চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ একটি শান্তিপ্রিয় উন্নয়নশীল দেশ। ‘সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’- বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হলেও দেশের স্বাধীনতা, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো ধরনের আপস করা হবে না বলে জানিয়েছেন বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান।
বুধবার (২৮ মে) সকালে চট্টগ্রামের ভাটিয়ারি বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ৮৮তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় নবীন কর্মকর্তাদের দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় নিয়োজিত থাকার পাশাপাশি প্রশিক্ষণে জোর দেওয়ার আহ্বান জানান বিমানবাহিনী প্রধান।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান কাজ হচ্ছে নন-ট্র্যাডিশনাল থ্রেটসহ সব বাহ্যিক ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় হুমকি থেকে দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা। তারই অংশ হিসেবে সেনাবাহিনী একের পর এক বিভিন্ন দায়িত্ব ও প্রকল্প সফল করার মাধ্যমে আজ দেশের একটি বিশ্বস্ত সংস্থায় পরিণত হয়েছে। বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিনির্ভর যুদ্ধ, দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিজেদের সর্বদা প্রস্তুত রাখবে হবে’।
পেশাদার, শৃঙ্খলাবদ্ধ ও আধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত বাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত নতুন অফিসাররা দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করবেন বলে আশা করেন বিমানবাহিনী প্রধান।
বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজের মাধ্যমে কমিশন প্রদান করা হয় নবীন অফিসারদের। এতে কমিশন পাওয়া ক্যাডেট ছাড়াও অংশ নেন বিমানবাহিনী প্রধান এবং অন্যান্য অফিসাররা।
৮৮তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সে এবার ১৫৫ জন অফিসার কমিশন লাভ করেন। কমিশনপ্রাপ্তদের মধ্যে ১২৮ জন পুরুষ, ২৩ জন নারী ও ৪ জন ফিলিস্তিনি অফিসার রয়েছেন।
ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার সম্রাট জাবির, ৮৮তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের সেরা চৌকস ক্যাডেট হিসেবে ‘সোর্ড অব অনার’ এবং সামরিক বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্বের জন্য কোম্পানি সিনিয়র অফিসার মো. আব্দুল ওয়াদুদ মাসুম ‘সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক’ অর্জন করেন। বিদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে ফিলিস্তিনের অফিসার ক্যাডেট সার্জেন্ট মোহাম্মদ ইসবে ‘বিএমএ ট্রফি অফ এক্সিলেন্স’ লাভ করেন। পরে প্রশিক্ষণ সমাপনকারী ক্যাডেটরা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ করেন। এরপর অনুষ্ঠানে আগত অতিথি এবং প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী ক্যাডেটদের পিতা-মাতা ও অভিভাবকরা নবীন অফিসারদের র্যাঙ্ক-ব্যাজ পরিয়ে দেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি বিএমএ প্যারেড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছালে ভারপ্রাপ্ত জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড, জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম এরিয়া এবং বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির কমান্ড্যান্ট তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। অনুষ্ঠানে দেশি-বিদেশি উচ্চপদস্থ সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তা, সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের পিতা-মাতা ও অভিভাবকরা উপস্থিত থেকে বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন।
এসি/টিসি