ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

প্রফেসর ড. অনুপম সেনের ৮৩তম জন্মদিন শুক্রবার

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ৪, ২০২২
প্রফেসর ড. অনুপম সেনের ৮৩তম জন্মদিন শুক্রবার প্রফেসর ড. অনুপম সেন।

চট্টগ্রাম: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ, বর্ষীয়ান লেখক, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেনের ৮৩তম জন্মদিন শুক্রবার (৫ আগস্ট)। ১৯৪০ সালের এই দিনে তিনি চট্টগ্রাম মহানগরীতে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রফেসর সেনের বাবা বিরেন্দ্রলাল সেন ও মা স্নেহলতা সেন। বিরেন্দ্রলাল সেন ইংরেজিতে এমএ ও বিএল ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছিলেন এবং চট্টগ্রাম কোর্টে ওকালতি পেশায় নিযুক্ত ছিলেন।

স্নেহলতা সেন বেথুন স্কুল থেকে তাঁর পাঠ সম্পন্ন করেন। প্রফেসর সেনের গ্রামের বাড়ি পটিয়া উপজেলার ধলঘাটে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৬২ সালে সমাজতত্ত্বে স্নাতক ও ১৯৬৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৭৪ সালে সমাজতত্ত্বে এমএ ডিগ্রি এবং ১৯৭৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রাউটলেজ অ্যান্ড কেগানপল থেকে তাঁর ‘দ্য স্টেট, ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন অ্যান্ড ক্লাশ ফরমেশন ইন ইন্ডিয়া’ বইটি ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর উত্তর আমেরিকার বহু বিশ্ববিদ্যালয় যেমন, কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকার ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়; সুইডেনের টিনবারজেন বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৬৯ সালে অর্থনীতিতে ১ম নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত টিনবারজেনের নামে এই বিশ্ববিদ্যালয়), ভারতের দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিশ্বের অনেক খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান, উন্নয়ন অর্থনীতি (ডেভেলপমেন্ট ইকোনমিকস) ও রাষ্ট্র্রবিজ্ঞানের পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

প্রফেসর সেন ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বর্তমান বুয়েটে) সমাজতত্ত্ব ও রাজনীতি বিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজতত্ত্ব বিভাগে অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর (তখন সিনিয়র লেকচারার) হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে যুক্ত করে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ‘এবারের সংগ্রাম’ নামে ১৭ মার্চ থেকে লালদীঘির ময়দানে সপ্তাহব্যাপী এক কর্মসূচি পালন করেন। এই অনুষ্ঠানে বাইরে থেকে যুক্ত ছিলেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও সংস্কৃতিকর্মী ডা. কামাল এ খান, বিশিষ্ট নাট্যকার মমতাজ উদ্দীন, কবি-অধ্যাপক মোহাম্মদ রফিক প্রমুখ। এ সময় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. শামসুল হক, যিনি স্বাধীনতাত্তোরকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েছিলেন। ড. আনিসুজ্জামান ও বাংলা বিভাগের তৎকালীন সহকারী অধ্যাপক আবু জাফরের সহযোগিতাও বিশেষভাবে উল্লেখ্য।

১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা সহায়ক ও টিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে দেশে ফিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে পুনরায় যোগদান করেন।

প্রফেসর সেন ‘দ্য স্টেট, ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন অ্যান্ড ক্লাশ ফরমেশন ইন ইন্ডিয়া’ ছাড়াও অনেক বইয়ের রচিয়তা। এক্ষেত্রে তাঁর দ্য পলিটিক্যাল এলিটস অফ পাকিস্তান অ্যান্ড আদার সোশিওলজিক্যাল এসেস (১৯৮২, অমর প্রকাশন, দিল্লি), বাংলাদেশ: রাষ্ট্র ও সমাজ, সামাজিক অর্থনীতির স্বরূপ (১৯৮৮), বাংলাদেশ ও বাঙালি রেনেসাঁস: স্বাধীনতা চিন্তা ও আত্মানুসন্ধান (২০০২), বিলসিত শব্দগুচ্ছ (২০০২), ব্যক্তি ও রাষ্ট্র: সমাজ-বিন্যাস ও সমাজ-দর্শনের আলোকে (২০০৭), কবি শশাঙ্কমোহন সেন (২০০৭), সমাজ, সংস্কৃতি, সাহিত্য: নানা কথা, নানা ভাবনা, নানা অর্ঘ্য (২০০৭), সুন্দরের বিচার সভাতে (২০০৮), আদি-অন্ত বাঙালি, বাঙালি সত্তার ভূত-ভবিষ্যৎ (২০১১), বাংলাদেশ: ভাবাদর্শগত ভিত্তি ও মুক্তির স্বপ্ন (২০১১), জীবনের পথে প্রান্তরে (২০১১), বাঙালি-মনন, বাঙালি সংস্কৃতি, সাতটি বক্তৃতা (২০১৪), ইতিহাসে অবিনশ্বর (২০১৬) ও বিচিত ভাবনা (২০১৭) প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। তাঁর ‘দ্য স্টেট, ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন অ্যান্ড ক্লাশ ফরমেশন ইন ইন্ডিয়া’ ১৯৮২ সালে প্রকাশের প্রায় সাড়ে তিন দশক পরে রাউটলেজ আবার প্রকাশ করেছে ২০১৭ সালে, ‘রাউটলেজ লাইব্রেরি এডিশন: ব্রিটিশ ইন ইন্ডিয়া’ শিরোনামে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৫ ঘণ্টা, আগস্ট ০৪, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।