধ্যমে নতুন বই পেয়েছে চট্টগ্রামের প্রায় সবকটি স্কুলের শিক্ষার্থীরা।  

হাটহাজারী উপজেলার পূর্ব ধলই গ্রাম। এই গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক খোরশেদ আলম। তার পরিবারে তিন কন্যা। ছোট দুই বোনকে নিয়ে পড়তে বসেছে বড় বোন খুরশিদা আখতার। সবার ছোট আরিশা মনি পড়ছে পঞ্চম শ্রেণিতে। বাংলা বই হাতে নিয়ে তার চোখে মুখে আনন্দের ছাপ। খুব মনোযোগ নিয়ে গল্প পড়ছিল সে।  

আরিশা মনি বাংলানিউজকে বলেন, নতুন বই পেয়ে খুব খুশি লাগছে। পুরনো বই শেষ করে নতুন বই পড়ার মজাই আলাদা। বইয়ে অনেক অজানা বিষয় দেখেছি। পড়তে বেশ মজা লাগছে। বইয়ের প্রথম পাতা থেকে শেষ পর্যন্ত একবার চোখ বুলিয়ে নিয়েছি। বইয়ের পাতায় আছে নানা রকমের ছবি।  
তাই যে ছবি তার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগবে সেই ছবির গল্পটি আগে পড়তে চায় আরিশা। মুখস্থ করতে চায় নতুন বইয়ের এক একটা কবিতা।

শিশুদের হাতে নতুন বই দেখে আনন্দিত তাদের অভিভাবকেরা। সন্তানদের মতোই নতুন বইয়ের আনন্দ তাদের ছুঁয়ে গেছে।

আরিশার মা আনিকা রহমান বাংলানিউজকে বলেন, মেয়েকে নতুন বই নিয়ে পড়ার আগ্রহ দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যায়। আমরাও নতুন বই পেয়ে কত কিছুই না করেছি। আজ আমার সন্তানেরা নতুন বই পেয়েছে। তাদের নতুন বই পড়তে আগ্রহের শেষ নই। নতুন বইয়ে নতুন নতুন সংযোগ যেন তাদের আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেক বিষয় আমাদেরও অজানা। আমরাও সময় পেলে আমাদের সন্তানের নতুন বই উল্টে পাল্টে দেখি। শিখি অনেক কিছু।

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ঘরে-ঘরে এখন চলছে বই পড়ার উৎসব। পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত থাকা সব বই পেয়েই আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলায় ১ কোটি ৬৭ লাখ ৬৮ হাজার ৪০০টি নতুন বই বিতরণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তর। ১১ হাজার ৫৭৪ স্কুলে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে এসব বই বিতরণ করা হয়।  

১১টি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বই বিতরণ হয়েছে চট্টগ্রাম জেলায়। চট্টগ্রামে ৪৪ লাখ ৪৮ হাজার ৫৯০টি, কক্সবাজার জেলায় ১১ লাখ ৫৫ হাজার ১৯৬টি, রাঙ্গামাটিতে ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৭৪৯টি, খাগড়াছড়িতে ৪ লাখ ৩০ হাজার ৩৬৭টি, বান্দরবানে ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৩২১টি, ফেনীতে ৬ লাখ ১৮ হাজার ৭৪৩টি, নোয়াখালীতে ১৭ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯২টি, লক্ষ্মীপুরে ৮ লাখ ৪ হাজার ৭১০টি, কুমিল্লায় ৩২ লাখ ৩০ হাজার ৭৫৯টি, চাঁদপুরে ১২ লাখ ৮৩ হাজার ১৫৩টি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ২৩ লাখ ৩৫ হাজার ২০টি বই বিতরণ করা হয়।  

বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০২৪ 
বিই/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।