কিন্তু অর্থের অভাবে অসুস্থ রমা চৌধুরীর চিকিৎসাই সংকটের মুখে পড়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর বইয়ের প্রকাশক আলাউদ্দিন খোকন।
‘দিদি (রমা চৌধুরী) জীবনে কোনদিন কারো কাছ থেকে কোন সাহায্য নেননি।
সাতটি জটিল রোগে আক্রান্ত রমা চৌধুরীকে গত ১১ ডিসেম্বর ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত রোববার (২৪ ডিসেম্বর) হাসপাতাল থেকে তাঁকে বাসায় নেওয়া হয়। ওই রাতেই তিনি পড়ে গিয়ে কোমরের ডানদিকে গুরুতর আঘাত পান। ভেঙে যায় হাড়।
খোকন বাংলানিউজকে জানান, রাতেই রমা চৌধুরীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে সিট না পাওয়ায় পরবর্তীতে তাকে মেডিকেল সেন্টার ক্লিনিকে নেওয়া হয়।
রমা চৌধুরী বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক সমিরুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সমিরুল ইসলাম বলেন, রমা চৌধুরীর হাড় ভেঙে গেছে। অস্ত্রোপচার করতে হবে।
হাসপাতালে রমা চৌধুরীর পাশে আছেন আলাউদ্দিন খোকন এবং তাঁর সন্তান জহর চৌধুরী। জহর চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমার মা এই দেশের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। মাকে বাঁচাতে আমি সবার কাছে সহযোগিতা চাই। আমার মাকে বাঁচান।
মুক্তিযুদ্ধের ঝাপটায় সম্ভ্রম, ঘরবাড়ি, নিজের সৃষ্ট সাহিত্য, সর্বোপরি দুই সন্তান হারানো এই বিপর্যস্ত জীবনসংগ্রামী তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে খালি পায়ে চট্টগ্রামের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বই বিক্রি করেছেন। নিজের লেখা বই ফেরি করে বিক্রি করা এই লেখিকার নিজের ভাষায় তিনি ‘একাত্তরের জননী’।
ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে মাস্টার্স করা রমা চৌধুরীকে নিয়ে ২০১২ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলানিউজে ‘যাদের ত্যাগে স্বাধীনতা: একাত্তরে সব হারিয়ে এখন বইয়ের ফেরিওয়ালা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। এরপর রমা চৌধুরীকে গণভবনে ডেকে নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ সময়: ১১০৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
আরডিজি/টিসি