চট্টগ্রাম: নগরের সদরঘাট থানার পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকায় মিথ্যা রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা প্রচার করে স্থানীয় একটি পরিবারের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা দিয়েও তাদের হয়রানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ওেই পরিবার।
রোববার (২০ অক্টোবর) সকালে নগরের লাভলেইন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মাদারবাড়ি মহল্লা সমাজ পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুর উর রহমান।
যাদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ তারা হলেন, একই এলাকার প্রতিবেশী মো. রাশেদ, মো. ফরিদ, মো. মারুফ ও মো. মাসুদ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাহবুবুর উর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আমি সদরঘাট থানার পূর্ব মাদারবাড়ি এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা। মাঝিরঘাট রোডের ২১১ নম্বর বাড়িতে আমরা পাঁচ ভাই বসবাস করি। বর্তমানে ব্যবসায়ই আমার পেশা। এর পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু হঠাৎ করে আমাদের প্রতিবেশী মো. রাশেদ, মো. ফরিদ, মো, মারুফ ও মো. মাসুদ দীর্ঘদিন থেকে আমাদের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকি ও লাঞ্ছিত করে আসছে।
এমনকি হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, তাদের নানাবিধ অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে প্রতিকারের আশায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের শরণাপন্ন হয়েছি। সদরঘাট থানায় জিডি করেছি। শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশায় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় আমার বাড়ির পিছনের অংশে থাকা সিসি ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। পরে রাতে ১০ থেকে ১২ জন অজ্ঞাত লোকজন নিয়ে আমার পেছনের অংশে থাকা জায়গা দেয়াল তুলে দখলে নেয়। তাদের অব্যাহত হুমকির কারণে আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
মাহবুবুর উর রহমান বলেন, বাড়ির প্রবেশ পথে তারা হামলা করার জন্য পাহাড়ায় থাকে। পরে সেনাবাহিনীর টহল টিমের সহযোগিতায় আমি বাড়িতে আসি। সেনাবাহিনীর অভিযোগ কেন্দ্রে অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু উল্টো ১৪ আগস্ট আমাদের বিরুদ্ধে তারা দেওয়ানী মামলা (নম্বর ১৩৫/২৪) দায়ের করে। তারা জায়গা রেজিস্ট্রি করে না। দিলে এখন মেরে ফেলার বলে হুমকি দেয়। পরে ৯ অক্টোবর তার উপর হামলা করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, মো. ফরিদ ও মো. রাশেদের নেতৃত্বে ১৫/২০ জন লোক আমাকে ঘেরাও করে। মো. ফরিদ আমাকে দেখে তারা মোবাইল ভিডিও অন করে উত্তেজিতভাবে চিৎকার করে বলে 'তুই আওয়ামী করস'। তুই গণহত্যাকারী, তুই ৪ তারিখ নিউমার্কেট এলাকায় ছাত্রজনতার মিছিলে গুলি চালাইছস, তোরে এখন গণপিটুনি দেবো। বলতে বলতে মো. ফরিদ আমাকে থাপ্পর, ঘুষি ও বুকে লাথি মারতে থাকে। একইভাবে মো. রাশেদ তাকে ঘুষি ও লাথি মারতে থাকে।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী মাহবুবুর রহমান তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারসহ দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্য প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে মাহবুব রহমানের স্ত্রী মেহেরুন্নেসা, বড় ভাই আব্দুল মতিন, হাবিবুর রহমান, মাদারবাড়ি মহল্লা সমাজ পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক মো. মর্তুজা, মহল্লার সদস্য বাদশা মিয়া, হাজী নুরুল ইসলাম ও জুনায়েদ রহমান শান্ত উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২০, ২০২৪
এমআই/পিডি/টিসি