ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ভোরের হাসি ডিসি হিলে

এসবি টুপসি, বিনোদন করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪
ভোরের হাসি ডিসি হিলে ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: ব্যায়ামের সবচেয়ে সহজ ও উত্তম উপায় হল হাঁটা। হাঁটাকে বলা হয় সকল রোগের মহৌষধ।

প্রতিদিন ৩০মিনিট হাঁটলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থাইটিস, স্থুলতা, ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি মেলে বলে মত চিকিৎসকদের। আর তা যদি হয় ভোরের স্নিগ্ধ বাতাসে তাহলে তো আর কথায় নেই।


চট্টগ্রাম নগরীতে এই মহৌষধী হাঁটাহাঁটির সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে ডিসি হিলে। ভোর হতেই এটি মুখরিত হয়ে ওঠে নানাবয়সী মানুষের পদচারণায়। ডিসি হিলের এক কিলোমিটার ওয়াকওয়েতে শহরের নানা প্রান্ত থেকে হাঁটতে আসেন নগরবাসী।

স্থুল স্বাস্থ্যের লোক ছাড়াও ডায়াবেটিস,প্যারালাইসিস রোগীসহ তরুণ-তরুণীদেরও হাঁটতে দেখা যায় এখানে। মা-বাবার সাথে শিশুরাও আসে খেলাধুলা করতে।

হাঁটতে আসা মানুষদের মধ্যে দেখা যায় বিভিন্ন রকম চিত্র। কেউ হাঁটছেন একা, কেউবা দল বেঁধে। অনেকে আবার কানে হেডফোন লাগিয়ে নিজের মত হাঁটেন অথবা দৌঁড়ান।

ডিসি হিলে পাঁচ বছর ধরে ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে সেবা দিয়ে আসছেন জুয়েল মিয়া নামের একজন সেলস অফিসার। প্রতিদিন ভোর ৬টায় আসেন, থাকেন সকাল ১০টা পর্যন্ত। ডায়াবেটিস পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরামর্শ দিয়ে নানা বয়সী মানুষের পরম যত্নে সেবা দিয়ে থাকেন।

এত বছর ধরে মানুষের সেবা করা একধরণের ভালবাসার কাজে পরিণত হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানান জুয়েল মিয়া।

কথা হয় ৬৫ বছর বয়সী রনজিত সেনের সঙ্গে। পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার পর ব্যবসায় থেকে অবসর নিয়েছেন। পায়ের জোর বাড়াতে রোজ সকালে ডিসি হিলে হাঁটতে আসেন তিনি।

বেশ কয়েক বছর ধরে ডিসি হিলে হাঁটতে আসেন শামসুন নাহার মিনু। চল্লিশোর্ধ এ নারী প্রতিদিন ভোরে এখানে হাঁটতে আসেন। তার সাথে আসেন নন্দনকানন এলাকার আরো অনেক নারী। হাঁটা শেষে পার্কের গোল বেঞ্চে বসে চলে তাদের আড্ডা। সংসারের যত দুশ্চিন্তা ও ঝামেলা ভুলে নিজেদের মত কিছুটা সময় কাটান সকালে হাঁটতে আসা নারীরা।

শামসুন নাহার মিনু বাংলানিউজকে বলেন, ‘কোন রোগ হওয়ার আগেই এখানে হাঁটা শুরু করেছি। তাই হয়ত এই বয়সে এখনও সুস্থ আছি। ’

তার কথার সাথে সুর মিলিয়ে কাজীর দেউড়ি এলাকার গৃহিণী কামরুন নাহার বলেন,‘হাঁটলে মন ভালো থাকে, সুস্থও থাকি। সকালের শুরুটা ভাল হয় বলে বাকি সময়টাও ভালো যায়। ’

মুরাদপুর থেকে আসা বাপ্পী দাশ, অমিতা ঘোষ, রাণী প্রজাপতিও স্বীকার করেন হাঁটলে বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।   তারা ডিসি হিলে না হাটঁলেও সবাইকে দেখে হাঁটার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ডিসি হিলে হাঁটতে আসা মানুষদের বেশ কিছু সংগঠন রয়েছে। এগুলো হল শতায়ূ অঙ্গন, উজ্জীবক, চিরঞ্জীব, দীর্ঘায়ূ সংসদ। প্রতিদিন সংগঠনগুলোর সদস্যরা ভোর সাড়ে ৬টায় নিয়ম করে হাঁটার পর এরা ব্যায়াম শুরু করে। ব্যায়াম শেষে অট্টহাসিতে ঘুমন্ত নগরীকে জাগিয়ে তোলেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।