ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চট্টগ্রামে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি, বোমায় আহত ১০

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪
চট্টগ্রামে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি, বোমায় আহত ১০ ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: নগরীর কোতয়ালি থানার অদূরে জিপিও’র সামনে শনিবার রাতে ফিল্মি স্টাইলে দু’টি স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি করেছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তারা দোকান লক্ষ্য করে দু’টি বোমাও নিক্ষেপ করেছে।



এর মধ্যে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়ে কমপেক্ষ ১০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়িতে কর্তব্যরত সদস্যদের সূত্রে জানা গেছে।


বোমার আঘাতে একটি দোকানের সামনের আয়না, মূল্যবান আসবাবপত্র, স্বর্ণালংকার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দোকানের সামনে রাখা একটি প্রাইভেট কারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

নগরীর আলকরণের প্রবেশমুখে হাজী দানু মিয়া সওদাগরের মালিকানাধীন অপরুপা জুয়েলার্স এবং জুয়েলারি সমিতির সহ সভাপতি রতন ধরের মালিকানাধীন গিণি গোল্ড জুয়েলার্সে এসব ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনাস্থলে থাকা নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ডাকাতির চেষ্টা হয়েছে বলে শুনেছি। তবে পুরো বিষয় তদন্ত করে দেখতে হবে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, মাইক্রোবাসযোগে একদল ডাকাত রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান দু’টির সামনে আসে। এসময় তারা সশস্ত্র অবস্থায় মাইক্রোবাস থেকে নেমে গিণি গোল্ড জুয়েলার্সে ঢোকার চেষ্টা করে। আরেক গ্রুপ অপরুপা জুয়েলার্সে ঢোকার চেষ্টা করে।

সেখানে ঢোকার এক পর্যায়ে বিকট শব্দে বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। পরপর দু’টি বোমা ছুঁড়লেও লাল টেপে মোড়ানো একটি বোমা গিণি গোল্ড জুয়েলার্সের সামনে অবিস্ফোরিত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, ডাকাতদল গিণি গোল্ড থেকে বেশকিছু স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে। অপরুপা জুয়েলার্সে গিয়ে তারা প্রতিরোধের মুখে পড়লে বোমার বিস্ফোরণ ঘটায়।

তবে প্রত্যক্ষদর্শী কেউ কেউ দাবি করেছেন, অপরুপা জুয়েলার্সেও ডাকাতি করে কিছু মালামাল নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।  

বোমা বিস্ফোরণের পর ডাকাতদল গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পালিয়ে যায় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।

বোমার আঘাতে গিণি গোল্ড জুয়েলার্স দোকানটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর অপরুপা জুয়েলার্সের সামনে রাখা তাদের প্রাইভেট কার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে বোমা বিস্ফোরণের পর পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কে জিপিও, নিউমার্কেট মোড়সহ আশপাশের এলাকা দিয়ে যানবাহন চলাচল কমে যায়।

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) বনজ কুমার মজুমদারের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে। অবিস্ফোরিত বোমাটি উদ্ধারের জন্য নগর গোয়েন্দা পুলিশের বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দলের একটি টিমও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে।

এদিকে বোমা বিস্ফোরণে আহত ১০ জনকে রাত পৌনে ৯টার দিকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে অপরুপা জুয়েলার্সের মালিক হাজী দানু মিয়ার ছেলে রফিকুল আলমও রয়েছেন। বাকিরা দু’টি স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী।

আহতরা হলেন, রফিকুল আলম (৩৪), রাজিব চৌধুরী (১৮), নিশান (১৮), সাব্বির (১৯), সত্যজিৎ (২৯), মনসুর (৩০), মোশাররফ (৩০), মনির (৩০), সৈয়দ (৪৫) ও মালেক (২০)।

চমেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ জহির উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এদিকে ঘটনার পর নগরীর পাহাড়তলী থানা এলাকা থেকে পিস্তলসহ এক যুবককে আটক করা হয়েছে। এসময় আরো পালিয়ে গেছে।

এছাড়া ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মাইক্রেবাসটি নগরীরর মাদারবাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (পশ্চিম) এস এম তানভির আরাফাত।

তিনি আরো জানান, ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের আটকে নগরজুড়ে তল্লাশি চলছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৩, ২০১৪/আপডেটেড ২২৫৬ ঘণ্টা

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।