ঢাকা, বুধবার, ২ বৈশাখ ১৪৩২, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

মূল বিউতে পাচন রান্না, কেনা হচ্ছে নাড়ু-আটকড়ই 

নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৫
মূল বিউতে পাচন রান্না, কেনা হচ্ছে নাড়ু-আটকড়ই  ...

চট্টগ্রাম: চৈত্রের শেষ দিন পাচন রান্নার নিয়ম থাকায় নগরের কাঁচাবাজারে কয়েকদিন ধরে বিক্রি হয়েছে হরেক রকম শাক-সবজি। আর বছরের প্রথম দিন খাওয়া হয় খই-নাড়ু-আটকড়ই।

তাই দোকানিরা বিক্রি করছেন এসব খাবারও। পাশাপাশি নববর্ষে ঘর সাজানোর উপকরণ নিমপাতা আর হারগেজি (বিউ) ফুল বিক্রি করেছেন বিক্রেতারা।

পঞ্জিকা মতে, রোববার (১৩ এপ্রিল) ফুল বিউতে (বিষুব সংক্রান্তি) সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বিউফুলের মালা গেঁথে নিমপাতাসহ ঘরের দরজার ওপরে টাঙিয়ে দেন। রোগবালাইনাশক ও চর্মরোগের জন্য উপকারী নিমপাতা তারা সংগ্রহে রাখেন দীর্ঘদিন।

এছাড়া গ্রামাঞ্চলে পানিতে গোবর মিশিয়ে উঠোনে ছিটিয়ে দেয়া হয়, ভাঁটফুল দিয়ে সাজানো হয় দরজা-জানালা। এসময়ে তিনদিন ভোর ও সন্ধ্যায় (পহেলা বৈশাখের ভোরবেলা পর্যন্ত) বুনো লতাগুল্ম পুড়িয়ে তার ধোঁয়া শরীরে লাগানো হয়। একে বলা হয় ‘জাগ দেয়া’।

সোমবার (১৪ এপ্রিল) মূল বিউতে রান্না করা হয় পাচন। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এই পাচনকে বলা হয় ‘আডোরা’। ১৮টি মতান্তরে ১০৮টি সবজি দিয়ে তৈরি হয় এই খাবার। একসময় শুধু হিন্দু পরিবারগুলোতে পাচন রান্নার চল থাকলেও বর্তমানে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও রান্না করেন ঔষধি গুণসম্পন্ন বিশেষ এই তরকারি।

এসব সবজির মধ্যে রয়েছে- কাট্টইস, তারা, ডুমুর, কাঞ্জল (কলাগাছের ভেতরের কাণ্ড), সজনে ডাটা, ছোট বেগুন, কলার মোচা, কাঁচা কাঠাল, কাঁচা পেপে, কাঁচা কলা, কুমড়া, পটল, করলা, চালকুমড়া, গিমা, আলু, লাউ প্রভৃতি।

নগরের হাজারী লেইন, রিয়াজউদ্দিন বাজার, কাজীর দেউড়ি কাঁচাবাজার, বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার, কর্ণফুলী মার্কেট, সিরাজদৌল্লা সড়ক, আসকার দিঘী সড়ক, বকশিরহাট, চকবাজার সহ অলি-গলিতে ভ্যান গাড়িতে এসব পাচনের উপকরণ বিক্রি করা হয়। বিভিন্ন রকমের সবজি একসঙ্গে কেজিপ্রতি ৫৫-৬৫ টাকায় মিলেছে। বিক্রেতারা জানান, চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে গ্রামাঞ্চল থেকে সংগ্রহ করে আনা হয় পাচনের এসব উপকরণ।

এদিকে বক্সিরহাট এলাকায় পাইকারি খই-নাড়ু-আটকড়ইয়ের দোকানেও চলছে বেচাকেনা। মুড়ির সঙ্গে শিমের বিচি, মিষ্টি কুমড়োর বিচি, বাদাম, ভুট্টা, বুট, ডাল ভাজা, তিল মিশিয়ে তৈরী হয় আটকড়ই। খইয়ের গুঁড়ো, নারকেল, বড়ই দিয়ে বানানো হয় ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের নাড়ু। প্রতি প্যাকেট নাড়ু বিক্রি হচ্ছে ৬৫-৭০ টাকায়। খই কেজি ৩শ’ টাকা আর আটকড়ই কেজি ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলবে পূজা ও হালখাতা মহরৎ। বাংলা বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী সোমবার (১৪ এপ্রিল) অনেক স্থানে আয়োজন করা হয় হালখাতা মহরতের অনুষ্ঠান, চলে মিষ্টিমুখ করানোর চেষ্টা।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০২৫
এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।