ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চালু হচ্ছে টঙ্গী-ভৈরব ডাবল লাইন, গতি বাড়বে ট্রেনের

মো.মহিউদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০১৬
চালু হচ্ছে টঙ্গী-ভৈরব ডাবল লাইন, গতি বাড়বে ট্রেনের ফাইল ফটো

চট্টগ্রাম: বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে চালু হচ্ছে বাংলাদেশ রেলওয়ের মেগা প্রকল্প টঙ্গী-ভৈরববাজার ডাবল লাইন। প্রকল্পটি চালু হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে যাত্রী ও মালবাহী ট্রেনের গন্তব্যে পৌঁছার সময় উল্লেখযোগ্য হারে কমে আসবে বলে আশা করছে রেলওয়ে।



রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সর্বোচ্চ ৭২ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচল করতে পারে। তবে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে চলাচল করতে হয়।
 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক সাগর কৃষ্ণ চক্রবর্তী বাংলানিউজকে বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে পরীক্ষামূলকভাবে টঙ্গী-ভৈরববাজার ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এ প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ৭২ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের অনুমতি থাকলেও বিভিন্ন প্রকল্পের কাজের জন্য মূলত সর্বোচ্চ গতিতে চলতে পারে না। টঙ্গী-ভৈরববাজার ডাবল লাইনে সর্বোচ্চ গতি ১০০ কিলোমিটার জানিয়ে তিনি বলেন, তবে এখন সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিবেগে ট্রেন চলাচল করবে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে কাজ শুরু হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। তবে গত দুই মাস আগে প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। এরপর নতুন ট্র্যাকে এ পর্যন্ত ৩১টি মালবাহী ট্রেন ও তিনটি যাত্রীবাহী ট্রেন ট্রায়াল রান হিসাবে চালানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে গত ২৬ ডিসেম্বর গভর্মেন্ট ইন্সপেক্টর অব বাংলাদেশ রেলওয়ের (জিআইবিআর) প্রতিনিধি দল প্রকল্পটি সরেজমিন পরিদর্শন করেন।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে চলতি বছরের শুরুতে চালু হওয়া লাকসাম-চিনকি আস্তানা ডাবল লাইনের ট্রায়াল রানের সময় নির্মাণগত ত্রুটি ধরা পড়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটির উদ্বোধনের সময় পিছিয়ে দেয় রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। এরপর ত্রুটি সারিয়ে জিআইবিআর প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর প্রকল্পটি চালু করা হয়।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, সিগন্যালিং সহ টঙ্গী থেকে ভৈরব পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন হয় ২০১১ সালের ২১ জুন। প্রকল্পের মোট ব্যয় দুই হাজার ৩৬৭ কোটি টাকার মধ্যে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের এক হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ৬২০ কোটি টাকা ব্যয় করছে। রেলের মেগা এ প্রকল্প বাস্তবায়নে ২০১১ সালের ২৭ জুলাই চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেডের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১১ সালের ২ নভেম্বর। ২০১৪ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পটির নির্মাণ কাজের ধীরগতিতে বাস্তবায়ন সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়। প্রকল্পের মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের সিআরএসসি। এ ছাড়া সাব-কন্ট্রাকটর হিসাবে কোরিয়ার এলএসআইএস এবং দেশি সংস্থা ম্যাক্স ও তমা কনসোর্টিয়াম যৌথভাবে কাজ করে।

প্রকল্পের অধীনে ১১টি নতুন স্টেশন বিল্ডিং ও দুইটি সিগন্যালিং ইকুইপমেন্ট ভবন, ৭১টি ব্রিজ-কালভার্ট, ১৩টি স্টেশন, ২৩টি প্ল্যাটফর্ম, ১১টি স্টেশনের সিগন্যালিং ব্যবস্থা আধুনিকায়ন, পাঁচটি লেভেল ক্রসিং এবং ১১টি পুরাতন লেভেল ক্রসিংয়ের উন্নয়ন করা হয়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, নতুন এ ডাবল লাইনটি চালু হলে সময় কমে আশার পাশাপাশি ঢাকা থেকে ভৈরব পর্যন্ত ক্রসিং ছাড়াই ট্রেন চলা করবে। ফলে চট্টগ্রাম-ঢাকা, ঢাকা-সিলেট ও কিশোরগঞ্জসহ কয়েকটি ট্রেনের যাত্রীরা অধিকতর কম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০১৫
এমইউ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।