চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ১২৬ চিকিৎসকের বদলিতে অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়ছে চমেক হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে করোনা পরীক্ষা। বদলির তালিকায় থাকা চমেকের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ৬ চিকিৎসক কাজ করতেন এ ল্যাবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মঙ্গলবারের (৬ জুলাই) মধ্যে এ সমস্যার সমাধান না হলে থমকে যেতে পারে এই ল্যাবের পরীক্ষা।
চমেক সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ১৩ জন চিকিৎসক রয়েছেন।
সংযুক্তিতে পাঠানো এই বিভাগের চিকিৎসকরা হলেন, ডা. আবুল কালাম, ডা. আরিফুর রহমান, ডা. সাবরিনা শারমিন, ডা. আফরিন সুলতানা, ডা. জাহানারা রোজিনা, ডা. সাইফুল করিম।
এদের মধ্যে ডা. আবুল কালাম চমেক করোনা ল্যাবের সুপারভাজিং কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। তিনি এবং ডা. সাইফুল করিমকে সংযুক্ত করা হয়েছে চট্টগ্রামের বিআইটিআইডি হাসপাতালে। এছাড়া আরেক চিকিৎসক ডা. আরিফুর রহমানকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে, ডা. সাবরিনা শারমিনকে ফেনী জেলা সদর হাসপাতালে, ডা. আফরিন সুলতানাকে খাগড়াছড়ি জেলা সদর হাসপাতালে, ডা. জাহানারা রোজিনাকে চমেক হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে সংযুক্ত করা হয়।
এই ৬ চিকিৎসকের মধ্যে ডা. আরিফুর রহমান পূর্বেই কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ থেকে চমেকে বদলি হয়ে আসলেও তা জানেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। ফলে কুমিল্লা মেডিক্যাল থেকেই তাকে বদলি করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে। এছাড়া সাইফুল করিম ৭ মাস আগেই চাঁদপুর মেডিক্যাল কলেজে সংযুক্তিতে থাকলেও তাকে এনে দেওয়া হয়েছে বিআইটিআইডি হাসপাতালে।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও চমেক পিসিআর ল্যাবের সুপারভাজিং কমিটির আহ্বায়ক ডা. আবুল কালাম বাংলানিউজকে বলেন, চমেকের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে যে কয়জন চিকিৎসক রয়েছেন তাদের মধ্যে ৭ জনের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে উচ্চতর ডিগ্রী ছিল। এর মধ্যে ৬ জনকেই বিভিন্ন হাসপাতলের করোনা ওয়ার্ডে সংযুক্তিতে পদায়ন করা হয়েছে। এতে করে চমেকের পিসিআর ল্যাবের করোনা পরীক্ষা শঙ্কার মুখে পড়তে পারে।
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আখতার বাংলানিউজকে বলেন, পিসিআর ল্যাবের যে কয়জন চিকিৎসক কাজ করতেন তাদের সবাইকে অন্য হাসপাতালে সংযুক্তিতে পদায়ন করা হয়েছে। ফলে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে ল্যাব। যদি আজকের মধ্যে কোনো সিদ্ধান্ত না আসে কাল থেকে করোনা টেস্ট বন্ধ রাখা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। কারণ ল্যাব চালাতে হলে দক্ষ চিকিৎসকের প্রয়োজন রয়েছে।
এমন বদলি অবিবেচনা প্রসূত উল্লেখ করে বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) চট্টগ্রামের সভাপতি মুজিবুল হক খান বাংলানিউজকে বলেন, যাচাই বাছাই না করে এমন বদলির আদেশ দিয়েছেন যে, করোনা ল্যাব বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। সারাদেশের মত চট্টগ্রামেও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। এই সময় এসে যদি একটি সচল ল্যাব একদিনও বন্ধ রাখতে হয়, তাহলে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া অনেকটা কষ্ট সাধ্য হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জুলাই ০৬, ২০২১
এমএম/টিসি