ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দিল ক্ষুব্ধ জনতা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০১৩
পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দিল ক্ষুব্ধ জনতা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা। এসময় তারা বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কুশপুতুলও দাহ করেন।



বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ‘জেগে ওঠো বাংলাদেশ’ একটি সংগঠন প্রতিবাদী নাগরিক সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে চট্টগ্রামের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বিশিষ্ট নাগরিক ও তরুণদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও যোগ দিতে দেখা গেছে।


সমাবেশে শেষে নাগরিকরা একটি মিছিল নিয়ে প্রেসক্লাব থেকে চেরাগির মোড় পর্যন্ত এলাকা প্রদক্ষিণ করে। সেখানে গিয়ে তারা পাকিস্তানের পতাকায় আগুন দেয় ও কুশপুতুল দাহ করে। এসময় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শ্লোগানে মুখর হয়ে উঠে পুরো এলাকা।

এর আগে সমাবেশে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক অবস্থানের নিন্দা জানিয়ে বক্তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের দাবি। এ দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে পাকিস্তান প্রমাণ করেছে তারা একাত্তরের অবস্থান থেকে একচুলও সরেনি। একাত্তরের পরাজয়ে পাকিস্তানের শিক্ষা হয়নি।

তারা বলেন, কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা, যুদ্ধাপরাধীর বিচার করা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আমাদের কাজে হস্তক্ষেপ করার ধৃষ্টতা পাকিস্তান কিভাবে পেল ? পাকিস্তান কুটনৈতিক শিষ্টাচারের সকল সীমা লঙ্ঘণ করেছে। পাকিস্তানকে আর ছাড় দেয়ার কোন সুযোগ নেই।

বক্তারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবিলম্বে পাকিস্তানের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করুন। পাকিস্তানকে বলুন, তাদের মন্তব্যের জন্য ক্ষম‍া চাইতে। কাদের মোল্লার ফাঁসি নিয়ে তাদের সকল মন্তব্য প্রত্যাহার করতে। অন্যথায় বাংলাদেশে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে বহিস্কার করুন। এদেশে পাকিস্তানের দূতাবাস বন্ধ করে দিন।

বক্তারা পাকিস্তান সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আমরা আপনাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, এটা একাত্তর সাল নয়। একাত্তরে যখন আপনাদের পরাজিত করেছিলাম, তখন এদেশে জনগণ ছিল মাত্র সাড়ে সাত কোটি। এখন বাংলাদেশে ১৬ কোটি জনগণ। বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলার সময় সাবধান থাকবেন।

সাংবাদিক হাসান ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিবি’র কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য মো.শাহআলম, মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি অঞ্জন সেন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির চট্টগ্রামের সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু হানিফ, শ্রমিক নেতা তপন দত্ত, উদীচী’র কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ডা.চন্দন দাশ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী দেলেয়ার মজুমদার, গণজাগরণ মঞ্চ চট্টগ্রামের সমন্বয়কারী শরীফ চৌহান, প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি রাশেদ হাসান, উদীচী চট্টগ্রাম জেলা সংসদের সাধারণ সম্পাদক সুনীল ধর, নারীনেত্রী রেখা চৌধুরী ও জেসমিন সুলতানা পারু, টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বাসদ নেতা মহিম উদ্দিন, যুব মৈত্রীর চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক কায়সার আলম, সংস্কৃতি কর্মী লুবনা হারুন, ছাত্র ইউনিয়নের জেলা সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাংবাদিক অনিন্দ্য টিটো প্রমুখ।

সমাবেশে পূর্বাঞ্চলীর সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের উপদেষ্টা মৃণাল চৌধুরী, খেলাঘর সংগঠক নসরু কামাল খান, দেবাশীষ রায়, মোরশেদ আলম ও প্রদ্যোৎ বড়ুয়া, চবি শিক্ষক মাসুম আহমেদ, সাবেক ছাত্রনেতা জয়নাল আবেদিন, জনউদ্যোগের শ্যামল মজুমদার, সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী তরুণ উদ্যোগের যুগ্ম আহ্বায়ক শ্যামল ধর ও প্রিন্স রুবেল, সদস্য সালমা জাহান মিলি, চারুশিল্পী বিশ্বজিৎ তলাপাত্র, সিইউজে’র নির্বাহী সদস্য স্বরূপ ভট্টাচার্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮,২০১৩

সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।