ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পুলিশ পাহারায় পণ্য পরিবহন: অবরোধেও ডেলিভারি স্বাভাবিক

মো.মহিউদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৩
পুলিশ পাহারায় পণ্য পরিবহন: অবরোধেও ডেলিভারি স্বাভাবিক

চট্টগ্রাম: অবরোধের দ্বিতীয় দিন বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রায় ১ হাজার ৫০০ টিউস পণ্য ডেলিভারি হয়েছে। যা স্বাভাবিক সময়ের প্রায় সমান।

শুক্রবার অবরোধ না থাকায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই সারি সারি ট্রাক- কাভার্ড ভ্যান পণ্য ডেলিভারি নিতে অপেক্ষা করছে। বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন এদিন আরো কয়েকগুন বেশি পণ্য ডেলিভারি হবে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন জানা গেছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজদারিতে মহাসড়কে নাশকতা করতে না পারা, পুলিশ পাহারায় পণ্যবাহী গাড়ি পৌছে দেয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে গত তিনদিনের অবরোধে পণ্য ডেলিভারি স্বাভাবিক ছিল।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, অবরোধের প্রথমদিন চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১ হাজার ১৮৯ টিউস ডেলিভারি হয়েছে। তার আগের দিন পণ্য ডেলিভারি হয়েছিল ১ হাজার ৫৯৫ টিউস।

নগরীর পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিজুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য পরিবহনে পুলিশের সহায়তা চাইছে তাদের পণ্য পুলিশ পাহারায় পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

তিনি জানান, বন্দর থেকে বের হওয়ার পর পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান আমরা রিসিভ করছি। পুলিশ পাহারায় আমরা আকবর শাহ থানায় হস্তান্তর করি। তারা সীতাকুণ্ড থানাকে হস্তান্তর করে। এভাবে সীতাকুণ্ড থেকে মিরসরাই, ফেনী হয়ে প্রত্যেক থানা পুলিশের সহায়তায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে।

তবে পুলিশি পাহারায় পণ্য পরিবহনের সুযোগ থাকলে অতিরিক্ত পরিবহন ভাড়ার কারণে সেই সুবিধা সব ব্যবসায়ী নিতে পারছেন না।  

ব্যবসায়ীরা জানান, হরতাল-অবরোধে গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, মহাসড়কে ডাকাতির কারণে পণ্য পরিবহনে ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ভাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। ভাড়া পেলেও তা কয়েকগুণ বেশি। ফলে এ সুবিধা সবাই নিতে পারছে না।

সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী সাইদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশি পাহারায় পণ্য পরিবহনের সুযোগ থাকলেও অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।

অবরোধে তিনি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পণ্য পরিবণের জন্য ১৫ হাজার টাকা ভাড়ার গাড়ি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করছেন বলে জানান।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব সৈয়দ ফরহাদ উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে দৈনিক দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৮০০ টিউস পণ্য ডেলিভারি হয়। গত তিনদিনের অবরোধে গড়ে ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টিউস পণ্য ডেলিভারি হয়েছে।

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার চট্টগ্রাম বন্দরে ২৭ হাজার ৫৬৫ টিউস কন্টেইনার ছিল। এরমধ্যে ২১ হাজার ১০০ আমদানি এবং ১ হাজার ১৬৩ টিউস রপ্তানি পণ্যের কন্টেইনার।

হরতাল-অবরোধে গাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ, মহাসড়কে ডাকাতির কারণে গাড়ি চালানো বন্ধ করে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকরা। ফলে পণ্য পরিবহনে চরম সংকটে পড়েন ব্যবসায়ীরা।

পরিবহন সংকটের কারণে বন্দর থেকে পণ্য খালাস নিতে না পারায় একদিকে অতিরিক্ত মাশুল গুনতে হয়। অন্যদিকে নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য পৌছাতে না পারলে কারখানা বন্ধের আশঙ্কায় দিশেহারা হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীরা।

এই পরিস্থিতিতে আর্থিক সংকট কাটাতে মহাসড়কে পুলিশি পাহারায় পণ্য পরিবহনের সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন।

বাংলাদেশ সময়:২০২০ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০১৩

সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।