চট্টগ্রাম: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নির্বাচনকালীন সরকারের পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ নিজের নির্বাচনী এলাকায় এক অনুষ্ঠানে এসে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেই বক্তব্য রাখলেন।
তিনি বললেন,‘অনেকে বলছেন প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য প্রহসনের নির্বাচন করছেন।
সোমবার দুপুরে হাটহাজারীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিস এভাবেই বক্তব্য রাখছিলেন।
হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে পার্বতী উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন,‘বিরোধী দল ছাড়া নির্বাচন সুন্দর হয় না। আমরাও চাই না যে বিরোধীদল ছাড়া নির্বাচন হোক। কিন্তু কেউ না এলে তার জন্য নির্বাচনী ট্রেন বসে থাকবে না। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটই তাদেরকে ছাড়া নির্বাচন করতে সরকারকে বাধ্য করছে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ’
তত্ত্ববধায়ক প্রসঙ্গে তিনি বলেন,‘তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা মহাজোট সরকার বাদ দেয়নি। এটি আদালতের আদেশ, সরকার শুধু তা বাস্তবায়ন করছে। মানুষ মেরে, পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে আন্দোলন করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। মানুষ মেরে আন্দোলন করা সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বহিঃপ্রকাশ। ’
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে ব্যারিস্টার আনিস বলেন,‘আদালতের রায় যদি আপনাদের পক্ষে যেত তখন আপনারাই বলতেন সংবিধানে যা আছে সে অনুযায়ী করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবিধান প্রণেতা নন। তিনি শুধু তা রক্ষা করার কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। ’
বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেন,‘সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। ফলাফল যা আসে তা আমরা মেনে নেবো। ’
সর্বদলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে কারচুপির অজুহাত প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার আনিস বলেন,‘ অনেকে নির্বাচন নিয়ে কারচুপির অভিযোগ তুলছেন। কিন্তু এখানে কারচুপি করার কোন সুযোগ নেই। এ সরকারের আমলে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনসহ কয়েক সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হয়েছে। কারচুপি হলে এসব নির্বাচনের ফল অন্যরকম হতো। ’
হরতাল নৈরাজ্য করে সংবিধান সংশোধন কিংবা নির্বাচন বন্ধ করা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জামায়াত-শিবিরসহ সহিংসতা সৃষ্টিকারীদের হুঁশিয়ার করে পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিস বলেন,‘আন্দোলনের নামে ভবিষ্যতে আর কোন সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য করতে দেওয়া হবে না। এসব কর্মকাণ্ড করলে প্রশাসন কঠোর হাতে দমন করবে। ’
এধরনের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে জনগণের সার্বিক সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান পান্নার সভাপতিত্বে এবং শিক্ষক নেতা শিমুল মহাজনের পরিচালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আলম, হাটহাজারী প্রেসক্লাব সভাপতি কেশব কুমার বড়ুয়া প্রমুখ।
আলোচনা শেষে প্রধান অতিথি মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সন্তানদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনকালীন সরকারের পানি সম্পদমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেয়ার পর প্রথমবার তার নিজ নির্বাচনী এলাকা হাটহাজারীতে আসেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর ও স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট