ঢাকা, বুধবার, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ মে ২০২৪, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

টিসিবির প্রথম চালানের ৭২৮ টন পেঁয়াজ এলো বন্দরে

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০২০
টিসিবির প্রথম চালানের ৭২৮ টন পেঁয়াজ এলো বন্দরে ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: ভারত রফতানি বন্ধের পর বিকল্প দেশ থেকে সরকারিভাবে আমদানি করা প্রথম চালানে ৭২৮ টন পেঁয়াজ পৌঁছেছে চট্টগ্রাম বন্দরে।
 
তুরস্ক থেকে ৪০ ফুট লম্বা ২৮টি রেফার (শীততাপ নিয়ন্ত্রিত) কনটেইনারে গত ২ নভেম্বর বন্দরের এনসিটি জেটিতে নামিয়ে রাখা হয়েছে।

শিগগির এসব পেঁয়াজ ডেলিভারি নিয়ে সারা দেশে পৌঁছে দেওয়া হবে ট্রাক সেলের জন্য।

টিসিবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান জামাল উদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে সংকট শুরুর পর বেসরকারি পর্যায়ে সমুদ্রপথে চট্টগ্রাম বন্দরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম চালান এসেছিল পেঁয়াজের। ওই দিনই ৫৪ মেট্রিক টন মিয়ানমারের পেঁয়াজের ছাড়পত্র ইস্যু করেছিল চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্র।

জামাল উদ্দিন আহমদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘এমভি কন্টশিপ হাব’ জাহাজে তুরস্কের ২৮ কনটেইনার পেঁয়াজ এসেছে টিসিবির। যত দ্রুত সম্ভব এগুলো ছাড় করে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠিয়ে দেব আমরা।  

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এতদিন আমরা আমদানিকারকদের কাছ থেকে পেঁয়াজ নিয়ে ট্রাক সেল ও ডিলারদের মাধ্যমে ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রি করে আসছি। এখন টিসিবির আমদানি করা চালান আসতে শুরু করেছে। পরের চালানে ২৯, ৩৮, ২০ কনটেইনার পেঁয়াজ আসছে।  

পেঁয়াজের চালান দেশে পৌঁছায় এখন থেকে টিসিবির ট্রাকের সংখ্যা ও পেঁয়াজের পরিমাণ বাড়বে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আজ বুধবার (৪ নভেম্বর) আমরা ২০টি ট্রাকে পেঁয়াজ দিচ্ছি ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রির জন্য। এর মধ্যে নগরে থাকবে ১২টি ট্রাক, বাকি ৮টি আশপাশের জেলা ও উপজেলায় যাবে। সরবরাহ বেশি থাকলে আমরা প্রতি ট্রাকে ১ টন (১ হাজার কেজি) পেঁয়াজ দিচ্ছি।

চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বুলবুল বাংলানিউজকে জানান, চীন, পাকিস্তান, মিয়ানমার, মিশর, তুরস্কসহ বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিদিনই বন্দরে পেঁয়াজ আসছে। অনুমতিপত্র (আইপি) দেওয়া ও বন্দরে পেঁয়াজ আসার পর দ্রুত ছাড়পত্র ইস্যু করছি আমরা। নিউজিল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস, মালয়েশিয়া, সাউথ আফ্রিকা, ইউক্রেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সহ বিভিন্ন দেশ থেকে  পেঁয়াজ আমদানির আইপি নিচ্ছেন আমদানিকারকরা।

তিনি জানান, বিভিন্ন দেশ থেকে ২ লাখ ৩ হাজার ৭২১ টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য চট্টগ্রাম থেকে ৪৬৮টি আইপি ইস্যু করা হয়েছে। এ পর্যন্ত বন্দরে আসা ২৯ হাজার ৫৩০ টন পেঁয়াজের ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ৪৭৬টি রিলিজ অর্ডারের মাধ্যমে।

সূত্র জানায়, দেশে পেঁয়াজের পাইকারি ও খুচরা বাজার স্থিতিশীল ও নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই চেন নিশ্চিতে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ দ্রুত বন্দর থেকে খালাসে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস, উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। এর ফলে পাইকারি ও খুচরা বাজারে বিচিত্র আকার, রং, ঝাঁজ ও স্বাদের পেঁয়াজের দেখা যেমন মিলছে তেমনি দামও কমছে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ সভাপতি এসএম নাজের হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্রতিষ্ঠান টিসিবিকে শক্তিশালী করার দাবি জানিয়ে আসছি বছরের পর বছর। পাশাপাশি চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, চিনি, ছোলা, ভোজ্যতেল ইত্যাদির উৎপাদন, মজুদ, চাহিদা, ঘাটতি ইত্যাদির সঠিক পরিসংখ্যান আবশ্যক। এটা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, আমাদের পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি সংরক্ষণে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে হবে। এর জন্য উন্নত বীজ, চাষিদের প্রশিক্ষণ, গবেষণা ও চাষে উদ্বুদ্ধকরণে প্রণোদনা দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০২০
এআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।