ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

পটিয়ায় নির্বাচনের চারদিন পর মিলল দু’হাজার ব্যালট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৪
পটিয়ায় নির্বাচনের চারদিন পর মিলল দু’হাজার ব্যালট ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামের পটিয়ায় উপজেলা নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার চারদিন পর প্রায় দু’হাজার ব্যালট পাওয়া গেছে। তবে ব্যালটগুলোতে কোন সিল, স্বাক্ষর ছিলনা।



সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ব্যালট পেপারগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্ণিং অফিসার রোকেয়া পারভিনের কাছে জমা দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রামের পটিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শামীম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, একটি কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার ভুলে স্কুলের আলমিরায় ব্যালট পেপারগুলো রেখে এসেছিলেন।
স্কুল খোলার পর শিক্ষকরা সেগুলো দেখে ওই প্রিজাইডিং অফিসারকে ফোন করেন। এরপর পোলিং  অফিসার সেগুলো জমা দিতে আসার পর বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচার হয়ে পড়ে এবং এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। তবে তাদের কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিলনা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পটিয়ার কচুয়াই ইউনিয়নের আজিমপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আলমিরায় সোমবার সকালে ব্যালট পেপারগুলো পাওয়া গেছে। ওই স্কুল থেকে ফোন করা হয় উপজেলা নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকারী হুলাইন ছালেহ নূর ডিগ্রি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শফিউল আলমকে।

খবর পেয়ে শফিউল আলম সহকারী পোলিং অফিসার ও শ্রীমাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী খানকে ফোন দেন। তিনি ব্যালট পেপারগুলো ওই স্কুল থেকে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্ণিং অফিসার রোকেয়া পারভিনের কাছে জমা দেয়ার জন্য মোহাম্মদ আলীকে নির্দেশ দেন।

নির্দেশমত মোহাম্মদ আলী ব্যালট পেপারগুলো এনে উপজেলা পরিষদের সামনে হাশেম মার্কেটের নিচতলায় ফুলবন রেস্টুরেন্টে বসেন। এর মধ্যে খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তিমির বরণ চৌধুরী সেখানে যান। নির্বাচনের পর ব্যালট উদ্ধার নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে হুলস্থূল পড়ে যায়।

তিমির বরণ চৌধুরী বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, তাকে হারাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদের নির্দেশে প্রিজাইডিং অফিসার ব্যালট পেপারগুলো গোপনে সংরক্ষণ করেছিলেন। ব্যালট পেপারগুলো ফুলবন রেস্টুরেন্ট থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

তবে পোলিং অফিসার মোহাম্মদ আলী খান বাংলানিউজকে বলেন, আমি ব্যালট পেপারগুলো নিয়ে দোকানের সামনে প্রিজাইডিং অফিসারের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। আমি সেগুলো দোকানে রাখিনি। আর আমাদের কোন খারাপ উদ্দেশ্যও ছিলনা। কেন্দ্রে যাওয়ার পর সব ব্যালট পেপারই আলমিরাই রাখা হয়েছিল। যেগুলো অব্যবহৃত ছিল, সেগুলো নেয়ার কথা মনে ছিলনা।

পটিয়া সার্কেলের এএসপি শামীম হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনী কর্মকর্তারা একটি ভুল করেছিলেন। সেই ভুল ঢাকতে হয়ত তারা দোকানের ভেতরে ব্যালট পেপারগুলো রেখে তা আড়াল করার চেষ্টা করেছিলেন। আমরা সেগুলো ইউএনও’র কাছে জমা দেয়ার জন্য বলেছি।

মোহাম্মদ আলী খান জানান, ব্যালট পেপারগুলো ইউএনও‘র কাছে জমা দেয়া হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে বারবার ফোন করেও ইউএনও এবং সহকারী রিটার্ণিং অফিসার রোকেয়া পারভিনের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পটিয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে জয়ী হন বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মোজাফফর আহমেদ টিপু। প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত নাছির আহমেদ। তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী তিমির বরণ চৌধুরী।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad