চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরে দায়িত্বরত নিরাপত্তা পরিদর্শকের উপর হামলার ঘটনায় আটক ছাত্রলীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
নগরীর বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) জাহিদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, নিরাপত্তা কর্মকর্তার উপর হামলার জন্য লিখিতভাবে ক্ষমা চেয়েছে।
বিকেলে বন্দর নিরাপত্তা পরিচালকের কার্যালয়ে অবস্থান করে দেখা গেছে, মোরশেদকে আটকের পর তড়িঘড়ি করে বন্দরের সিবিএ নেতারা সেখানে যান।
মোরশেদকে ছাড়াতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ নেতারাও বিভিন্নভাবে তদবির করেন।
ওসি জানান, মোরশেদকে নিরাপত্তা বিভাগ থেকেই ছেড়ে দেয়া হয়েছে। থানায় নেয়া হয়নি।
রোববার বিকেলে রাফি নামে চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগের এক কর্মচারী পরিচয় পত্র না দেখিয়ে বন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় বন্দরের নিরাপত্তা পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান বাধা দিলে তাকে হুমকিধমকি দেয় ওই কর্মচারী।
বন্দরের নিরাপত্তা পরিদর্শক এর প্রতিবাদ জানালে ফোন করে ছাত্রলীগ নেতা মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদকে বিষয়টি জানায় রাফি। এর কিছুক্ষণ পরে মোরশেদ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী নিয়ে কার্যালয়ে কর্মরত অবস্থায় মাহবুবুর রহমানের উপর হামলা চালায়। এসময় বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা হামলায় নেতৃত্বদানকারী ছাত্রলীগ নেতা মোরশেদকে আটক করেন।
মোরশেদকে আটকের পর চট্টগ্রাম বন্দরের পরিচালক (নিরাপত্তা) লে.কর্ণেল মোয়াজ্জেম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, বন্দরের নিরাপত্তা কর্মকর্তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় মেজবাহ উদ্দিন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। তাকে থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
জানা গেছে, মেজবাহ উদ্দিন মোরশেদ নগর ছাত্রলীগের বিদায়ী কমিটির নির্বাহী সদস্য ছিলেন। বর্তমান কমিটিতে তিনি সভাপতি পদপ্রত্যাশী ছিলেন। বয়সের কারণে পদ না পাওয়া এই নেতা পদবঞ্চিত হিসেবে বেশ কিছুদিন বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভেও নেতৃত্ব দেন। সম্প্রতি সার্কিট হাউসে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের একটি অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপে সংঘর্ষের ঘটনার মোরশেদ একপক্ষে নেতৃত্ব দেন বলে অভিযোগ আছে।
হামলার অভিযোগে আটক হওয়া ব্যক্তি ছাত্রলীগের কেউ নয় বলে জানিয়েছেন নগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নূরুল আজিম রনি। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, তিনি ছাত্রলীগের গত কমিটির সদস্য। তার কর্মকাণ্ডের দায়ভার কোনভাবেই বর্তমান কমিটির উপর বর্তায়না।
মোরশেদ ছাত্রলীগের নেতা নয় বলে নগর ছাত্রলীগ দাবি করলেও আটকের পর তাকে ছাড়িয়ে নিতে নিরাপত্তা পরিচালকের কার্যালয়ে আসেন স্থানীয় কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা। তার কিছুক্ষণ পর বন্দর সিবিএ সভাপতি মমতাজ উদ্দিনও পরিচালকের কার্যালয়ে যান।
এদিকে নিরাপত্তা কার্যালয়ে এসে কর্মকর্তার উপর হামলার ঘটনায় আটক ছাত্রলীগ নেতাকে ছেড়ে দেয়ায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
বাংলাদেশ সময়:২৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৪