ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ট্রানজিটের ট্রায়াল রানের শেষ চালান চট্টগ্রাম বন্দরে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২২
ট্রানজিটের ট্রায়াল রানের শেষ চালান চট্টগ্রাম বন্দরে ...

চট্টগ্রাম: বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় ট্রানজিটের ট্রায়াল রানের শেষ চালান এখন চট্টগ্রাম বন্দরে। চলতি সপ্তাহে মেঘালয়ের আট টন চা-পাতা ভর্তি ২০ ফুট লম্বা কনটেইনারটি কলকাতাগামী জাহাজে উঠবে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ ‘এমভি ট্রান্স সামুদেরা’ কনটেইনারটি কলকাতার শ্যামাপ্রাসাদ মুখার্জি বন্দরে পৌঁছে দেবে। জাহাজটি ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়েছে।

জাহাজটির কিছু মেরামতকাজ শেষে চলতি সপ্তাহেই কনটেইনারটি নিয়ে কলকাতার উদ্দেশ্যে রওনা দেবে।  বর্তমানে ট্রানজিট পণ্যভর্তি কনটেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরের টার্মিনাল ভবনের এসআই বক্সের সামনে রাখা হয়েছে। এ চালানটি কলকাতা পৌঁছালে চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে ট্রানজিটের চারটি ট্রায়াল রান শেষ হবে। এরপর ট্রানজিটের রুট, ব্যয়, ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করে অবকাঠামো উন্নয়নসহ বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক আলোচনার ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রানজিট পণ্য পরিবহন শুরু হবে।

পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে কোনো পণ্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যে (সেভেন সিস্টার) পাঠাতে গেলে সড়কে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। এতে কলকাতা থেকে আসাম বা ত্রিপুরা থেকে কলকাতায় পণ্য পরিবহন করতে গেলে প্রচুর সময় ও অর্থ ব্যয় হয়। এই সমস্যা থেকে উত্তরণে দ্রুত-নির্বিঘ্নে পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতেই বাংলাদেশের সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ট্রানজিট পণ্য পরিবহনে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বাংলাদেশি শিপিং এজেন্ট ম্যাংগো লাইনের ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, ট্রানজিটের ট্রায়াল রানের শেষ চালানটি এখন চট্টগ্রাম বন্দরে আছে। একটি কনটেইনারে আট টনের মতো চা-পাতা রয়েছে। যেগুলো মেঘালয়ের ডাউকি থেকে বোঝাই করা হয়েছে। লরিতে করে সেই চালানটি সিলেটের তামাবিল স্থলবন্দরে মাসুল পরিশোধ শেষে বাংলাদেশে ঢুকেছে এবং কাস্টমসের নিরাপত্তা পাহারায় সড়কপথে চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছেছে। মেঘালয় থেকে এই ধরনের চালান চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে কলকাতা যাওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে চট্টগ্রাম থেকে চালানটি কলকাতা পাঠাতে একটু সময় লাগছে। এর মধ্যে জাহাজের কিছু মেরামতকাজও শেষ করা হবে। আশাকরি, চলতি সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে চা পাতার কনটেইনারটি লোড করে কলকাতার উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে ট্রান্স সামুদেরা জাহাজটি।  

২০১৮ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্টকে অব গুডস টু এন্ড ফরম ইন্ডিয়া’ চুক্তির আওতায় চারটি ট্রায়াল রান হচ্ছে আসছে। ২০২০ সালে এমভি সেঁজুতি জাহাজে কলকাতা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে ট্রানজিটের চার কনটেইনার পণ্য এসেছিল। সম্প্রতি মোংলা বন্দর দিয়ে ট্রানজিটের আরেকটি সফল ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়েছে।  

বাংলাদেশি ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তির আওতায় চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর দিয়ে ট্রায়াল রান শেষ হচ্ছে- এটি গৌরবের। এতে বন্ধুপ্রতিম দুই দেশ উপকৃত হবে। বন্দরের ফি, কাস্টমসের শুল্ক আহরণ বাড়বে, ট্রানজিট পণ্য পরিবহনে ভাড়া পাবে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা৷ তবে আমাদের সড়ক ও রেলপথ অবকাঠামো কানেকটিভিটি উন্নত করতে হবে৷ পাশাপাশি বন্দরের সক্ষমতাও বাড়াতে হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান জানিয়েছেন, ভারতের সেভেন সিস্টার্স রাজ্যগুলোর ট্রানজিট পণ্য পরিবহনে চট্টগ্রাম বন্দর শতভাগ প্রস্তুত। এ লক্ষ্যে বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২২
এআর/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।