ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৬
‘আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন’ দিয়াজ ইরফান চৌধুরীকে নিয়ে তার মায়ের ফেসবুক স্ট্যাটাস

ছেলে দিয়াজ ইরফান চৌধুরী আত্মহত্যা করেছেন এমন কথা মানতে একেবারেই নারাজ মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। তাই এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন, ‘আমাকেও একটি মাত্র গিট দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেখিয়ে দিন, মোটা চাদর দিয়ে এভাবে গলা কাটে কিনা, সারাদেশের মানুষ দেখুক।’

চট্টগ্রাম: ছেলে দিয়াজ ইরফান চৌধুরী আত্মহত্যা করেছেন এমন কথা মানতে একেবারেই নারাজ মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। তাই এবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে লিখেছেন, ‘আমাকেও একটি মাত্র গিট দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেখিয়ে দিন, মোটা চাদর দিয়ে এভাবে গলা কাটে কিনা, সারাদেশের মানুষ দেখুক।

মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ৭টায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এই স্ট্যাটাসটি দেন অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করা ছাত্রলীগের এই কেন্দ্রীয় সহ সম্পাদকের মা। তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জননেত্রী শেখ হাসিনা হলে কর্মরত।

ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেন, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও চিকিৎসকদের অনুরোধ করছি, মোটা কাপড়ের বড় বিছানার চাদর দিয়ে কোনো পশু-প্রাণীকে একটি মাত্র গিট দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে ফাঁসি দিন। কোনো পশু-প্রাণী না পেলে দিয়াজের মা অর্থাৎ আমি প্রস্তুত আছি।  

এরপর তিনি লিখেন, একটি মাত্র গিট দিয়ে আমাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিন। সারাদেশের মানুষ দেখুক আত্মহত্যা কাকে বলে? সারা শরীরে এমনকি পায়েও এমন দাগ পাওয়া যায় কিনা? মোটা চাদর দিয়ে এভাবে গলা কাটে কিনা?

স্ট্যাটাসের সঙ্গে প্রিয় সন্তানের মরদেহের বেশ কিছু ছবিও জুড়ে দেন তিনি।  

এর আগে গত ২০ নভেম্বর রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দুই নম্বর গেট এলাকার নিজ বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। দিয়াজের মরদেহটি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে মোটা চাদর দিয়ে ঝুলানো ছিল।

এসময় তার মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন করা ম্যাজিস্ট্রেট তার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানান। ওইদিন রাতেই দিয়াজের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়।

পরে ২৩ নভেম্বর ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দিয়াজের মৃত্যু আত্মহত্যাজনিত কারণে বলে মত দেন চিকিৎসকরা। এই প্রতিবেদন প্রত্যাখান করে ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে'র আদালতে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন চৌধুরী বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতিসহ ১০ জনকে আসামি করা হয়।

আদালত সরাসরি মামলা গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। ৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য দিয়াজের মরদেহ কবর থেকে তোলার আদেশ দেন।

১০ ডিসেম্বর পুনঃময়নাতদন্তের জন্য ফের তোলা হয় দিয়াজের মরদেহ। সেই ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন শেষে চিকিৎসকরা দিয়াজের শরীরে আঘাতের চিহৃ পাওয়ার কথা জানান।

এদিকে দিয়াজের মরদেহের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তিন চিকিৎসক বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামে আসছেন। এদিন তারা সকাল ১০টায় দিয়াজের বাসায় যাবেন। দিয়াজের মরদেহ যেখান থেকে নামানো হয়েছে সেখানে প্রায় এক ঘণ্টা পরিদর্শন করবেন। ঘটনাস্থলের খাট ও ফ্যানের দুরত্বও নির্ণয় করে দেখবেন তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৬

টিএইচ/আইএসএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।