ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

রজতজয়ন্তীতে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচার চালু

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২১
রজতজয়ন্তীতে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচার চালু বক্তব্য দেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ

চট্টগ্রাম: বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৯৯৬ সালের ১৯ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু হয়েছিল বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের। তিন পার্বত্য জেলাসহ এ অঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্য কৃষ্টি সংস্কৃতি তুলে ধরার জন্য চালু করা হয়েছিল এ কেন্দ্র।

বৈচিত্র্যময় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও ইতিহাস বিশ্বময় তুলে ধরার প্রয়াসে চট্টগ্রামে একটি সম্প্রচার মাধ্যম প্রতিষ্ঠা ছিল এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি। তারই প্রেক্ষিতে তখন কেন্দ্রটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্বল্প পরিসরে প্রথমে দেড় ঘণ্টার অনুষ্ঠান সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে কেন্দ্রটি চলছিল। পরে এটি ২০১৬ সালে ৬ ঘণ্টা, ২০১৯ সালে ৯ ঘণ্টা, ২০২০ সালে ১২ ঘণ্টা, ২০২১ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ১৮ ঘণ্টা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে আসছিল। কিন্তু এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের চাহিদা ছিল ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচার চালুর। অবশেষে রোববার (১৯ ডিসেম্বর) সেই চাহিদা পূরণ হয়েছে। বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্র টেরিস্ট্রিয়াল এবং কেবল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচার চালু শুরু করেছে।

কেন্দ্রটির ২৫ বছরপূর্তি বা রজতজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রেকর্ড করা ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ কেন্দ্রের ২৪ ঘণ্টা সম্প্রচার চালু কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। একই সঙ্গে ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষকে শুভেচ্ছা জানান এবং আশা প্রকাশ করেন যে, কেন্দ্রটি এ অঞ্চলের জনচাহিদা পূরণে সক্ষম হবে।

এ উপলক্ষে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।  

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, বিটিভির মহাপরিচালক সোহরাব হোসেন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জিএম নিতাই কুমার ভট্টাচার্য প্রমুখ।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে প্রতিষ্ঠিত হলেও এটি একটি জাতীয় টেলিভিশন কেন্দ্র। অন্যান্য জাতীয় কেন্দ্রের মতোই কেন্দ্রটি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সমৃদ্ধ ঐতিহ্য তুলে ধরার সঙ্গে সঙ্গে এ অঞ্চলের ইতিহাস ঐতিহ্য এখানে গুরুত্ব পাবে।  

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকার অবাধ তথ্য প্রবাহ নিশ্চিতে কাজ করছে। ৪৫টি টেলিভিশন চ্যানেলকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে অসংখ্য প্রিন্টিং, অনলাইন এবং সোস্যাল মিডিয়া। এসব মিডিয়ার সার্বিক কল্যাণেও সরকার কাজ করছে। ইতোমধ্যে ক্লিনফিড নিশ্চিত করা হয়েছে। অল্প কিছু সময়ের মধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে কেবল নেটওয়ার্ক ডিজিটালাইজেশনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।  

তিনি বলেন, ৬টি বিভাগে বিটিভির আরও ৬টি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার কাজ অনেকদূর এগিয়েছে। এগুলোর কাজ এক মাসের মধ্যে হয়ে যাবে। এগুলো চালু হলে দেশে বিদেশে বিটিভির ১০টি চ্যানেল সম্প্রচারে থাকবে।  

তিনি বলেন, বর্তমানে সম্প্রচারে থাকা কেন্দ্রগুলো টেরিস্ট্রিয়াল এবং মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে দেশ বিদেশ থেকে যেকোনো সময় দেখা যায়। নতুন ৬টি কেন্দ্রও মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকে যেকোনো সময় দেখা যাবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম যে পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করছে তা উন্নয়নশীল দেশের জন্য উদাহরণ। অথচ অনেক উন্নত দেশেও এমন অবাধ স্বাধীনতা দেখা যায় না। অনেক নামী ও পুরনো পত্রিকাকেও অসত্য তথ্য প্রচারের কারণে বন্ধ হতে হয়েছে। বিবিসির মতো বিশ্বগণমাধ্যমকে অসত্য তথ্য প্রচার করার কারণে সংশ্লিষ্ট অনেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে।  

গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত তথ্য সমাজে প্রভাব বিস্তার করতে পারে উল্লেখ করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, অনেক বিষয় লাইভ সম্প্রচারের কারণে জনমনে খারাপ প্রভাব সৃষ্টি হয়। অনেকে এসব দেখে বিভিন্ন কাজে উৎসাহিত হয়। এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। মনে রাখতে হবে আমার স্বাধীনতা যেন অন্যের স্বাধীনতা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ভঙ্গ না করে। গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশিত অনুষ্ঠান সমাজে যেন মূল্যবোধ দেশাত্মবোধ জাগ্রত ও শিক্ষণীয় বার্তা বহন করে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মন্ত্রী গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পনের ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিখির বক্তব্যে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, চলচ্চিত্র জগত সারা বিশ্বে একটি লাভজনক খাত। কিন্তু বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এমনটা নয়। মাননীয় তথ্যমন্ত্রী একটা সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করেছেন, যা আমাদের বিনোদন জগতে বিনিয়োগের একটা সুযোগ করে দিয়েছে। তাঁর এ উদ্যোগে একইসঙ্গে মনস্তাত্ত্বিক, আর্থিক বিনিয়োগ বাড়বে বলে আমি মনে করি। এ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি প্রমাণ করেছেন এই সরকার অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি মনজাগতিক উন্নয়নেও কাজ করছে।

এ উপলক্ষ্যে সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব মো. মকবুল হোসেন শোভাযাত্রায় নেতৃত্ব দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২১
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।