ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আইন মানছে না এসএএসএম

মো.মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬
আইন মানছে না এসএএসএম

চট্টগ্রাম: আইন লঙ্ঘন করে বিদেশ থেকে আনা স্ক্র্যাপ জাহাজ বিচিং (কাটা) করছে রড উ‍ৎপাদক সীতাকুণ্ডের শীতলপুর অটো স্টিল মিলের (এসএমএসএম) সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিকো স্টিল লিমিটেড।  

নিয়ম অনুযায়ী স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানির পর কাটার (বিচিং) জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হয়।

মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় তথ্যউপাত্ত দেখে আইন অনুযায়ী জাহাজ কাটার জন্য নৌবাহিনী ও নৌবাণিজ্য অধিদফতরকে সুপারিশ করে।
 
মন্ত্রণালয় থেকে আবেদনের ‍অনুলিপি নৌবাণিজ্য অধিদফতরের প্রিন্সিপাল অফিসারের কাছে পাঠানো হয়।
  এরপর আমদানিকারক নৌবাণিজ্য অধিদপ্তরকে জাহাজ পরিদর্শন করে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার আবেদন করবে।  

সূত্রমতে, শিল্প মন্ত্রণালয় ও নৌবাহিনীর সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে প্রিন্সিপাল অফিসারকে অবহিত করা হলেও আমদানিকারক চূড়ান্ত অনুমতি নিতে নৌবাণিজ্য অধিদফতরে আসছে না।   অর্থাৎ আইন না মেনেই জাহাজ কাটছে সিকো স্টিল লিমিটেড।

এ বিষয়ে নৌ-বাণিজ্য অধিদফরের প্রিন্সিপাল অফিসার প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, চূড়ান্ত অনুমতি না নিয়ে জাহাজ কাটা হচ্ছে। ‘দ্যা শিপ ব্রেকিং এন্ড রিসাইকেলিং রুলস-২০১১’ আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

তিনি বলেন, আমদানিকৃত জাহাজটি নিয়ম মেনে কেনা হয়েছে কিনা, সব ডকুমেন্ট ঠিক আছে আছে কিনা তা যাচাই বাছাই করে নৌ-বাণিজ্য অধিদফতর চূড়ান্ত অনুমতি দেবে।   কিন্ত সিকো স্টিল এখনো পর্যন্ত কোন আবেদন করেনি।

‘জাহাজের কাগজপত্র ঠিক থাকে না বলেই তারা আমাদের না জানিয়ে বিচিং করে। ’

মার্চেন্ট শিপিং অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর অনুচ্ছেদ ৬৬(২)(বি), ৬৭, ৬৯, ৯২, ৩০০(৩), ৩০৭, ৩০৯(বি), ৩১৯(৫), ৩২১, ৩৩৪(২), ৩৩৯(বি) অনুযায়ী নৌ বাণিজ্য অধিদফতর থেকে অনুমতি নিতে হবে। এছাড়া বিচিং এর আগে জাহাজটির লিয়েন, মর্টগেজ ও ব্যাংক গ্যারান্টি আছে কিনা তা নৌ বাণিজ্য অধিদফতর পরীক্ষা করবে। এর মধ্যে কোন একটি কাজ অসম্পন্ন থাকলে অনুমতি পাওয়া যায় না।

সূত্র জানায়, স্ক্র্যাপ জাহাজ কেনার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় নিয়ম মানা হয় না।   আর এজন্যই নৌবাণিজ্য অধিদফতরকে না জানিয়েই জাহাজ কাটা হয়।  

নৌবাণিজ্য অধিদফতরের অনুমতি পাওয়ার পর শিল্প মন্ত্রণালয়েও আবেদনের নিয়ম করা হলে সব প্রতিষ্ঠান আইন মানতে বাধ্য থাকবে বলে মনে করেন শফিকুল ইসলাম।

এদিকে নিয়ম না মেনে জাহাজ কাটার কারণে শিপ সিকো স্টিল লিমিটেডকে আইন মেনে জাহাজ কাটার জন্য চিঠি দিয়েছে নৌবাণিজ্য অধিদফতর। সেখানে বলা হয়, ‘আইন অনুযায়ী পরিবেশ অধিদফতর ও বিস্ফোরক অধিদফতরের প্রয়োজনীয় অনাপত্তি সনদ নিয়ে ‘দ্যা শিপ বিল্ডিং এন্ড শিপ রিসাইকেলিং বোর্ড’র সুপারিশসহ নৌবাণিজ্য অধিদফতরে পুনরায় সৈকতায়নের জন্য আবেদন করতে হবে।   নৌবাণিজ্য অধিদফর ‘পোর্ট অথরিটি’ হিসেবে মর্টগেজ ও লিয়েনের বিষয় যাচাই বাছাই করে সৈকতায়নের অনুমতি প্রদান করবে। ’

নিয়ম ভঙ্গ করলেও সে বিষয়ে বিশেষ অবগত নয় বলে জানিয়েছেন সিকো স্টিল লিমিটেড’র মালিক ও রড উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসএএসএম’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম উদ্দিন।

আইন ভেঙে জাহাজ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমরা আইন না মেনে জাহাজ কাটলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা না নিয়ে বসে আছে কেন।   আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেন। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৬
এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।