চট্টগ্রাম: জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে পাশের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে।
গত বছর এ শিক্ষাবোর্ডে পাশের হার ৮৬ দশমিক ১৩ হলেও ১ দশমিক ৮৪ শতাংশ কমে এবার পাশের হার দাড়িয়েছে ৮৪ দশমিক ২৯ শতাংশে।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় শিক্ষাবোর্ডের সম্মেলন কক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. পিযূষ দত্ত। সামগ্রিক ফলাফল বিচারে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন তিনি।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বলেন, গত বছরের চেয়ে পাশের হার এবার কিছুটা কমেছে। তবে সামগ্রিক ফলাফলে আমরা সন্তষ্ট।
পীষূষ দত্ত জানান, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১ হাজার ১২২টি স্কুল থেকে ১৯৯ কেন্দ্রে ১ লাখ ৫০ হাজার ৬১৭ জন জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। ১ লাখ ২৬ হাজার ৯৫৩জন শিক্ষার্থী পাশ করেছে। এরমধ্যে ৫৮ হাজার ৭১২ জন ছাত্র এবং ৬৮ হাজার ২৪১জন ছাত্রী।
জেএসসি পরীক্ষায় এবার পাশের দিক থেকে ছেলেরা এগিয়ে থাকলেও মেয়েরা পিছিয়ে। ছেলেদের পাশের হার ৮৬ দশমিক ১৬ ও মেয়ে পাশের হার ৮২ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
তবে জিপিএ-৫ পাওয়ার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে মেয়েরা। জিপিএ ৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রীর সংখ্যা ৫ হাজার ৬৮৬ জন এবং ছাত্রের সংখ্যা ৪ হাজার ৮০১ জন। এছাড়া সেরা তিন বিদ্যালয়ের মধ্যে দুটিই বালিকা বিদ্যালয়।
এবার শতভাগ পাশ এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ১৪৬। গতবার এ সংখ্যা ছিল ১০৫। গত বারের মতো এবারও পাশের হার শূণ্য এমন কোন বিদ্যালয় নেই।
মঙ্গলবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে আনুষ্ঠানিকভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. পীযুষ দত্ত। এসময় বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক সুমন বড়ুয়া, উপ-সচিব মাহবুব হাসান, বিদ্যালয় পরিদর্শক কাজী নাজিমুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
পিযূষ দত্ত জানান, জেএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম বছর (২০১০) চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে পাশের হার ছিল ৭০শতাংশ। তার পরের বছর কিছুটা বেড়ে ৭২ শতাংশ এবং ২০১২ সালে পাশের হার ৭৮ শতাংশ। তবে এবার কিছুটা কমেছে।
পাশের হার কিছুটা কমলেও জেএসসিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে বিদ্যালয়, কেন্দ্র ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, গত বছর ১ লাখ ৪০ হাজার ৫৮৯ জন পরীক্ষার্থী হলেও এবার বেড়ে ১ লাখ ৫২ হাজার ৬০৮জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। তার মানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষামুখি হচ্ছে।
চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার পাশাপাশি তিন পার্বত্য জেলায় পাশের হার কমেছে। এবার চট্টগ্রাম মহানগরীতে পাশের হার ৯০ দশমিক ৫৮। গতবার ছিল ৯১ দশমিক ৩৫।
চট্টগ্রাম জেলায় গতবার পাশের হার ৮৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ হলেও এবার তা কমে দাড়িয়েছে ৮২ দশমিক ৩৫ এ। মহানগর সহ চট্টগ্রাম জেলার পাশের হার ৮৪ দশমিক ৮৬। গতবার ছিল ৮৬ দশমিক ২৬।
কক্সবাজার জেলায় এবার পাশের হার ৮৬ দশমিক ২০ শতাংশ। গতবার এ হার ছিল ৮৮ দশমিক ১৮ শতাংশ।
তিন পার্বত্য জেলায় কমেছে পাশের হার:
ববাবর পিছিয়ে থাকা তিন পার্বত্য জেলায় গতবার পাশের হার বেড়েছিল। কিন্তু সে ধারাবাহিকতা রক্ষা হয়নি। তবে সবচেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বান্দরবান জেলা। গত বছর এ জেলায় পাশের হার ৮১ দশমিক ৫ শতাংশ থাকলেও এবার কমে ৭৪ দশমিক ৩৩ এ দাড়িয়েছে।
রাঙ্গামাটি জেলায় এবার পাশের হার ৮৩ দশমিক ৬ গতবার এ হার ছিল ৮৪ দশমিক ১ শতাংশ। খাগড়াছড়িতে এবার পাশের হার ৮০ দশমিক ২৯ গতবার ছিল ৮৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
তিন পার্বত্য জেলায় পাশের হার কমে যাওয়ায় পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড.পিযূষ দত্ত বলেন, তিন পার্বত্য জেলার কারণে সামগ্রিক ফলাফলে পিছিয়ে পড়ে চট্টগ্রাম বোর্ড। তবে এবার সবচেয়ে বেশি খারাপ করেছে বান্দরবান জেলা। ফলে এর প্রভাব সামগ্রিক ফলাফলে প্রভাব পড়েছে।
কমেছে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা:
গতবার জেএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছিল জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা। কিন্তু এক বছর পরই বড় ধরণের ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছে।
গত বছর ১৪ হাজার ১০৫ জন জিপিএ-৫ পেলেও এবার পেয়েছে ১০ হাজার ৪৮৭ জন। ২০১২ সালে তিন হাজার ৫৩১ জন, ২০১১ সালে ২ হাজার ১৯১ জন জিপিএ-৫ পেয়েছিল।
শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের জেএসসি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের ১৯৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে ১ লাখ ৪০ হাজার ৫৭৯ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ৬২ হাজার ৬৪৮। ছাত্রীর সংখ্যা ৭৭ হাজার ৯৩১ জন।
বাংলাদেশ সময়:১২৪৬ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৪