ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দেশে পৌঁছুলো ‘সমুদ্রজয়’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩
দেশে পৌঁছুলো ‘সমুদ্রজয়’ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে যুক্ত হয়েছে অত্যাধুনিক যুদ্ধ জাহাজ ‘সমুদ্র জয়’। শুক্রবার সকাল ১০টায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে চট্টগ্রাম নৌ জেটিতে এসে পৌঁছায় জাহাজটি।

এসময় অভ্যর্থনা জানান বাংলাদেশ নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব।

সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনাসহ নৌবাহিনীর উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা।

জাহাজটি জেটিতে পৌছানোর পর পরিদর্শন করেন নৌবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা।

পরিদর্শন শেষে ড্যান ডব্লিউ মজিনা বলেন, বাংলাদেশের বর্ধমান অর্থনীতি বাংলাদেশের উপকূলবর্তী সমুদ্রপথের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক পণ্যের নিরাপদ পরিবহনের ওপর নির্ভরশীল। আর এর নিরাপত্তা দেওয়া নৌবাহিনীর কাজ। এ জাহাজটির মাধ্যমে এদেশের সমুদ্রসীমা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার রাখতে পারবে নৌবাহিনী।

তিনি বলে, সমুদ্র সীমার সম্পদগুলো রক্ষার জন্য দেশের সামর্থ্য গড়ে তুলতে আমেরিকা বাংলাদেশের নির্ভরশীল অংশীদার। এ জাহাজের মাধ্যমে সমুদ্র সীমায় অপহরণকারী, ডাকাত, জলদস্যূ, পাচারকারী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আরো বেশি প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারবে। এছাড়া গভীর সমুদ্রের খনিজ সম্পদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে পারবে তারা।

নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব বলেন, দেশের ইতিহাসে এটি সর্ববৃহৎ যুদ্ধ জাহাজ। এর আগে এত বড় আর কোন যুদ্ধ জাহাজ বাংলাদেশে ছিল না। দেশের সমুদ্রসীমা বেড়ে যাওয়ায় যুদ্ধজাহাজের প্রয়োজনীয়তা এখন অনেক বেশি। আমরা বাংলাদেশের সমান সমুদ্র সীমা পেয়েছি।

বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা রক্ষা, চোরাচালান রোধ, মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ ও দুর্যোগকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলাসহ জাতীয় প্রতিরক্ষায় যুদ্ধজাহাজটি মুখ্য ভূমিকা পালন করবে। আগামী বছরের মধ্যে আরো কয়েকটি ফ্রিগেট ও করবেট যুক্ত হবে। এছাড়া আগামী দশ বছরের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গতায় পৌছাবে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে মামলা প্রসঙ্গে নৌবাহিনী প্রধান বলেন, আন্তর্জাতিক সালিশি আদালতে বিচারাধীন মামলা আগামী বছরের মাঝামাঝিতে ফায়সালা হবে। আশা করছি রায় আমাদের পক্ষে আসবে। ইতোমধ্যে যেসব তথ্য উপাত্ত দিয়েছি তা খতিয়ে দেখতে আদালতের একটি দল বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। আমরা সবগুলো তথ্যই খুবই স্পেসিফিক ও সুস্পষ্টভাবে দিয়েছি। কোন মিথ্যা তথ্য নেই। আশা করছি রায় আমাদের পক্ষেই আসবে।  

গত ২৩ মে বাংলাদেশের কাছে আধুনিক নৌযান ‘কাটার জার্ভিস’ হস্তান্তর করেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাহাজটি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের পর মায়ানমারের কাছ থেকে সমুদ্র জয়ের প্রেক্ষাপটে এ নৌযানের নতুন নাম দেওয়া হয়েছে বিএনএস ‘সমুদ্র জয়’।

এক্সেস ডিফেন্স আর্টিকেলসের (ইডিএ) আওতায় বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সামরিক কেনাকাটার (এফএমএস) আওতায় এ নৌযান হস্তান্তর করা হয়েছে।

নৌবাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কাটার জার্ভিস জলসীমায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সেনা অভিযান এবং উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত একটি উন্নত প্রযুক্তির যান। এ নৌযানে আধুনিক ক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজ বিধ্বংসী একটি ৭৫-৭৬ এমএম মেশিনগান, দুটি ২৫ এমএম মেশিনগান, হেলিকপ্টার উড্ডয়নের ডেক ও ডেক অপসারণ উপযোগী হ্যাঙ্গার রয়েছে। জাহাজটিতে ডলফিন, ব্ল্যাক হক ও সি হক শ্রেণীর হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারবে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে গ্যাস টারবাইন দ্বারা পরিচালিত এটি প্রথম কোন জাহাজ।

৩ হাজার ৩১৩টনের এই জাহাজটি দুটি ডিজেল ইঞ্জিন এবং দুটি গ্যাস টারবাইন দ্বারা ঘণ্টায় ২৯ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।