ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

যে মেলার জন্য সারাবছর অপেক্ষা 

সোহেল সরওয়ার, সিনিয়র ফটো করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
যে মেলার জন্য সারাবছর অপেক্ষা  ছবি: বাংলানিউজ

চট্টগ্রাম: সারা বছরের গৃহস্থালী সামগ্রী সংগ্রহের লক্ষ্যে নগরের কিছু মানুষ অপেক্ষায় থাকে বৈশাখ মাসের জন্য। কারণ এ মাসেই হয় চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক জব্বারের বলীখেলা।

বলীখেলা ঘিরে বসে বৈশাখী মেলা। লালদীঘি ময়দানের আশপাশে প্রায় তিন কিলোমিটারজুড়ে বৈশাখী মেলার আয়োজন হয়।

এটি বৃহত্তর চট্টগ্রাম এলাকার সবচেয়ে বড় বৈশাখী মেলা।

এবার ২৫ এপ্রিল বসেছিল বলী খেলার ১১৫তম আসর। মেলায় এসেছিলেন বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা। তিনদিনের বৈশাখী মেলায় জমেছিল মানুষের ভিড়।

শনিবার (২৭ এপ্রিল) ভোরে এ মেলার আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি হওয়ার কথা থাকলেও বিকিকিনি চলবে আরও দিন দুয়েক। মূলত যারা বিভিন্ন হাতে তৈরি পণ্য নিয়ে মেলায় এসেছেন তারা প্রধান রাস্তা থেকে সরে ফুটপাতে চলে যান।  

অনেকে ফেরি করেও বিক্রি করেন পণ্য। নগরের আন্দরকিল্লা মোড় থেকে লালদীঘি হয়ে সিনেমা প্যালেস মোড় এলাকা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিনদিন মেলায় উপচে পড়া ভিড় থাকে। মেলা শেষ হওয়ার পরেও যেন এর রেশ থেকে যায়।  

এ মেলায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হয় হাতপাখা ও পাহাড়ি ফুলঝাড়ু। গরম ও লোডশেডিংয়ের কারণে হাতপাখার চাহিদা এবার আরও বেশি। মেলার আরও পাওয়া যায় দৃষ্টিনন্দন কারুকাজের মাটির ব্যাংক, ফুলদানি, হাঁড়ি, কলসি, জগ, গ্লাস, পানি ঠাণ্ডা রাখার পাত্র, পুতুল, খেলনা, দেবদেবী ও গহনা, শোপিস ইত্যাদি।

সিনেমা প্যালেস মোড়ে কাঠের তৈরি আসবাবপত্রের বিপুল পসরা। বেতের তৈরি চমৎকার সব আসবাব, দোলনা, শোপিস পাওয়া যাচ্ছে এখনও। মেয়েদের রেশমি চুড়ি, কাচের চুড়ি, পায়েল, কানের দুল নিয়ে বেশ কয়েকজনকে দেখা গেল বিক্রি করতে।  

সেইসঙ্গে স্টল গুটিয়ে গেলেও বটি, ছুরি, শীতলপাটি থেকে শুরু করে নানা গৃহস্থালির পণ্য সমাহারেরও দেখা মিলবে। দর কষাকষি চলেও মেলা শেষ হয়ে যাওয়ায় আগের চেয়ে কিছুটা কম দামে পাওয়া যাচ্ছে এসব পণ্য।  

বলী খেলা মানে কুস্তি প্রতিযোগিতা। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কুস্তিকে বলী খেলা নামে ডাকা হয়। ১৯০৯ সালে প্রথম এই প্রতিযোগিতার প্রবর্তন করেন চট্টগ্রামের জমিদার আব্দুল জব্বার সওদাগর।  

সে সময় ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন চলছিলো। তরুণ প্রজন্মকে শারীরিকভাবে সমর্থ করার ধারণা থেকে এই প্রতিযোগিতা প্রথম চালু করেন জব্বার সওদাগর।

জব্বারের বলী খেলা ও মেলার জন্য সারাবছর অপেক্ষা করে চট্টগ্রামবাসী। যেখানে জড়িয়ে আছে তাদের শত বছরের আবেগ আর ইতিহাস।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
এসএস/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।