ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ মে ২০২৪, ০১ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে থার্টি ফার্স্টেও নাশকতার শংকা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৩
চট্টগ্রামে থার্টি ফার্স্টেও নাশকতার শংকা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম(ফাইল ফটো)

চট্টগ্রাম: খ্রীস্টিয় বছরের শেষ দিন থার্টি ফার্স্ট নাইট পালনকে কেন্দ্র করে বন্দরনগরীতে উৎসবের আড়ালে নাশকতার আশংকা করছে পুলিশ। নগরীর বিভিন্ন ‍রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতেও যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তথ্য আছে পুলিশের কাছে।



ফলে অন্যান্যবার পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতসহ বিনোদন স্পটগুলোকে ঘিরে বাড়তি কড়াকড়ি থাকলেও এবার নাশকতার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হচ্ছে পুলিশকে।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) মাসুদ-উল-হাসান বাংলানিউজকে বলেন, আগে থার্টি ফার্স্টে উৎসবের নামে উচ্ছৃঙ্খলতা ঠেকানোর দিকে আমাদের বেশি নজর রাখতে হত।
কিন্তু এখন দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে থার্টি ফাস্র্টের উৎসবের নামে যে কেউ যে কোন ধরনের নাশকতা ঘটাতে পারে বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে আমরা তথ্য পেয়েছি। কেউ রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলাও করতে পারে। এজন্য নাশকতাকে বিবেচনায় নিয়েই আমরা নিরাপত্তা পরিকল্পনা করেছি।

সংশ্লিষ্ট সূ্ত্রে জানা গেছে, বিরোধীদলের অবরোধ, গণতন্ত্রের অভিযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচীকে ঘিরে নগরীর বিভিন্ন স্পটে প্রায় এক হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন আছে। থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেল থেকে আরও প্রায় এক হাজার অতিরিক্ত পুলিশ মাঠে নামবে।

র‌্যাব সদস্য থাকবে প্রায় সাড়ে তিন’শ। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশের কমপক্ষে ৮টি ভ্রাম্যমাণ টহল টিমও থাকবে।

নগরীর কমপক্ষে ৬০ স্পটে বিকেল থেকে তল্লাশি শুরু হবে। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সকাল থেকেই চেকপোস্ট থাকবে। মোটর সাইকেল আরোহীদের বিশেষ নজরদারির আওতায় রাখা হবে।

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (সদর) মাসুদ-উল-হাসান বাংলানিউজকে বলেন, অবরোধের কারণে পুলিশের অতিরিক্ত ফোর্স নগরীতে মোতায়েন আছে। আরও ফোর্স নামানো হবে। যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।

এদিকে নগরীর পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, নেভাল একাডেমি, সিআরবি, ডিসি হিল, ফয়’স লেক, তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু এলাকাকে ঘিরেও বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনা আছে পুলিশের।

নগরীর সব কফি হাউজ, হোটেল-রেস্টুরেণ্ট এবং অনুমোদিত বারগুলোকে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে হোটেল-রেস্টুরেণ্ট এবং কফি হাউজগুলোর মালিককে বিকেল ৫টার পর তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে থেকে নেভাল একাডেমি এলাকার সব দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) মোস্তাক আহমেদ বৈঠক করেছেন। তাদের বিকেল ৫টা থেকে সব দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সমুদ্রসৈকত, নেভাল একাডেমিসহ আশপাশের এলাকার নিরাপত্তায় আড়াই’শ পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে নগরীর সিমেণ্ট ক্রসিং থেকে নেভাল একাডেমি হয়ে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত এলাকায় যানবাহন চলাচলের উপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। গণপরিবহন সিমেণ্ট ক্রসিং থেকে সরাসরি সৈকতের দিকে কাটগড় পর্যন্ত যেতে পারবে। আর বিমানবন্দরের দিকে মুসলিমাবাদ স্কুল পর্যন্ত যেতে পারবে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) মোস্তাক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, গণপরিবহন ছাড়া অন্য কোন যানবাহন পতেঙ্গা যেতে পারবেনা। শুধুমাত্র বিমানের যাত্রী বহনকারী গাড়িগুলো বিমানবন্দরে যাওয়া-আসা করতে পারবে।

পুলিশ সূত্র জানায়, নগরীতে বর্তমানে ৪৬টি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আছে। এর মধ্যে অধিকাংশ স্থাপনাই আছে বন্দর থেকে পতেঙ্গা এলাকায়। থার্টি ফার্স্ট নাইটে এসব স্থাপনায় নাশকতার আশংকায় তাদের নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পুলিশের টহল টিমও এসব স্থাপনাকে ঘিরে সার্বক্ষণিক টহল দেবে।

নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) মোস্তাক আহমেদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক অস্থিতিশীলতার প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে তো এমনিতেই নিরাত্তা জোরদার আছে। থার্টি ফার্স্ট নাইটে স্থাপনার সামনে এবং আশপাশের এলাকায় টহল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।