ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

জেএসসি-এসএসসিতে জিপিএ-৫ না পেয়েও এইচএসসিতে পেলেন ১২৯৯ জন

মিজানুর রহমান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০২১
জেএসসি-এসএসসিতে জিপিএ-৫ না পেয়েও এইচএসসিতে পেলেন ১২৯৯ জন ফাইল ছবি।

চট্টগ্রাম: করোনা ভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পরীক্ষা গ্রহণ ছাড়াই জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ওপর মূল্যায়ন করে উচ্চমাধ্যমিকের ফল ঘোষণা করা হয়েছে এবার।

তাই স্বাভাবিকভাবেই সবার ধারনা ছিলো- যেসব শিক্ষার্থী জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি-সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছেন তারাই শুধু এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাবেন।

তবে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে এইচএসসির ফল প্রস্তুত করায় জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ না পেয়েও চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া ১ হাজার ২৯৯ জন শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন।

অন্যদিকে জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পাননি চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এই পরীক্ষায় অংশ নেয়া ৫০ জন শিক্ষার্থী।

এর মধ্যে ১০ জন নিয়মিত এবং ৪০ জন অনিয়মিত শিক্ষার্থী।

বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নারায়ন চন্দ্র নাথ বাংলানিউজকে জানান, জেএসসি পরীক্ষার ২৫ শতাংশ এবং এসএসসি পরীক্ষার ৭৫ শতাংশ বিষয়ভিত্তিক নম্বর বিবেচনা করে এইচএসসি পরীক্ষার ফল নির্ধারণ করা হয়েছে।  

তিনি বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা সামগ্রিক ফল বিবেচনায় না নিয়ে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল তৈরি করেছি। এ কারণে কেউ জেএসসি-এসএসসিতে জিপিএ-৫ না পেয়েও এইচএসসিতে পেয়েছেন, কেউ জেএসসি-এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েও এইচএসসিতে পাননি।

আরও খবর >> পরীক্ষা ছাড়া যেভাবে হলো এইচএসসির ফল

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী এবার চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে অংশ নেওয়া ৯৭ হাজার ৯৬৭ জন শিক্ষার্থী সবাই পাস করেছেন। পাসের হার শতভাগ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১২ হাজার ১৪৩ জন।

জিপিএ-৫ পাওয়াদের মধ্যে এগিয়ে আছেন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এ বিভাগ থেকে ২২ হাজার ৫২ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশে নেন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১০ হাজার ৪৩ জন।

ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে অংশ নেন ৩৭ হাজার ১৩৯ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৫৭৫ জন। মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নেন ৩৩ হাজার ৭৭৬ জন। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৫২৫ জন।  

২০১৯ সালে এই বোর্ডের অধীনে ৯৯ হাজার ৭৯৬ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে পাস করেন ৬১ হাজার ৫২৩ জন। পাসের হার ছিলো ৬২ দশমিক ১৯ শতাংশ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ২ হাজার ৮৬০ জন।

এবার অটোপাসের কারণে পাসের হার বেড়েছে ৩৭ দশমিক ৮১ শতাংশ। আর জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ৯ হাজার ২৮৩ জন।

২০২০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং বান্দরবান জেলার ২৬৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৯৭ হাজার ৯৬৭ জন শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করে।

ওই বছরের ১ এপ্রিল থেকে এসব শিক্ষার্থীর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ২২ মার্চ সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা স্থগিত করে সরকার।  

৭ অক্টোবর শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেন। পরীক্ষার্থীদের জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি-সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ওপর মূল্যায়ন করে এইচএসসির গ্রেড নম্বর নির্ধারণ করা হবে বলে জানান তিনি।

এ জন্য আইন সংশোধন করে চলতি বছরের ২৬ জানুয়ারি ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) অ্যাক্ট-২০২১’, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’ এবং ‘বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০২১’ গেজেট আকারে জারি করে সরকার।

এর মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ পরামর্শক কমিটির সুপারিশ মোতাবেক নয়টি সাধারণ বোর্ডের সঙ্গে মাদ্রাসা এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডকে পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশের এই ক্ষমতা দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে।  

শনিবার (৩০ জানুয়ারি) সারাদেশে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হয়। এতে সবাইকে অটোপাস দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১০ ঘণ্টা, ৩০ জানুয়ারি, ২০২১
এমআর/এসি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।