ঢাকা, শনিবার, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২৯ জুন ২০২৪, ২১ জিলহজ ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয় দিবসে জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
সুবর্ণজয়ন্তী ও বিজয় দিবসে জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।

চট্টগ্রাম: স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, মহান বিজয় দিবস উদযাপন ও বিজয় কনসার্ট উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন বৃহস্পতি ও শুক্রবার (১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর) দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। নতুন প্রজন্মসহ সবাইকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের শিখায় আলোকিত এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করার লক্ষ্যে সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের এ মাহেন্দ্রক্ষণে শপথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসন কার্যলয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. সুমনী আক্তার, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট পীযুষ চৌধুরী।

 

বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা থেকে দেশব্যাপী শপথ অনুষ্ঠান পরিচালনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় শপথ অনুষ্ঠান নগরের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।

তিনি বলেন, ১৫ ও ১৬ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম শহরের সব সরকারি ভবনের পাশাপাশি বেসরকারি ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা, সরকারি, বেসরকারি, বাণিজ্যিক ও আবাসিক সব ভবনে নির্ধারিত মান ও রঙের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এই দুই রাত সমগ্র চট্টগ্রাম নগর এলাকায় কর্ণফুলী সেতুর পর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত প্রধান সড়কটিসহ শহরের সব সরকারি ভবনের পাশাপাশি বেসরকারি, বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবনগুলোতে আলোকসজ্জা করা হবে।

১৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের চত্বরে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে ৫০ বার তোপধ্বনির মাধ্যমে বিজয়ের কর্মসূচির শুরু হবে। সূর্যোদয়ের পর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে।

১৬ ডিসেম্বর সকাল ৮টায় নগরের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসটির শুভ সূচনা করা হবে। বাংলাদেশ পুলিশ, আনসার-ভিডিপি, বিএনসিসি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, কারারক্ষী, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ স্কাউটস, রোভার স্কাউটস, গার্লস গাইড এবং শিশু-কিশোর সংগঠন কর্তৃক বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ ও শারীরিক কসরত প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনের শেখ রাসেল চত্বরে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, ১৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় অনুষ্ঠিত হবে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান। বীর মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, সব পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সদস্য, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, নারী, কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-ছাত্রীসহ সমাজের সর্বস্তরের ৪ হাজার মানুষ নির্ধারিত আসনে নির্ধারিত টি-শার্ট, ক্যাপ, জাতীয় পতাকা ও মাস্ক পরে অবস্থান ও শপথগ্রহণ করবেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের স্ব-স্ব বাহিনীর ইউনিফর্মে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।  

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থাকবেন এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান/সংগঠনসমূহ তাদের স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানে ইউনিফর্ম (যদি থাকে) পরে স্টেডিয়ামে ঢুকবেন। গ্যালারির দর্শকদের কোন গেইট দিয়ে প্রবেশ করতে হবে তা ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তারা জানিয়ে দেবেন। স্টেডিয়ামের প্রবেশমুখে আসন ব্যবস্থাপনা দৃশ্যমান থাকবে।

মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, স্টেডিয়ামের গ্যালরিতে ঢোকার সময় মোবাইল, মানিব্যাগ ছাড়া অন্য কোনো সামগ্রী (যেমন ব্যাগ, কলম, খাবার, মূল্যবান অলঙ্কারাদি, পাওয়ার ব্যাংক, হেডফোন, খাতা ইত্যাদি) সঙ্গে রাখা যাবে না।

প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের স্ব-স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নামসম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসতে হবে। প্রত্যেক সংস্থা/প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের নামসম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্টেডিয়ামে নির্ধারিত সারিতে দাঁড়াতে হবে। এ ছাড়াও গ্যালারিতে ১২-১৫ হাজার মানুষ অবস্থান করবেন। প্রধানমন্ত্রী শপথ অনুষ্ঠানে সরাসরি যুক্ত হবেন। শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের ছোট আকারের (১০:৬ ইঞ্চি) জাতীয় পতাকাযুক্ত পতাকা হাতে শপথবাক্য পাঠ করবেন। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া শপথ অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করা যাবে না।

এ ছাড়াও ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক দর্শকের উপস্থিতিতে জমকালো আতশবাজি ও লেজার শো’র আয়োজন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ১৭ ডিসেম্বর (শুক্রবার) বিকেল ৩টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের ৯টি জনপ্রিয় ব্যান্ডদলের অংশগ্রহণে ‘বিজয় কনসার্ট’ অনুষ্ঠিত হবে। ব্যান্ডদল হচ্ছে- অর্থহীন, শিরোনামহীন, ভাইকিং, সোলস, ওয়ারফেইজ, অ্যাভয়েডরাফা, আরভোভাইরাস, আর্টসেল ও তীরন্দাজ।  

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার উদ্যোগে যৌথভাবে বিজয় কনসার্ট আয়োজন করা হচ্ছে। কনসার্টে সম্ভাব্য ১৫ হাজার দর্শক বিনামূল্যে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে গ্যালারিতে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন।  

এ সময় দেড় হাজার আমন্ত্রিত অতিথি স্টেডিয়ামের ভেতরে বসে অনুষ্ঠান উপভোগ করবেন। কনসার্টে বাইরে থেকে খাবার বা পানির বোতল নিয়ে মূল ফটকে প্রবেশ নিষিদ্ধ। শ্রোতাদের জন্য স্টেডিয়ামের ভেতরে অস্থায়ী হালকা খাবারের দোকান থাকবে।

তিনি বলেন, অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ, আনসার বাহিনী ও র‌্যাব সদস্যরা নিয়োজিত থাকবেন। কনসার্টের প্রবেশপথ থেকে ও অন্য গেইটগুলোতে ৪২০ জন স্বেচ্ছাসেবক বিএনসিসি, স্কাউটস, রোভার স্কাউটস, গার্লস গাইড নিয়োজিত থাকবে।

কনসার্টটি ফেইসবুকসহ স্যোসাল মিডিয়া ও ক্যাবলটিভিতে লাইভ প্রচারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর প্রয়োজনীয় সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সিএমপি কর্তৃক মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়াও ১২০ জন অঙ্গীভূত আনসার ও ২০ জন ব্যাটলিয়ন আনসার মোতায়েন থাকবে।  দর্শকদের সুবিধার্থে কয়েকটি ভ্রাম্যমাণ টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে।
১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠান ও বিজয় কনসার্ট শেষ না হওয়া পর্যন্ত যাতে বিদ্যুৎ বিভ্রাট না ঘটে সে বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ, বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ), স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা এড়াতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেডিয়ামে অবস্থান করবে। বিদ্যমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতি বিবেচনায় সব অংশগ্রহণকারীকে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
বিই/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।