চট্টগ্রাম: শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কার পার্কিং ও টিপসের নামে যাত্রী হয়রানি কমেছে। তথ্য সহায়তা কেন্দ্র, ফ্রি ওয়াইফাই জোন বর্ধিতকরণ, ফ্রি টেলিফোন বুথ, অসুস্থ যাত্রীদের কল্যাণে ইমার্জেন্সি অ্যাম্বুল্যান্স সার্ভিস চালু, পুরুষ ও নারীদের জন্য পৃথক নামাজ কক্ষের মানোন্নয়ন, ব্রেস্টফিডিং কর্নার চালু, মিট অ্যান্ড গ্রিট সার্ভিস, হেল্প ডেস্কের মানোন্নয়ন এবং অনলাইন রেন্ট এ কার সার্ভিস চালু হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) বিমানবন্দরে প্রত্যাশী আয়োজিত এক সেমিনারে এসব বিষয় উঠে আসে।
শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীবান্ধব নানান তথ্য উপস্থাপন করেন জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন শেখ আব্দুল্লাহ আলমগীর বলেন, বিমানবন্দরে অভিবাসীদের সহায়ক পরিবেশ নিশ্চিতে আমি যোগদানের পর বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। প্রত্যাশীর মতো প্রতিষ্ঠানের মাঠ পর্যায়ে তথ্যবহুল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রবাসী শ্রমিকদের তথ্য ঘাটতি কিছুটা লাঘব হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
প্রত্যাশী জেলা পর্যায়ে প্রবাসীদের নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করলেও বিমানবন্দরে প্রত্যাশীর সরাসরি কার্যক্রম এখনো পর্যন্ত নেই। তাই আমার অনুরোধ থাকবে প্রত্যাশী যেন ব্র্যাক, শামসুল হক ফাউন্ডেশনের মতো বিমানবন্দরে তার সহায়তা কার্যক্রম প্রসারিত করার মাধ্যমে প্রবাসী যাত্রীদের কল্যাণে আরও অগ্রগামী হতে পারে। সেটা হতে পারে তথ্যনির্ভর সেবা, খাবার/লজিস্টিক সহায়তা সংক্রান্ত, বিদেশফেরত প্রবাসীর লাশ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত। যেহেতু চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের প্রায় ৭৭ শতাংশ যাত্রী মধ্যপ্রাচ্যগামী প্রবাসী শ্রমিক। সেহেতু আমি সব অংশীজনকে আহবান জানাচ্ছি- আমরা যেন একটি একীভূত ও সমন্বিত কাঠামোতে কাজ করি, যেখানে অভিবাসীর সম্মান, নিরাপত্তা ও কল্যাণকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রত্যাশীর প্রধান নির্বাহী মনোয়ারা বেগম বলেন, গত ৪০ বছর প্রত্যাশী প্রবাসীদের নানান অসুবিধা, চ্যালেঞ্জ নিয়ে কাজ করে আসছে। হেলভিটাস বাংলাদেশের অর্থায়নে প্রত্যাশী তার Strengthening & Informative Migration Systems (SIMS) Project phase-2 এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ১২টি উপজেলার ৬৮টি ইউনিয়নে বিদেশে অবস্থানরত ও বিদেশফেরত প্রবাসীদের নিরাপদ অভিবাসন ও তাদের পরিবারের মানোন্নয়নে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রত্যাশী চারটি ধাপে এসব সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বিমানবন্দরে কর্তৃপক্ষ যেহেতু আমাদের আহবান জানাচ্ছেন সেহেতু আমরা অবশ্যই প্রবাসীদের কল্যাণে বিমানবন্দরে সরাসরি কাজ করতে আগ্রহী এবং পরিচালক মহোদয়ের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে যে খাতগুলোতে আমাদের কাজ করা প্রয়োজন প্রত্যাশী নিশ্চিতভাবে তাতে অংশ নেবে।
জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক মহেন্দ্র চাকমা বলেন, বাংলাদেশের যে অঞ্চলগুলো থেকে বেশি মানুষ বিদেশে যান তার মধ্যে চট্টগ্রাম অন্যতম। যে জেলাগুলোর প্রবাসী আয় সবচেয়ে বেশি তার মধ্যেও আছে চট্টগ্রাম। তবে এখনো দেখা যায় লোকজন জেনে বুঝে দক্ষ হয়ে বিদেশে যান না। দক্ষ হয়ে তথ্য জেনে বিদেশে গেলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। আর বিদেশফেরতদের কল্যাণে আমরা-প্রত্যাশীসহ সরকারি বেসরকারি সংস্থা সবাই মিলে একসাথে কাজ করছি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনী টাস্কফোর্সের প্রধান উইং কমান্ডার শামসুন নীহার, বিমানবন্দরের স্টেশন এয়ার ট্রাফিক অফিসার সাধন কুমার মহন্ত, বিমানবন্দরে ডিজিএফআইয়ের প্রধান স্কোয়ান্ড্রন লিডার তারিক আজিজ মৃধা, বিমানবন্দরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. এরফানুল হক চৌধুরী, হেলভিটাস বাংলাদেশের প্রতিনিধি প্রেমাংশু শেখর সরকার।
এআর/পিডি/টিসি