চট্টগ্রাম: শারদীয় দুর্গোৎসবের মহাঅষ্টমী ও কুমারী পূজা আজ। হিন্দু শাস্ত্র মতে মহাঅষ্টমী তিথি শুরু হয় বাংলার ১৩ আশ্বিন ও ইংরেজির ৩০ সেপ্টেম্বর (মঙ্গলবার) সকাল ৬টা ৭ মিনিটে।
এদিন সকাল ৭টার মধ্যে মহাষ্টমীর বিহিত পূজা ও সকাল ৮টা ২৯ মিনিট থেকে ৯টা ২৮ মিনিটের মধ্যে মহাষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। এরপর মহাষ্টমীর কল্পারম্ভ পঞ্চম কল্পের পূজা ও তারপরে মহাষ্টমীর ষষ্ঠ কল্পের পূজা শুরু হয়।
এদিকে অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি ও প্রসাদ বিতরণ শেষে বেলা ১০টায় কুমারী পূজা ও দুপুর ১টা ২১ মিনিট থেকে ২টা ৯ মিনিটের মধ্যে সন্ধিপূজার মধ্য দিয়ে শেষ হবে মহা অষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা।
অষ্টমীতে নগরের পাথরঘাটায় শ্রীশ্রী রাধাগোবিন্দ ও শান্তনেশ্বরী মাতৃমন্দিরে প্রতিবছরের মতো এবারও অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা।
কুমারী পূজার জন্য মাতৃভাবের পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে এবছর কুমারী মায়ের আসনে বসানো হয়েছে ৬ জন কুমারীকে। এবারে কুমারী হিসেবের ৬ষ্ঠ বর্ষীয় রাধেশ্রী দত্ত বৃন্দা উমা নামে, ১১ বর্ষীয় সুভদ্রা বিশ্বাস (প্রতীক্ষা) রুদ্রাণী নামে, ৯ম বর্ষীয় আদ্রিজা বিশ্বাস ও ৯ম বর্ষীয় নিভৃত দত্ত কালসন্দর্ভা, ৮ম বর্ষীয় প্রীত ধর কুজ্জ্বিকা নামে, ৭ম বর্ষীয় বৃন্দা দাশ মালিণী নামে পূজিত হন।
শাস্ত্রমতে উমা নামে কুমারী পূজিত হলে ফললাভ ও শত্রুবিনাশ হয়, মালিণী নামে পূজিত হলে ধনৈশ্চয়, কুজ্জ্বিকা নামে পূজা করলে শত্রুদের মোহিত, কালসন্দর্ভ নামে পূজিত হলে দ্রারিদ্র ও শত্রু বিনাশ হয়।
সকাল সাড়ে ১০টায় মাতৃরূপে ফুল, চন্দন, বেলপাতা, তুলশী পাতা দিয়ে শুরু হয় পূজা আর্চনা। পূজা কার্যক্রম পরিচালনা করেন শান্তন্বেশ্বরী মাতৃমন্দিরের পুরোহিত শ্রীমৎ শ্যামানন্দ দাস মোহন্ত মহারাজ।
পরে মন্দিরের পুরোহিত শ্রীমৎ শ্যামল সাধু মোহন্ত মহারাজ সাংবাদিকদের বলেন, কুমারী আদ্যাশক্তি মহামায়ার প্রতীক। কুমারীরা শুদ্ধতার প্রতীক হওয়ায় মাতৃরূপে ঈশ্বরের আরাধনার জন্য কুমারী কন্যাকে নির্বাচিত করা হয়। মূলত নারীর যথাযথ মর্যাদায় অধিষ্টিত করতে কুমারী পূজা করা হয়। মাটির প্রতিমায় যে দেবীর পূজা করা হয়, তারই বাস্তবরূপ কুমারী পূজা। কুমারীতে সমগ্রজাতির শ্রেষ্ঠ শক্তি, পবিত্রতা, সৃজনী ও পালনী শক্তিসহ সকল কল্যানী শক্তি সুক্ষরূপে বিরাজিতা। দুর্গা পূজায় কুমারী পূজা হলো অশুভ, অন্যায়, পাপ পঙ্কিলতার বিরুদ্ধে ন্যায়, পূর্ণ, সত্য ও সুন্দরের যুদ্ধ।
এরআগে মা দুর্গার বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের শারদীয় দুর্গোৎসব। নবপত্রিকা প্রবেশ ও স্থাপন, ষোলো উপাদান আর ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে গতকাল রোববার সকালে অনুষ্ঠিত হয় দুর্গোৎসবের মহাসপ্তমী।
এবছর চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রধান পূজামণ্ডপ জেএম সেন হলসহ ১৬টি থানায় ব্যক্তিগত, ঘটপূজাসহ ২৯২টি পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন হচ্ছে। এছাড়া চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলায় মোট মোট পূজামন্ডপের সংখ্যা ২ হাজার ২০২টি। এর মধ্যে প্রতিমা পূজামন্ডপের সংখ্যা এক হাজার ৫৮৫টি এবং ঘট পূজার সংখ্যা ৬১৭টি।
এমআর/টিসি