সিআইডির চট্টগ্রাম জোনের সিনিয়র এএসপি হুমায়ুন কবির সরকার এখন থেকে দিয়াজ হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব পালন করবেন বলে বুধবার (৪ জানুয়ারি) বাংলানিউজকে জানিয়েছেন সিআইডির চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন।
গত ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শিবলু কুমার দে’র আদালতে বাদি হয়ে দিয়াজের মা জাহেদা আমিন একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আদালত সরাসরি মামলা গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের আদেশ দিয়ে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘দিয়াজ হত্যা মামলা তদন্তের দায়িত্বে থাকা এএসপি অহিদুর রহমান দুই মাস আগে গাইবান্ধায় সিআইডিতে বদলি হন। কাজের চাপ বেশি থাকায় তিনি তখন চট্টগ্রাম ছেড়ে যেতে পারেননি। কিন্তু গাইবান্ধায় জরুরি কাজ পড়ে যাওয়ায় তাকে এখন যেতে হচ্ছে। ’
দিয়াজের বড় বোন অ্যাডভোকেট জুবাঈদা ছরওয়ার চৌধুরী নিপা বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার ভাই (দিয়াজ) হত্যার সুষ্ঠু তদন্তকে বানচাল করতে ও মামলার তদন্ত কাজকে দীর্ঘায়িত করতে এই পরিবর্তন করা হয়েছে। ’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘মামলার দায়িত্বে থাকা অহিদ ভাই নিজের চোখে বিষয়টি দেখে তদন্ত করেছেন। তার এ বিষয়ে এই কয়েকদিনে অভিজ্ঞতাও হয়েছে। এখন নতুন করে আরেকজন দায়িত্বে আসল, বিষয়টা কেমন জানি হয়ে গেল। ’
তবে মামলার তদন্ত নিয়ে দিয়াজের পরিবারের শঙ্কা দেখালেও সিআইডির কর্মকর্তারা বলছেন, তদন্ত কাজে কোনো ত্রুটি হবে না। কারণ তদন্ত কাজ গভীরভাবে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ পর্যবেক্ষণ করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের কারণে তদন্তের গতি-প্রকৃতি কোনো কিছু পরিবর্তন হবে না। এই বিষয়গুলো খুব গভীরভাবে দেখা হয়। ’
দিয়াজ হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্বে থাকা সিআইডির চট্টগ্রাম জোনের এএসপি অহিদুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমাকে দুই মাস আগেই গাইবান্ধায় বদলি করা হয়। বর্তমানে যিনি দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি আমার তুলনায় অনেক বেশি অভিজ্ঞ। ’
এদিকে পুনঃময়নাতদন্তের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক দল পুনরায় চট্টগ্রাম সফর করবেন বলে জানা গেছে। সাক্ষাৎকার গ্রহণ বাকি থাকায় এবং ল্যাব ইনভেস্টিগেশনের রিপোর্ট না পাওয়ায় তারা এই সফর করার কথা জানিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. সোহলে মাহমুদ বুধবার (৪ জানুয়ারি) বিকেলে বাংলানিউজকে বলেন, ‘গত ১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় দিয়াজের বাসা পরিদর্শন করলেও আমাদের আরও কিছু কাজ বাকি রয়ে গেছে। আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এএসপি, হাটহাজারী থানার ওসির (তদন্ত) সাথে কথা বলতে পারিনি। তারা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিলেন। তাই তাদের সাথে কথা বলতে আমাদের পুনরায় চট্টগ্রাম যাওয়া হতে পারে। ’
তিনি বলেন, ‘যদি চট্টগ্রামে যেতে না পারি তাহলে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে তাদের সঙ্গে কথা বলে তথ্যগুলো নেওয়া হবে।
গত ২০ নভেম্বর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দুই নম্বর গেইট সংলগ্ন নিজ বাসা থেকে দিয়াজের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৭
জেইউ/আইএসএ/টিসি