চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর বাসায় বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) আসছেন তার মরদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিন চিকিৎসক।
বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করে দিয়াজের মৃত্যুর ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডির চট্টগ্রাম জোনের এএসপি অহিদুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেলের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদসহ দিয়াজের ময়নাতদন্তকারী অপর দুই চিকিৎসক বুধবার আসছেন।
অহিদুর রহমান বলেন, এই দিন তারা সকাল ১০টায় দিয়াজের বাসায় যাবেন।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ নামানোর সময় যারা উপস্থিত থাকা ম্যাজিস্ট্রেট, হাটহাজারী থানার তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে তারা কথা বলবেন বলে মেডিকেল টিমের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ আমাকে জানিয়েছেন।
দিয়াজের বড় বোন অ্যাডভোকেট জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা বাংলানিউজকে বলেন, ‘ডা. সোহেল মাহমুদ ও দিয়াজের মামলার তদন্তে দায়িত্বে থাকা সিআইডির কর্মকর্তা অহিদুর রহমান ভাই মুঠোফোনে বিষয়টি আমাদের জানিয়েছেন। ’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার ভাই দিয়াজ হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। আমার ভাই আত্মহত্যা করার প্রশ্নই উঠেনা। তাকে হত্যা করা হয়েছে। সঠিক বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। ’
এদিকে দিয়াজের মরদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরপরই তদন্তের কাজ শুরু করে দিবেন বলে জানিয়েছেন মামলার দায়িত্বে থাকা সিআইডি চট্টগ্রাম জোনের এএসপি অহিদুর রহমান।
বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ‘‘দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই পুরোপুরি তদন্তের কাজ শুরু করে দিব। ’
গত ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দুই নম্বর গেট এলাকার নিজ বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওইদিন রাতে দিয়াজের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।
পরে ২৩ নভেম্বর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজের মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত কারণে বলে মত দেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা। তবে এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে আদালতে মামলা করেন দিয়াজের মা।
গত ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে'র আদালতে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।
আদালত সরাসরি মামলা গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য দিয়াজের মরদেহ কবর থেকে তোলার আদেশ দেন।
পরে ১০ ডিসেম্বর সিআইডি পুনঃময়নাতদন্তের জন্য ফের তোলা হয় দিয়াজের মরদেহ। সেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন শেষে চিকিৎসকরা দিয়াজের শরীরে আঘাতের চিহৃ পাওয়ার কথা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৬
জেইউ/টিসি