এভাবেই সংসারের কথা জানালেন নোয়াখালী জেলার মাইজদী এলাকার বাসিন্দা মো.নিজাম উদ্দিনের দ্বিতীয় সন্তান মো.জুয়েল। ১৪ বছরের কিশোর জুয়েল জানালো চার বছর আগে চট্টগ্রাম আসে সে।
বড় ভাই মোহাম্মদ রিয়াজ একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। জুলেয় ফিরিঙ্গীবাজার ব্রিজঘাটে কাজ করতো।
মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় ফিরিঙ্গীবাজার ব্রিজঘাটে নৌকায় বসে কথা হয় জুয়েলের সঙ্গে। ভোরে ঘুম থেকে উঠে দোকান খুলে কেটলিতে চা দিয়েছে। পানি গরম হওয়ার সুযোগে বাকি কাজগুলো সেরে নিচ্ছে। জগে পানি নিয়ে গ্রাহকদের জন্য প্রস্তুত করলো। গ্লাস ও চায়ের কাপ ধুয়ে পরিষ্কার করছে।
কাজের ফাঁকে কথা হয় জুয়েলের সঙ্গে। ব্যবসায় কতদিন জানতে চাইলে জুয়েল বলে, তিনমাস আগে নৌকায় দোকান দিয়ে ব্যবসা শুরু করেছি। সকাল সাড়ে ৬টা থেকে সাতটার মধ্যে দোকানে আসি। রাত ৯টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলে।
ব্যবসা মূলত বড়ভাই পরিচালনা করে। জুয়েল তাকে সহযোগিতা করে। বড় ভাই আগে কি করতো জানতে চাইলে বলে, আগে একটি গার্মেন্টসে চাকরি করতো। আমি ঘাটে কাজ করতাম। কিন্তু বাবার ওষুধ খরচ বেশি তাই চাকরি ছেড়ে দিয়ে দোকান দিয়েছে।
‘বাবার ওষুধ লাগে। চাকরির টাকায় হয় না। ঘাটের সভাপতি জুনাব আলী মামা কইলো, চাকরি ছাইরা এখানে দোকান কর। ভাল অইবো। ’
দোকান দিয়ে চাকরি থেকে ভাল আয় হয় কিনা জানতে চাইলে হ্যাঁ সূচক উত্তর দিয়ে বলে, দৈনিক ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার চা বিক্রি হয়। আগের চেয়ে ভাল আছি।
কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে একটি ভাড়া বাসায় বাবা-মাকে নিয়ে থাকে জুয়েলরা। পাশের স্কুলে পড়ে ছোট দুই। তবে স্কুলের নাম জানা নেই। চার বছর ধরে যেখানে থাকছে ওই এলাকার নামও মনে করতে পারলো না শিশু বয়সে সংসারের ভার কাঁধে নেওয়া জুয়েল। কষ্ট করে বাবার চিকিৎসা আর ভাইদের পড়ালেখা করাতে পেরে তৃপ্তির হাসিই লক্ষ্য করা গেল কিশোরের মুখে। এটাই যেন তার জীবনের স্বর্গসুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১০, ২০১৭
এমইউ/টিসি