চট্টগ্রাম: পৌষের সকালটা অন্যরকমই ছিল মোহাম্মদপুর স্কুলের প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীদের কাছে। সাতসকালে হলুদ গেঞ্জি পরে তরুণরা হাজির প্রিয় বিদ্যালয়ের আঙিনায়।
দেখতে দেখতে হাজারো মানুষের মিলনমেলা। কেউ অশীতিপর বৃদ্ধ, নাতির কাঁধে ভর দিয়ে এসেছেন।
১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত রাউজানের এ বিদ্যাপীঠের পুনর্মিলনী ও প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী পরিষদের রজতজয়ন্তীকে ঘিরে শনিবার ছিল আলোচনা, স্মৃতিচারণ-কথামালা, আজীবন সম্মাননা আর জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
সকাল নয়টায় র্যালির পর দুপুরে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা পর্ব। পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক নজিরুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রেল মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক পূর্বকোণের সম্পাদক স্থপতি তসলিম উদ্দিন চৌধুরী, রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, বায়েজিদ গ্রুপের পরিচালক আবু সায়েম চৌধুরী, সমাজসেবক ফরাজ করিম চৌধুরী প্রমুখ। প্রধান আলোচক ছিলেন কনট্রোলার জেনারেল অব্ অ্যাকাউন্টস মোহাম্মদ আবুল কাশেম।
প্রধান অতিথি জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বেলুন উড়িয়ে পুনর্মিলনী উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এর আগে তিনি প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী পরিষদের কার্যালয় ও শিশু-কিশোরদের জন্য একটি শিশুপার্কের উদ্বোধন করেন। পুনর্মিলনী উপলক্ষে অধ্যাপক কামরুল ইসলাম সেলিমের সম্পাদনায় আট শতাধিক প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীর ছবি, রেখা, লেখায় সমৃদ্ধ ‘সৈকতে ঐকতান’ নামের একটি সুদৃশ্য স্মরণিকা প্রকাশিত হয়। যার মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি।
দিলরুবা খানমের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম চৌধুরী বেবী, মুক্তিযোদ্ধা আবু মোহাম্মদ হাশেম, রাউজান পৌরসভার প্যানেল মেয়র বশির উদ্দিন খান, কাউন্সিলর কাজী মো. ইকবাল প্রমুখ।
স্বাগত বক্তব্য দেন পরিষদের সহসভাপতি মো. আলী। সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন শওকত হোসেন। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সহসভাপতি বিএম জসিম উদ্দিন হিরু, মুসলেহ উদ্দিন মুহাম্মদ বদরুল, অধ্যাপক মো. আবুল হাসান প্রমুখ।
মুসলেহ উদ্দিন মুহাম্মদ বদরুল মোহাম্মদপুর স্কুল প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী পরিষদের পক্ষ থেকে রাউজানের উন্নয়ন ও সন্ত্রাস দমনে অসামান্য অবদানের জন্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ‘রাউজানি’ উপাধি দেন। এ সময় মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে সবাই তার প্রস্তাবে সম্মতি জানান।
অনুষ্ঠানে নুরুল ইসলাম মাস্টার, ইলিয়াস চৌধুরী, গোলাম কাদের চৌধুরী, মো. এজাহারুল হক, আবু হেনা মোহাম্মদ আবদুল্লাহিল হাসান ও আমেনা বেগমকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। তাদের হাতে স্মারক তুলে দেন প্রধান অতিথি।
১৯৯২ ব্যাচের প্রাক্তন ছাত্র নিজাম উদ্দিন জানান, পুনর্মিলনীতে অংশ নিতে তিনি মধ্যপ্রাচ্য থেকে ছুটে এসেছেন। এ পুনর্মিলনীর ফলে পুরোনো বন্ধুদের, হারানো স্মৃতি খুঁজে পেয়েছেন। এর ফলে নবীন ও প্রবীণদের মধ্যে সেতুবন্ধন রচিত হয়েছে। যা আগামী দিনে বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও গরিব-মেধাবী শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পথ সুগম করবে।
বাংলাদেশ সময় : ২১৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৯, ২০১৬
এআর/টিসি