চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাৎ হোসেনের গাড়ি পোড়ানোর মামলায় বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন নিজ দলের সক্রিয় ছয় নেতাকর্মী। তাদের বিরুদ্ধে ওই মামলায় ইতোমধ্যে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশ।
অভিযোগপত্রে যে ছয়জনের নাম আছে তারা হলেন, নগর যুবদলের সাবেক সভাপতি আবুল হাশেম বক্করের অনুসারী যুবদল নেতা আমিনউল্লাহ, নগর ছাত্রদলের সাবেক সদস্য, উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড ছাত্রদলের আহ্বায়ক সিরাজউদ্দিন, খুলশী থানা ছাত্রদল নেতা নূর হোসেন উজ্জ্বল ও সাইফুল আলম এবং খুলশী থানা যুবদলের দুই কর্মী রবিউল হোসেন বাবলু ও দেলোয়ার হোসেন দেলু।
গত ১৫ আগস্ট নগরীর নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এসে নগর ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পড়েছিলেন ডা.শাহাদাৎ হোসেন।
এ ঘটনায় ২৫ আগস্ট ডা.শাহাদাৎ হোসেনের গাড়িচালক আমির হোসেন বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য ও দণ্ডবিধির ১৪৩, ৪৩৬, ৩২৩ ও ৫০৬ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার তদন্ত শেষে গত ১৫ ডিসেম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার উপ-পরিদর্শক (এস আই) নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া বিস্ফোরক আইনে একটি এবং দণ্ডবিধির ধারায় একটিসহ দু’টি মামলায় পৃথক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দু’টি অভিযোগপত্রে ছয়জনকে আসামী ও ১০ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
এস আই নাজিম উদ্দিন ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, মামলার এজাহারে যে ছয়জনের নাম ছিল দু’টি অভিযোগপত্রেও পৃথকভাবে তাদেরকেই আসামী করা হয়েছে। এজাহারে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা উল্লেখ থাকলেও তদন্তে তাদের বিষয়ে কোন তথ্য পাইনি। আর মামলার বাদি এবং শাহাদাৎ সাহেবও এ বিষয়ে আমাদের কোন সহযোগিতা করেননি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ১৫ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র দাখিলের পর ১৭ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) মামলার ধার্য তারিখে সেটি শুনানির জন্য চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু অবরোধের কারণে পলাতক আসামীরা হাজির না হওয়ায় আদালত ২২ ডিসেম্বর অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার শুনানির সময় নির্ধারণ করেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (প্রসিকিউশন) মুহাম্মদ রেজাউল মাসুদ বাংলানিউজকে বলেন, অভিযোগপত্রে ছয় আসামী পলাতক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য নির্ধারিত শুনানির দিনে তাদের আত্মসমর্পণের কথা ছিল। কিন্তু অবরোধের কারণে তাদের আইনজীবী সময় প্রার্থনা করেন।
তিনি জানান, ২২ ডিসেম্বর অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানির পর সেটি মহানগর হাকিমের আদালতে বিচারের জন্য প্রস্তুত করা হবে। এরপর জজ আদালতে পাঠানো হলে বিচার শুরু হবে।
এদিকে সাধারণ সম্পাদকের নির্দেশে দায়ের হওয়া মামলায় দলের সক্রিয় ছয় কর্মীর বিচারের মুখোমুখি হতে যাওয়ার ঘটনাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না নগর বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে নগর বিএনপিতে জোরালো সমালোচনা চলছে।
নগর বিএনপির এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, যে ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ পত্র দাখিল হয়েছে, তারা সবাই গত পাঁচ বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রামে সামনের কাতারে আছে। মামলা, হামলাসহ সরকারের বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনে তারা এমনিতেই বিপর্যস্ত। এ অবস্থায় দলের অভিভাবকের মামলায় যদি তাদের আদালতে দৌঁড়াতে হয় সেটা হবে দু:খজনক। এটি দলের তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের হতাশ করবে এবং আন্দোলনে প্রভাব ফেলবে।
এসব বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা.শাহাদাৎ হোসেনের মোবাইলে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৭,২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।