চট্টগ্রাম: সংবাদপত্র তথা গণমাধ্যমকে জনপ্রতিনিধিদের তথ্যভাণ্ডার বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নওফেল সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, এ শহরের একজন নাগরিক হিসেবে শুধু বলতে চাই, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বা অন্যান্য সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী।
সংবাদমাধ্যম থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে উপকার পাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে প্রতিদিন সংবাদপত্রে অনেক নেতিবাচক সমালোচনামূলক সংবাদ শুনি। এটা আমাদের কাজের জন্য অনেক বেশি সহায়ক শক্তি। কারণ সেগুলো আমরা মার্ক করে করে ব্যবস্থা নিতে পারি। কারণ আমাদের সরকারের এত সক্ষমতা নেই যে সব তথ্য আমরা পাব। কোথায় গ্রামবাংলার কোন জায়গায় কোন বিদ্যালয়ে কী হচ্ছে আপনাদের মাধ্যমে, সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে আমরা দেখতে পাই। অর্থাৎ জনপ্রতিনিধিদের তথ্যের ভাণ্ডার হচ্ছেন সাংবাদিকবৃন্দ। তাই আপনাদের কাছে আহ্বান রাখব, সব তথ্য জনপ্রতিনিধির কাছে, আমাদের নগরপিতার কাছে তুলে ধরবেন। তিনিও এটা দেখে দেখে ব্যবস্থা নেবেন।
কারণ আমরা দেখি যখন জনপ্রতিনিধিরা অন্ধকারে থাকবেন, যখন সাংবাদিকবৃন্দ তথ্য তুলে ধরতে পারেন না, বা তুলে ধরেন না বা সমালোচনা করেন না তখন সেই প্রতিষ্ঠানটি কিন্তু নির্জীব হয়ে যায়। এ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা কিন্তু স্থায়ী। কিন্তু মাননীয় মেয়র অস্থায়ী। পাঁচ বছর থাকবেন, তারপর তিনি চলে যাবেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি জনগণের অর্থে, জনগণের রাজস্ব দ্বারা পরিচালিত হয়। প্রত্যেক কর্মকর্তা, কর্মচারীর জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য সংবাদ মাধ্যম যাতে সহযোগিতা করে। আপনারা যখন তথ্য তুলে ধরবেন তারা কাজ করতে বাধ্য হবেন। তথ্যের মাধ্যমে মাননীয় মেয়র তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনবেন- আপনি কেন কাজটি করলেন না। তাই সৎ সাহস নিয়ে সমাজের দর্পন হিসেবে তুলে ধরবেন। তুলে না ধরলে সেই প্রতিষ্ঠানটি নির্জীব হয়ে যাবে। জনপ্রতিনিধি হিসেবে মাননীয় মেয়র বা কাউন্সিলরবৃন্দ সেটাকে জীবিত করতে পারবেন না। যদি তাদের মধ্যে সেই শঙ্কা, জবাবদিহির চিন্তাটা না থাকে। মাননীয় মেয়র মহোদয়ও তেমনিভাবে লালন করবেন, প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা মানে ব্যক্তির সমালোচনা নয়। প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে তুলে ধরা।
সব ক্ষেত্রে সমন্বয় করার জন্য সহযোগিতা করতে চান উল্লেখ করে নওফেল বলেন, সব মন্ত্রী, সংসদ সদস্য মহোদয় যারা আছেন তারা মহান জাতীয় সংসদে যখন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জন্য, চট্টগ্রামবাসীর জন্য কথা বলবেন সেটি আপনার জন্য সহযোগিতা হবে। এ সহযোগিতা আমরা সবসময় করতে চেয়েছি। আমাদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকবে। এ প্রতিযোগিতা যাতে হয় মানুষের সেবা নিশ্চিত করার প্রতিযোগিতা। আমি একটা কাজ করে সিটি করপোরেশনকে সহযোগিতা করব।
সভাপতির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস। বক্তব্য দেন সাবেক সভাপতি কলিম সরওয়ার, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম, ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, নগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন বাবুল, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম প্রমুখ। ধন্যবাদ বক্তব্য দেন সিনিয়র সহ সভাপতি সালাহউদ্দিন মো. রেজা।
কলিম সরওয়ার বলেন, অনলাইন ও টেলিভিশনের তাৎক্ষণিক তথ্যের প্রয়োজন হয়, তাই মেয়রের তথা চসিকের শক্তিশালী তথ্য সেল করা দরকার। যানজট নিরসনে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
ইব্রাহিম হোসেন বাবুল বলেন, পাঁচ বছর চসিক প্রশাসন চালাবেন নতুন মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী। সত্য কঠিন হলেও আপনারা দেখিয়ে দেবেন। ইতিবাচক সমালোচনা করবেন।
ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, জসিম চৌধুরী সবুজ, মোস্তাক আহমেদ, শামশুল হক হায়দারী, নির্মল চন্দ্র দাশ, আসিফ সিরাজ, ক্লাবের সহ সভাপতি স ম ইব্রাহিম, কার্যনির্বাহী সদস্য মোয়াজ্জেমুল হক, শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার, মনজুর কাদের, দেবদুলাল ভৌমিক প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১২০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০২১
এআর/এসি/টিসি