চট্টগ্রাম: এক দশকে চট্টগ্রাম জেলায় কর্মসংস্থান বেড়েছে ১৯৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ৩ লাখ ৮০ হাজার ৫৫০টি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে ১৯ লাখ ৬৮ হাজার ৮৬৮ জন।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে ২০১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী তৃতীয় অর্থনৈতিক শুমারির জেলা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. রুহুল আমীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. সামসুল আরেফিন এবং বিবিএসের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল কাদের মিয়া।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, রূপকল্প ২০২১ বাস্তবায়নে অর্থনৈতিক শুমারি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নিম্নমধ্যম আয়ের দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে অর্থনৈতিক শুমারির গুরুত্ব ও বিবিএসের সংশ্লিষ্টতা জরুরি। বিশ্বব্যাপী মানসম্মত সরকারি পরিসংখ্যান প্রণয়ন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) পরিবীক্ষণের জন্য গুণগতমানের পরিসংখ্যানের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। এ প্রেক্ষিতে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার সার্ভিসের কর্মকর্তার সংখ্যা বাড়ানো আবশ্যক। বিবিএসের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। কারণ পরিসংখ্যান সঠিক না হলে পরিকল্পনা সঠিক হবে না। এক্ষেত্রে সুষম উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, অর্থনীতিতে এক দশকে যে ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে তা-ই উঠে এসেছে অর্থনৈতিক শুমারির প্রতিবেদনে। এ পরিবর্তন ইতিবাচক। সরকারের পরিকল্পনা, লক্ষ্য ইত্যাদি অর্জনের জন্য সঠিক পরিসংখ্যানের বিকল্প নেই। তবে তিন বছর আগের যে জরিপ তা তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে যাতে হালনাগাদ করা যায় সেই ব্যবস্থা থাকতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক রাজধানী, দেশের সমস্ত আমদানি রপ্তানি বলতে গেলে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই হয়ে থাকে। দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি এ বন্দর, যা সম্প্রসারিত হচ্ছে। এখানে জাহাজ নির্মাণ, জাহাজ ভাঙাসহ অনেক ভারী শিল্পকারখানা আছে। বলতে গেলে অর্থনীতির কেন্দ্রবিন্দু চট্টগ্রাম। রয়েছে পর্যটনের বিপুল সম্ভাবনাও। তাই এ জনপদের সঠিক উন্নয়নের জন্য অর্থনৈতিক শুমারির চট্টগ্রাম জেলা প্রতিবেদনটির গুরুত্ব অপরিসীম।
বেলা ১১টা ৪০মিনিটে প্রতিবেদনের মোড়ক উন্মোচন করেন অতিথিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০১ সালে চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠান ছিল ১ লাখ ৯৪ হাজার ৯২২টি। কর্মরত ছিলেন ৭ লাখ ৪ হাজার ৩৫১ জন।
অর্থনৈতিক শুমারির জাতীয় ফলাফলে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে দেশে মোট প্রতিষ্ঠান ছিল ৭৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৬৫টি। ২০০১ ও ২০০৩ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত বৃদ্ধির হার প্রায় ১১০ দশমিক ৮৫ শতাংশ। সামগ্রিক অর্থনীতিতে গ্রামীণ অর্থনীতির ভূমিকা দিন দিন বাড়ছে। ২০০১ ও ২০০৩ সালের শুমারি অনুযায়ী সামগ্র্রিক অকৃষিমূলক অর্থনীতির মধ্যে পল্লি এলাকার অবদান ছিল ৬২ দশমিক ৬১ শতাংশ। যা ২০১৩ সালে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। প্রতিষ্ঠান প্রধান হিসেবে নারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে এবং সামগ্রিক কর্মসংস্থানে নারীর অংশগ্রহণ ব্যাপকতা পেয়েছে। অর্থনৈতিক খাতগুলোর মধ্যে সেবা খাতের প্রতিষ্ঠান বেশি। শিল্পের মধ্যে কুটির শিল্প শীর্ষ স্থানে রয়েছে। এরপর আছে ক্ষুদ্র শিল্প, মাইক্রো শিল্প, মাঝারি শিল্প এবং বৃহৎ শিল্প।
বিভাগীয় পরিসংখ্যান কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক মো. এমদাদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ। উপস্থাপনায় ছিলেন নাসরিন ইসলাম।
বাংলাদেশ সময়: ১২২১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬
এআর/আইএসএ/টিসি