ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চার নারী ধর্ষণ, ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ হান্নান মেম্বার আটক

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭
চার নারী ধর্ষণ, ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ হান্নান মেম্বার আটক মো.আব্দুল হান্নান প্রকাশ হান্নান মেম্বার (৪৫)

চট্টগ্রাম: নগরীর কর্ণফুলী থানা এলাকায় প্রবাসীর বাড়িতে ঢুকে চার নারীকে ধর্ষণের ঘটনায় আরো একজনকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।  মো.আব্দুল হান্নান প্রকাশ হান্নান মেম্বার (৪৫) নামে ওই ব্যক্তি ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী বলে তথ্য এসেছে আবু সামা নামে আরেক আসামির জবানবন্দিতে।

বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হান্নানকে নগরীর কোতয়ালী মোড় থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।  এই নিয়ে পিবিআই তিনজনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।

 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক (মেট্রো) সন্তোষ কুমার চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, আবু সামা জবানবন্দিতে জানিয়েছে, হান্নানই মূল পরিকল্পনাকারী।   তবে আমরা এই বিষয়ে পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।

  আমরা সেটি তদন্ত করে দেখছি।

সূত্রমতে, আব্দুল হান্নান বর্তমানে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের বিশেষ শাখায় কর্মরত উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মান্নানের ভাই। মান্নান কোতয়ালি থানার স্টাফ কোয়ার্টারে অবস্থান করেন। সেই কোয়ার্টার থেকে আব্দুল হান্নানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মূলত হান্নানকে বাঁচাতেই কর্ণফুলী থানা পুলিশ বিভিন্ন গড়িমসি করেছে, এমন আলোচনা চলছে খোদ পুলিশ কর্মকর্তাদের মধ্যেই।

মঙ্গলবার গ্রেফতারের পর বুধবার বিকেলে আবু সামা (৪৫) আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।   জবানবন্দিতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আব্দুল হান্নান কর্ণফুলী উপজেলার বড়উঠান ইউনিয়নের ইউপি সদস্য প্রার্থী ছিলেন।   এলাকায় তিনি হান্নান মেম্বার নামে পরিচিত।  সরকারি প্রজেক্ট থেকে মাছ চুরিই তার মূল পেশা।   মূলত মাছ চুরি করতে গিয়েই হান্নানের সঙ্গে সামার পরিচয়।

ঘটনার ৭-৮ দিন আগে হান্নান মেম্বার আবু সামাকে ডেকে বলেন, ছোটখাট মাছ চুরিতে লাভ নেই।   বড় কাজ করতে হবে।   আবু সামা কি কাজ সেটা জানতে চান।   জবাবে হান্নান জানায়, বড়উঠান এলাকায় এক দুবাইওয়ালার বাড়ি আছে যেখানে পুরুষ থাকে না।   সেখানে ডাকাতি করতে পারলে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যাবে।

আবু সামা রাজি হলে হান্নান তাকে বাড়ি চিনিয়ে দেয়।   এরপর আবু সামা আরো চারজন সংগ্রহ করে তাদের বাড়ি চিনিয়ে দেয়।

ডাকাতি করতে যাবার আগে ‍হান্নানের সঙ্গে আবু সামার কথা হয়।   হান্নান ঘটনার আগে ওই বাড়ির সামনে পৌঁছাবে জানালেও আর সেখানে যাননি বলে আবু সামা জবানবন্দিতে জানিয়েছেন।

গত ১২ ডিসেম্বর গভীর রাতে কর্ণফুলীর বড়উঠান ইউনিয়নের শাহ মিরপুর গ্রামে একটি বাড়িতে ডাকাতি করতে গিয়ে বাড়ির চার নারীকে ধর্ষণ করে ডাকাতরা।   চারজনের মধ্যে তিনজন প্রবাসী তিন ভাইয়ের স্ত্রী, অন্যজন তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসা ননদ।

এই পরিবারের চার ভাইয়ের মধ্যে তিনজন মধ্যপ্রাচ্যপ্রবাসী।   তিন ভাইয়ের স্ত্রী তাদের শাশুড়ি ও দুই সন্তান নিয়ে এই বাড়িতে থাকেন। ধর্ষিতা গৃহবধূদের একজন ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছিলেন।

এ ঘটনায় মামলা নিতে পুলিশের বিরুদ্ধে গড়িমসি করার অভিযোগের পর ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান জাবেদের নির্দেশে কর্ণফুলী থানা পুলিশ প্রায় সাতদিন পর মামলা নেয়।   ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে কর্ণফুলী থানা পুলিশ।

তবে কর্ণফুলী থানার গ্রেফতার করা তিনজনের কারো নাম আবু সামা ও মিজান মাতব্বরের জবানবন্দিতে আসেনি বলে জানিয়েছে পিবিআই।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৭, ২০১৭

আরডিজি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।