ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ মে ২০২৪, ২৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দুই’শ কোটি টাকা পৌরকর উদ্ধারে মন্ত্রণালয়ে চসিক

আবদুল্লাহ আল মামুন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪
দুই’শ কোটি টাকা পৌরকর উদ্ধারে মন্ত্রণালয়ে চসিক

চট্টগ্রাম: সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বকেয়া প্রায় দুই’শ কোটি টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ের দ্বারস্ত হয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।

দফায় দফায় তাগাদা দেওয়ার পরও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বকেয়া পৌরকর পরিশোধ না করায় সিটি করপোরেশন মন্ত্রণালয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

 

সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আহমুদুল হক বাংলানিউজকে বলেন,‘বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বকেয়া কর আদায়ে ব্যর্থ হয়ে প্রায় ৩০টিরও অধিক মন্ত্রণালয়ে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিছু মন্ত্রণালয় থেকে চিঠির উত্তরও পাওয়া গেছে।
তারা তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বকেয়া আদায়ে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন বলে জানিয়েছেন। ’

করপোরেশন সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একহাজার ৬৫০টি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে করপোরেশনের পাওনা ১৯৫ কোটি ৯৫ লাখ ৭০ হাজার ৯০২ টাকা।   প্রায় দুই’শ কোটি টাকার বকেয়া কর আদায়ে ব্যর্থ হয়ে এ বছরের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে স্ব স্ব মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে চসিক।

চসিক থেকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের আয়ের মূল উৎস পৌরকর। করপোরেশনের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সিংহভাগ অর্থই পৌরকর থেকে নির্বাহ করা হয়। বর্তমানে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সরকারি এবং স্থানীয় সংস্থার নিকট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিপুল অংকের বকেয়াসহ হাল পৌরকর অনাদায়ী হয়ে পড়েছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের পাওনা টাকা উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, চসিকের কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে কর আদায়ে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ার কারণে সংশ্লিষ্ট সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের নিকট পাওনা বকেয়া পৌরকর পরিশোধ করতে পারছে না মর্মে জানান। বর্ণিত প্রেক্ষাপটে চসিকের বকেয়া ও হাল পৌরকর পরিশোধের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আপনাকে অনুরোধ করা হল।

কর খেলাপি শীর্ষ সরকারি প্রতিষ্ঠান

সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে কর খেলাপিতে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(সিডিএ), স্টিল মিল ও চট্টগ্রাম ক্রীড়া সংস্থা।

বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে বকেয়া কর ৬৯ কোটি ২০ লাখ ৯৯ হাজার ৬৫৬ টাকা। এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহা-ব্যবস্থাপক মোজ্জাম্মেল হক বাংলানিউজকে বলেন,‘কত টাকা বকেয়া এটা আমার জানা নেই। বিষয়টি দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

সিডিএ’র কাছে বকেয়া কর ১০ কোটি ৯৮ লাখ ৭৩ হাজার ২৫৬ টাকা। দীর্ঘদিন ধরে কর আদায় করছে না এ প্রতিষ্ঠানটি।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুস ছালাম বাংলানিউজকে বলেন,‘সিটি কর্পোরেশন সিডিএ’র কাছে টাকা পাবে এটা সত্য। সরকারি বিধি অনুযায়ী ২ শতাংশ কর কর্পোরেশনের কাছে সিডিএও পাবে। আমি বলেছিলাম কার কাছ থেকে কত পাবে এটা বসে সমাধান করার জন্য। এ নিয়ে একটা বৈঠক হয়েছিল।

পরবর্তীতে আর কোনো আলোচনা না হওয়ায় বিষয়টি ঝুলে আছে। ’

এছাড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া স্টিল মিলের কাছে চসিকের বকেয়া কর ৭ কোটি ৮৭ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকা। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছ থেকে পাওনা ১ কোটি ৭৯ লাখ ২৩ হাজার ১৭৫ টাকা।
 
বাংলাদেশ সময়: ২৩০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।