দেখা হতেই একে অপরকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছেন। আবেগঘন মহামিলনে জানতে চেয়েছেন একে অপরের কাছে, ‘বন্ধু, কী খবর বল...’
এই সতীর্থদের সবাই এই উপমহাদেশের গ্রামাঞ্চলে উচ্চশিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত প্রথম প্রতিষ্ঠান বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়ায় স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
এই মহামিলনে শুধু সহপাঠীরাই এক হয়েছেন তা-ই নয়।
শনিবার (০৭ জানুয়ারি) সকালে হীরকজয়ন্তী উৎসবের উদ্বোধন করেন স্থানীয় সাংসদ মঈনউদ্দিন খান বাদল।
প্রাক্তন ছাত্র-ছাত্রী সমিতির কার্যকরী সভাপতি ব্যাংকার আবদুল মান্নান এতে সভাপতিত্ব করেন।
সমিতির সিনিয়র সদস্য দীপেন চৌধুরী, মো.আবদুল মোমিন ও মুস্তফা নঈমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ও উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আতাউল হক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী মাহবুবুল আলম, কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোদাচ্ছের আহাম্মদ, প্রাক্তন ছাত্রদের পক্ষে প্রফেসর ড.মো.দিদারুল আলম চৌধুরী, ড. হেলাল উদ্দিন, কলেজ ছাত্র সংসদের প্রথম ভিপি নুরুল আলম, সিরাজুল হক বাদশা, কামাল উদ্দিন, মুস্তফা কুদরত-ই ইলাহী রুমি, আবদুল কাদের সুজন, সাইফুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার নিরোদ বরন বড়ুয়া, অ্যাডভোকেট বদিউল আলম, আহমদ হোসেন, এস এম সেলিম এবং মোহাম্মদ ইউনুস।
দিনভর নানা আয়োজনের পর বিকেল থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের খ্যাতনামা শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
কানুনগোপাড়ায় স্বনামখ্যাত দত্ত পরিবারের সন্তান ও প্রাক্তন ডেপুটি ম্যাজিষ্ট্রেট রেবতী রমণ দত্ত কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
গ্রামাঞ্চলে দরিদ্র জনগণের মধ্যে উচ্চশিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়ায় তিনি ১৯৩৯ সালের ১৪ জুলাই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন।
তার শিক্ষাগুরু, অবিভক্ত ভারতের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের নামে কলেজটির নামকরণ করা হয়। কলেজের প্রথম অধ্যক্ষ ছিলেন মাখন লাল নাগ।
শুরু থেকেই কলেজটিতে ছিল ছাত্রাবাস। অনগ্রসর বৃহত্তর চট্টগ্রামের দূর-দূরান্তের বিভিন্ন উপজেলা থেকে এসে এই কলেজে পাঠ নিয়েছে অনেক তরুণ-যুবক, যাদের অনেকেই দেশের এখন স্বনামখ্যাত নাগরিক।
গ্রামাঞ্চলের এই কলেজটি দেশের স্বাধীনতা ও প্রগতিশীল আন্দোলনের সূতিকাগার হিসেবেও পরিচিত।
অবিভক্ত ভারতের দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের স্ত্রী এবং সর্বভারতীয় কংগ্রেস দলের সভাপতি নেলী সেনগুপ্তা কলেজটি পরিদর্শন করেছিলেন।
এছাড়া পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খান, বিজ্ঞানী ড.কুদরৎ-ই-খুদা, ড. কাজী মোতাহের হোসেন, কবি বেগম সুফিয়া কামাল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড. এ আর মল্লিক, পল্লীকবি জসিম উদ্দীনও বিভিন্ন সময় এই কলেজে এসেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১৬
আরডিজি/টিসি